বাঘায় ভাংগারি ব্যবসার আড়ালে চোরাই পন্য ক্রয় ও মাদকের ব্যবসা

স্টাফ রিপোর্টার,বাঘা :

রাজশাহীর বাঘায় প্রায় এক থেকে দুই বিঘা জমির উপড়ে গড়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি ভাংগারি ব্যবসার আড়ত। অভিযোগ উঠেছে, এসব আড়তে বিভিন্ন ধরনের চোরাই পন্য বিক্রি হয়ে থাকে। এ ছাড়াও ভাংগারি বোঝাইকৃত ট্রাকে ঢাকা-সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাদক পাচার হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। এদের মধ্যে গত তিন চার বছরে কোটি-কোটি টাকার মালিক বনেছেন বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। আর এ বিষয় গুলো নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সুশীল সমাজের লোকজন।

সরেজমিন শুক্রবার(৩১ মার্চ) বাঘা উপজেলার মহদিপুর মোছার ঈদগা সংলগ্ন পোরহান উদ্দিন এর বাড়িতে গিয়ে দেখা যাই বাড়ির পার্শ্বে প্রাচীর দিয়ে ঘেরে। আর তার মধ্যে রয়েছে প্লাষ্টিক ও প্লাষ্টিক পন্য, রড ও লোহা, টায়ার,ক্যারেড(ঝুরি),ঢেউ টিন, ভ্যানের ভাঙ্গা বডি, সিলভার যাতীয় দ্রব্য(পাতিল-কড়াই ইত্যাদি) এবং ইঞ্জিন চালিত গাড়ির ব্যাটারি। এর বাইরেও রাস্তার অপর দিকে প্রায় দেড় বিঘা জমি উপরে চলছে একই ব্যবসা। এ জন্য প্রতিদিন সেখানে কাজ করছে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ জন লেবার।

স্থানীয় লোকজন বলেন, পোরহান উদ্দিন একজন গ্রাম পুলিশের সদস্য এবং দরিদ্র মানুষ, পৈত্রিক সূত্রে তিনি বিঘা খানেক জমির মালিক। কিন্তু ভাংগারি ব্যবসা করতে গিয়ে গত কয়েক বছরে কোটি-কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এর অন্তরালে রয়েছে অনৈতিক ব্যবসা। আর এ গুলো গোপনে নজর দারি করতে সেখানে লাগিয়েছেন সিসি ক্যামেরা। লোকজন বলেন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর সদস্যগণ তার ব্যাপারে খোজ নিতে গেলে তিনি সকলকে সিসি ক্যামেরা দেখিয়ে ভুলিয়ে দেন এবং বলেন, “আপনারা আমার সিসি ক্যামেরা দেখেন এখানে কোন অনৈতিক কাজ হয়না ’’। প্রকৃত পক্ষে রাতের বেলায় ভাংগারি ট্রাক বোঝাই হওয়ার সময় মাদকের বস্তাও ট্রাকে লোড হয় বলে এলাকার লোকজন অভিযোগ করেন। লোকজন আরো অভিযোগ করেন, অত্র এলাকায় যারা মাদক সেবন করে এবং পেশাদার চোর, তারাও চোরাই পন্য এনে তার কাছে বিক্রী করে। তবে এ সব অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন পোরহান উদ্দিন ।

এ গ্রামের পাশে জুয়েল নামে অপর এক ব্যাক্তি একই ব্যবসা করছেন। তার বিরুদ্ধেও রয়েছে অনুরুপ অভিযোগ। শুধু জুয়েল নয়, তার মতো অনেকই এ ব্যবসা করে রাতা-রাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে হরহামেশায়। এদের মধ্যে বাঘা সদরের কালু অন্যতম। তিনি পেশায় ছিলেন একজন সাধারণ শ্রমিক। ভাংগারির সাথে অবৈধ মাদকের ব্যবসা করে সাধারণ শ্রমিক থেকে রাতা-রাতি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। লোকজন আরো বলেন, ভাংগারি ছাড়া দৃশ্যমান অন্য কোন ব্যবসা তার নেই। তার কোটিপতি হওয়াটা যথেষ্ট প্রশ্ন সাপেক্ষ বিষয়।

এদিকে এলাকার অভিঙ্গ মহলের লোকজন বলেন, ভাংগাড়ির মধ্যে এমন কি আছে, যে হাজার টাকার ভাংগারির মাল বিক্রী করে কোটি-কোটি টাকার মালিক হওয়া যায় ? তাঁদের দাবি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি এসব জায়গায় সুষ্ট তদন্ত করেন, তাহলে কেঁচো খুড়তে সাপ বেরিয়ে আসবে এবং এলাকায় চুরি রোধ-সহ মাদকের প্রবণতা কমে আসবে।

 

সানশাইন/সোহরাব


প্রকাশিত: মার্চ ৩১, ২০২৩ | সময়: ৩:৫১ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর