সর্বশেষ সংবাদ :

শিক্ষক সংকটে আক্কেলপুর ইন্সটিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজি

মওদুদ আহম্মেদ, আক্কেলপুর: প্রতিষ্ঠানে নির্ধারিত অনুষদ অনুসারে নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রী থাকলেও রয়েছে শিক্ষক-কর্মচারী সংকট। এছাড়াও আরো বিভিন্ন সমস্যার সাথে পাল্লা দিয়েই চলছে নিয়মিত পাঠদান। প্রতিষ্ঠানটি জয়পুরহাটের আক্কেলপুরের ইন্সটিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজি গোপিনাথপুর। ২০২২ সালের মে মাসে আবেদন করলেও এখনো পায়নি অর্থনৈতিক কোড। কোডটি পেলে শিক্ষক সংকটসহ সকল সমস্যা সরকারী ভাবে সমাধান হবে বলে আশা করছেন প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার গোপিনাথপুর ইন্সটিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজির মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করতেই দেখা যায় নতুন ভবন গুলোতে জন্মেছে পরগাছা। ভবনের সামনে জন্মেছে আগাছা। যেগুলো অতি অল্প সময়েই নষ্ট করবে ভবনগুলো। ছাত্রাবসে গিয়ে দেখা গেল আরেক চিত্র। ছাদের জয়েন্টের ফাটল বেয়ে পানি ঢুকছে ছাত্রাবাসে। ছাত্ররা সেখানে কাঁদার আইল দিয়ে পানি আটকিয়ে রেখে কষ্ট করে থাকছেন।
প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে উদ্বোধন হয়। পাঠদান শুরু হয় ২০২২ সালের ৩ মার্চ। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে দুটি অনুষদে (ল্যাবরেটরি ও ফার্মেসী) চলছে পাঠদান। এতে ২৪৩ জন (ছাত্র-১২১, ছাত্রী ১২২) অধ্যয়নরত রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ১৩৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচরি পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র ১০ জন।
এরমধ্যে অধ্যক্ষ ১ জন, প্রভাষক ৩ জন, টেকনোলজিস্ট ২ জন, প্রধান সহকারী ১ জন, নৈশপ্রহরী ২ জন, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ২ জন। প্রতিষ্ঠানটির এখন পর্যন্ত হয়নি কোন অর্থনৈতিক কোড। অর্থনৈতিক কোডের জন্য প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালের ৫ মে আবেদন করেছে।
প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন সূত্রে আরো জানা গেছে, ল্যাবরেটরিতে নেই ব্যবহারিক সরঞ্জাম। সেখানে ল্যাবরেটরি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক ক্লাস আবশ্যক প্রয়োজন। তাছাড়া বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা। সমস্যা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির অবাসিকেও। ভবনের দেওয়াল বেয়ে ঘরে প্রবেশ করে পানি। আবাসিকে পর্যাপ্ত সামগ্রী না থাকায় মেঝেতে বিছানা পেতে শুয়ে থাকেন অনেক শিক্ষার্থী। লোকবল সংকটের কারণে পরিচর্যার অভাবে বিভিন্ন ভবনের দেওয়ালে জন্ম নিয়ে পরগাছা। প্রতিষ্ঠানে নেই কোন লাইব্রেরি।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে এক শিক্ষার্থী জানায়, আমরা বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে রয়েছি। ল্যাবে যন্ত্রাংশ সংকট রয়েছে। আবাসিকেরও বেহাল দশা। বেড না পাওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী মেঝেতে বিছানা করে থাকে। আবাসিকের কয়েকটি ঘরে দেওয়াল বেয়ে ঘরে পানি প্রবেশ করে।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান সহকারী হাসিবুল হাসান বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটি জনবল সংকটের মধ্যে দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে। সংকটের কারণে অফিসের কয়েক জনের কাজ আমাকে একা করতে হয়। আমার মতো প্রত্যেককে অন্যের কাজ বাধ্য হয়ে একাই করতে হয়। এতে আমারা কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছি প্রতিনিয়ত। দ্রুত আমাদের স্থায়ী সমাধান দরকার’।
অধ্যক্ষ ডা. আব্দুল কুদ্দুস মন্ডল বলেন, ‘বিভিন্ন সংকটের মধ্যেই আমরা শিক্ষার্থীদের নিয়মিত পাঠদান করে আসছি। জনবল সংকট থাকায় প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে আমাদের বেগ পেতে হচ্ছে। শিক্ষক কম থাকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষক চেয়ে নিয়ে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করছি। মূলত অর্থনৈতিক কোড না থাকায় এ সংকট। ইতিমধ্যেই কোডটির জন্য আমরা আবেদন করেছি। কোডটি পেলেই যাবতীয় সমস্যা সমাধানসহ আরও ৫টি অনুষদ অতি শিঘ্রই চালু হবে বলে আশা করছি’।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার বলেন, ‘ইন্সটিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজি প্রতিষ্ঠানটি সরাসরি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত। চলমান সমস্যাগুলো নিয়ে আমরা স্থানীয়ভাবে আলোচনা করে যথাসম্ভব সমাধানের প্রচেষ্টা করবো এবং সমস্যা গুলোর বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তথা অধিপ্তরে সুপারিশ করা হবে’।


প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২৩ | সময়: ৫:১০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ