তিনি আসবেন এবং আমরা জেগে উঠবো

অন্যের ভালো দিকগুলো খুঁজতে গেলেই নিজের সেরাটা বের করে আনা যায়। এমন উক্তির গ্রহণযোগ্যতা তো রয়েছেই। মানুষ তাঁর কর্মগুনে বড় হয়। থেকে যায় বেঁচে থাকা মানুষের মনের গহীনে। কাজেই শ্রেষ্ঠ কর্ম করেই উদাহরণ সৃষ্টি করতে হয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা তেমনই এক চরিত্র। যিনি তাঁর পিতার সকল আদর্শ ধারণ করে আজকের পৃথিবীতে আলাদা এক সত্তা। যিনি বিশ্রাম নিতে জানেন না। কাজ আর কাজ করতে তিনি ভালবাসেন।

 

“ঘুমিয়েই কি কেটে যাবে একটি জীবন? জীবন হোক কর্মচাঞ্চল্যে ভরপুর, ছুটে চলার নিরন্তর অনুপ্রেরণা। বিশ্রাম নেওয়ার জন্য কবরের জীবন চিরকাল পড়ে রয়েছেই।” এমনটি বলেছিলেন, হযরত আলী (রাঃ)। সত্যিই তাই। এদিকে বাংলাদেশ যার নেতৃত্বে এখন এগিয়ে যাচ্ছে, তা না দেখে, ভান করে ঘুমিয়ে থাকা কী যায় ?

 

 

জেগে ঘুমানোর মত করেই তবুও একটি শ্রেণি রয়েছে। রাজনৈতিকভাবে পর্যালোচনা করলে তা বলাই যায়। বাংলাদেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়াতে উদ্যোগের উপর উদ্যোগ। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি নারী শেখ হাসিনার পদক্ষেপে বাংলাদেশ কোথায় দাঁড়িয়ে গেছে, তা নিয়ে ভাবতে হবে তো। হ্যাঁ, রাজনৈতিক দলের নামে একটি অপশক্তি জেগে ঘুমিয়ে থাকুক। কিš‘ বাস্তবতা হল, ওরা নিজেরাও বুঝতে পারে, বাংলাদেশ আর্থ সামাজিক ক্যানভাসে যে বিপ্লব করতে পেরেছে, তা সম্ভব হয়েছে ওই একজন শেখ হাসিনার জন্যই।

 

 

 

শেখ হাসিনা, তিনিই আমার প্রিয় শহর রাজশাহীতে এবার আসছেন। আগেও এসেছেন। তবে পুরো বাংলাদেশের মধ্যে যে নগরীকে আমি বিশ্বসেরার পর্যায়ে নিয়ে যেতে একজন কর্মী হিসাবে ভুমিকা পালন করেছি, তা পরখ করতে তিনি আসুক। আমি নিশ্চিত যে, পুরো শহরবাসী ও আশপাশের জেলাগুলোর মানুষ তাঁকে দেখতে আসবে। এরপর তাঁর ভাষণ শুনে আমরা জেগে যাব। রাজনীতির ভবিষ্যৎ পথচলায় নির্দেশনা পাওয়াটাও জরুরী। আমরা তা পাব। মানুষ ফলত তাঁকে দেখবার জন্য ব্যকুল। এই অপেক্ষার প্রহর কেটে যাবে, যখন ২৯ জানুয়ারী জননেত্রী রাজশাহীতে পা রাখবেন।

 

 

 

একজন শেখ হাসিনার জীবনের যে গল্প তা অনুধাবন করার পর্যায়ে আমরা কতজন যেতে পেরেছি? পিতা-মাতাসহ পরিবারের প্রায় সব্বাইকে হারিয়ে এই সংগ্রামী নারী ঝিমিয়ে পড়েন নি। লড়ে গেছেন। অভিজ্ঞতা অর্জনের মধ্য দিয়ে তাঁর শ্রেষ্ঠ শাসক হয়ে পড়া ও দল পরিচালনা করার অদম্য দিকটি নিয়ে চিন্তা করতে পারলে কখনো আবেগে ভাসি, কখনো রোমাঞ্চিত হই। বিখ্যাত উক্তিটি মনে পড়ে। যখন বলা হল, “প্রত্যেকের জীবনের একটা গল্প আছে। অতীতে ফিরে গিয়ে গল্পের শুরুটা কখনো পরিবর্তন করা সম্ভব নয়, কিš‘ কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তুমি গল্পের শেষটা চাইলেই নতুন করে সাজিয়ে তুলতে পারো।”

 

 

শেখ হাসিনা তাই এমন এক গল্প রচনা করেছেন, যেখানে তিনি আমাদের জন্য এক অনুপ্রেরণা, যার তুলনাও তিনি নিজেই। তিনি কার্যত এক বিজয়ী সত্তা। যখন ব্যক্তিবিশেষ মতবাদ রেখে বললেন, “লক্ষ্যের পেছনে অক্লান্ত পরিশ্রম করেও যখন সবাই তোমাকে সমর্থন করে না, অনেক ক্ষেত্রে তিক্ত স্বাদ পেতে হয়- তাতে দুঃখের কিছু নেই। এই কঠোর পরিশ্রমের ভেতর দিয়ে তুমি হয়ে উঠেছ আরো শক্তিশালী, আরো অভিজ্ঞ, আরো দক্ষ- এটাই তো সত্যিকারের বিজয়।”

 

 

 

শেখ হাসিনার জীবন ও সেই প্রশ্নে আরো তিনটি মতবাদের ওপর বিশ্লেষণ করে আজকের লেখাটিকে সমৃদ্ধ করা যাক। যেমন একটি অর্থবহ উক্তি ছিল, “পৃথিবীর সবচেয়ে আনন্দের অনুভূতিটি হচ্ছে যখন তুমি একটি লক্ষ্য ঠিক করেছিলে সেই লক্ষ্যটি পূরণ করতে পারলে।”

 

শেখ হাসিনা চেয়েছিলেন যে, বাংলার মানুষগুলোর মুখে হাসি ফোটাতে হবে। এই একটি মাত্র লক্ষ্যকে সামনে রেখে তিনি বাংলাদেশের মানুষগুলোকে হতাশ করেন নি। অথচ, তাঁর মনে কোন অহংবোধ নেই, দাম্ভিকতা নেই। যেমনটি ছিলেন তেমনই আছেন। যা তাঁর জীবনের অংক মিলে যায় আরেকটি নিম্নোক্ত মতবাদের সাথে। “দাম্ভিক হওয়া সহজ, বিনয়ী হতে হলে প্রয়োজন অসাধারণ আত্মসম্মান এবং মানসিক শক্তিমত্তার।”

 

 

মানসিক শক্তিমত্তা প্রদর্শন করে নেতৃত্বের অন্যতম সেরা গুনের অধিকারিণী হয়ে শেখ হাসিনা নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছেন। আমি বিশ্বাস করি এখন, বাংলাদেশের মানুষগুলোর তাঁকে ঘিরে প্রতিদানের সময়টা হয়েছে। সেটা শুধু ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে নয়, তা হল, শেখ হাসিনাকে সম্মান করে টিকে থাকা। মনে রাখতে হবে, “পৃথিবীটা হচ্ছে একটি আয়নার মতো- তুমি সবার সাথে যেমন ব্যবহার করবে যেমন মনোভাব পোষণ করবে ঠিক তেমনটাই ফিরে পাবে প্রতিদানে।”

 

 

শেখ হাসিনা মানুষের সুখ দুঃখের সাথী হতে লড়ে যাচ্ছেন, যাবেন। সেই মানুষটি যখন আজ রাজশাহীর মাটিতে আসবেন, আমি সত্যিই পুলকিত এবং অভিভুত। হ্যাঁ, আমি উন্নত দেশগুলোয় যেয়ে তাদের সজ্জিত শহরগুলোকে মনের কেন্দ্রে জমা করে ছবি তুলে রেখে রাজশাহীকে দেশের শ্রেষ্ঠ নগরী হিসাবে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছি—–আগামী দিনগুলোয় জাতীয় রাজনীতির খুঁটিনাটি বিষয় থেকে শুরু করে দারুণ সব কাজে নিজেকে নিয়োজিতও রাখব, তবে ওই একজন শেখ হাসিনার কর্মী হয়ে বলতে চাই, “হাল ছেড়ো না বন্ধু, বরং কন্ঠ ছাড়ো জোরে— উজ্জীবিত কর আমায় আমাদের, জয় বাংলা বলে !” একজন শেখ হাসিনার আসন্ন রাজশাহী সফর, সকলেই অপেক্ষারত।

লেখকঃ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
মেয়র, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২৩ | সময়: ৯:৫২ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine