আত্রাইয়ে ১৬৩ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই শহীদ মিনার 

আত্রাই প্রতিনিধি : 
ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বীর শহীদদের স্মরণে পালিত হবে মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের ৭১ বছর পরও নওগাঁর আত্রাই উপজেলার প্রাথমিক,মাধ্যমিক ও উ”চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা-১৯৫ টি। এর মধ্যে ১৬৩ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নেই কোন শহীদ মিনার।

 

 

ফলে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস স্বীকৃতি পেলেও শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস,গুরুত্ব ও ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৮ টি ইউনিয়নে ১৩০ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এরমধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ১৫ টিতে। শহীদ মিনার নেই ১১৫ টিতে।

 

 

উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মাধ্যমিক ও উ”চ মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ৬৫ টি স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে। এর মধ্যে শহীদ মিনার আছে মাত্র ১৭ টিতে । শহীদ মিনার নেই ৪৮ টিতে।

 

 

শিক্ষার মানোয়ন্ননে সরকার প্রতি বছরই বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়ে থাকে। বছরের প্রথম দিনেই শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেন। ভবনসহ অবকাঠামো তৈরিতে বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠান গুলোতে শহীদ মিনার নির্মাণে সেই ভাবে কোন বরাদ্দ দেয়া হয় না।

 

 

ভাষার জন্য বাংলার দামাল ছেলেরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠিত করেছে। অথচ ভাষা শহীদদের স্মরণ করার জন্য নেই শহীদ মিনার। শহীদ মিনার না থাকা কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২১ ফেব্রুয়ারী এলে নিজেদের উদ্যোগে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি দেওয়া হয়। এছাড়াও কোন কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না বানিয়ে আলোচনা সভা বা মিলাদ মাহফিল করে দিবসটি পালন করা হয়। আবার কিছু প্রতিষ্ঠানে সেটাও করা হয় না।

 

 

নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার চক শিমলা উ”চ বিদ্যালয়ে কোন শহীদ মিনার নেই। ফলে ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রাণ বল্লভ মন্ডল বলেন,১৯৬৯ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। আজ অবধি কোন শহীন মিনার নির্মান করা হয়নি। শহীদ মিনার নির্মানে কোন বাজেটও নেই। যার কারনে উদ্যোগ গ্রহণ করা সম্বব হচ্ছেনা।

 

এ বিদ্যালয়ের পাশেই চক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানেও নেই শহীদ মিনার। ১৯০৫ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। তবুও নেই কোন শহীদ মিনার। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চাঁদ সুলতানা সাথে কথা হলে তিনি বলেন,একটি শহীদ মিনার করতে গেলে অনেক অর্থের প্রয়োজন। সরকারি ভাবে বরাদ্দ নেই যার কারনে প্রতিবছর অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বিদ্যালয়টির সহ-সভাপতি ওমর ফারুক বলেন,একটি শহীদ মিনার নির্মান করতে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ টাকার প্রয়োজন। তাছাড়া শহীদ মিনার নির্মানে কোন বরাদ্দও পাওয়া যায়না।

 

 

আত্রাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মিনহাজ উদ্দিন মিঠু বলেন,আর্ন্তজাতকি মাতৃভাষা দিবস স্বীকৃতি পেলেওে এর ইতিহাস ও গুরুত্ব সর্ম্পকে ধারণা নেওয়া থেকে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হচ্ছে গ্রাম পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা। আমি মনে করি, সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার থাকা আবশ্যক।

সানশাইন / শামি

 

 


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩ | সময়: ১০:৩৬ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine