মাস সেরার লড়াইয়ে ফখর- জয়াসুরিয়া-চ্যাপম্যান

স্পোর্টস ডেস্ক: দেশের হয়ে দ্রুততম তিন হাজার রানের কীর্তি। রেকর্ড রান তাড়ায় অপরাজিত ১৮০ রানের অসাধারণ ইনিংস। দুর্দান্ত ধারাবাহিকতায় ‘আইসিসি প্লেয়ার অব দা মান্থ’র সংক্ষিপ্ত তালিকায় জায়গা পেয়েছেন ফখর জামান। এপ্রিলের সেরার লড়াইয়ে তার সঙ্গে আছেন প্রবাথ জয়াসুরিয়া ও মার্ক চ্যাপম্যান।
গত মাসের সেরার লড়াইয়ে থাকা পুরুষ ও নারী ক্রিকেটারদের নাম বুধবার ঘোষণা করে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্তা সংস্থা-আইসিসি। মেয়েদের সংক্ষিপ্ত তালিকায় আছেন থাইল্যান্ডের নারুয়েমল চাওয়াই, সংযুক্ত আরব আমিরাতের কাভিশা ইগোদাগে ও জিম্বাবুয়ের কেলিস দলুভু।
ফখর জামান: ঘরের মাঠে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে পরপর দুই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করে দলকে এগিয়ে দেন ফখর। দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৩৭ রানের বড় লক্ষ্যে স্রেফ ১৪৪ বলে ১৮০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। ১৭ চার ও ৬ ছয়ের ইনিংসে ১০ বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে যায় পাকিস্তান। প্রথমটিতে ২৮৮ রান তাড়ায় ফখরের ব্যাট থেকে আসে ১১৪ বলে ১১৭ রান। দুই ম্যাচেই সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন তিনি।
দ্বিতীয় ম্যাচের সেঞ্চুরিতে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে স্রেফ ৬৭ ম্যাচে ৩ হাজার রান পূরণ করেন তিনি। পাকিস্তানের হয়ে এত কম ইনিংসে এই মাইলফলক ছুঁতে পারেননি আর কেউ। ফখর পেছনে ফেলেছেন বর্তমান অধিনায়ক বাবর আজমকে। বাবরের লেগেছিল ৬৮ ইনিংস। বিশ্বরেকর্ডে ফখরের ওপরে আছেন কেবল হাশিম আমলা (৫৭ ইনিংস)।
এপ্রিল মাসে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। কুড়ি ওভারের পরের ম্যাচগুলোতে তেমন রান না পেলেও ওয়ানডেতে দ্যুতিময় ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে মাস সেরার দৌড়ে জায়গা পেয়েছেন তিনি।
প্রবাথ জয়াসুরিয়া: আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করে টেস্ট ইতিহাসের ৭১ বছর পুরোনো রেকর্ড ভেঙেছেন জয়াসুরিয়া। ৭ টেস্টে পূরণ করেছেন ৫০ উইকেট। উইকেটের ফিফটি ছুঁতে তার চেয়ে কম টেস্ট লেগেছে স্রেফ একজন বোলারের, চার্লি টার্নার ৬ টেস্টে।
ওই সিরিজের দুই টেস্টে ১৭ উইকেট নেন ৩১ বছর বয়সী বাঁহাতি স্পিনার। প্রথম ম্যাচে নেওয়া ৫২ রানে ৭ উইকেট তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। সব মিলিয়ে সাত ম্যাচে এরই মধ্যে ৬ বার ইনিংসে ৫ উইকেট পেয়েছেন তিনি। ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়েছেন দুইবার।
মার্ক চ্যাপম্যান: পাকিস্তান সফরে টি-টোয়েন্টি সিরিজে দারুণ ছন্দে ছিলেন চ্যাপম্যান। পাঁচ ম্যাচে দুই ফিফটি ও এক সেঞ্চুরিতে ২৯০ রান করেন ২৮ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান। স্রেফ এক ম্যাচে আউট হওয়ায় গড় ছিল অবিশ্বাস্য, ২৯০! তার দ্যুতিময় ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে পিছিয়ে থেকেও সিরিজে সমতা নিয়ে শেষ করে নিউ জিল্যান্ড। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৪০ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। তবে ম্যাচ জিততে পারেনি তার দল।
চতুর্থ ম্যাচে ৪২ বলে ৭১ ও শেষ ম্যাচে ৫৭ বলে অপরাজিত ১০৪ রান করেন চ্যাপম্যান। তার সেঞ্চুরিতে ১৯৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয় পায় সফরকারীরা। অসাধারণ এই পারফরম্যান্সের কল্যাণে আইসিসি টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং র‌্যাঙ্কিংয়ে ৪৮ ধাপ এগিয়েছেন তিনি। ৫৩৭ রেটিং নিয়ে ক্যারিয়ার সেরা ৩৫ নম্বরে অবস্থান করছেন তিনি।
নারুয়েমল চাওয়াই: গত মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ৩-০ তে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে ব্যাটিংয়ে বড় ভূমিকা রাখেন চাওয়াই। প্রথম ম্যাচে ৫৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন তিনি। তৃতীয়টিতে ৫২ রানের হার না মানা ইনিংসে দল জেতান ৩২ বছর বয়সী ব্যাটার। পরে টি-টোয়েন্টি সিরিজের তিন ম্যাচে ৫৫ রান করেন তিনি। দ্বিতীয়টিতে তার ২৯ রানের সৌজন্যে ৫ উইকেটের জয় পায় থাইল্যান্ড।
কাভিশা ইগোদাগে: গত মাসে আফ্রিকার প্রতিকূল কন্ডিশনে গিয়েও দুটি ভিন্ন প্রতিযোগিতায় ৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ২৩৬ রান করেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইগোদাগে। উগান্ডায় ভিক্টোরিয়ান উইমেন টি-টোয়েন্টি সিরিজের তিন ম্যাচে ৫৬ গড়ে ১১২ রান করেন তিনি। পরে নামিবিয়ায় চার জাতি টি-টোয়েন্টি সিরিজে পাঁচ ম্যাচে করেন আরও ১২৪ রান।
কেলিস দলুভু: থাইল্যান্ড সফরে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে দারুণ পারফরম্যান্স করেন জিম্বাবুয়ের ১৭ বছর বয়সী অলরাউন্ডার দলুভু। ওয়ানডে অভিষেকে ২২ রানে ৫ নেন তিনি। সব মিলিয়ে তিন ওয়ানডেতে ৯ ও তিন টি-টোয়েন্টিতে ৪ উইকেট পান বাঁহাতি স্পিনার। ছয় ম্যাচের প্রতিটিতেই অন্তত ১টি হলেও উইকেট নেন তিনি।


প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৩ | সময়: ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ