বাগমারার শিক্ষকের যৌন হয়রানীর শিকার কলেজ ছাত্রী মৃত্যুশয্যায়

স্টাফ রিপোর্টার, বাগমারা: বাগমারায় শিক্ষকের যৌন হয়রানীর শিকার সেই কলেজ ছাত্রী এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। শিক্ষকের যৌন হয়রানীতে হারপিক পান আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় কলেজ ছাত্রী আর্নিকা(১৮)। বর্তমানে অর্থ সংকটে তার চিকিৎসা থেমে গেছে। আর্নিকা উপজেলা বসন্তপুর গ্রামের ভুমিহীন বজলুর রশিদের মেয়ে ও শ্রীপুর রামনগর ডিগ্রি কলেজের একাদশ বিজ্ঞান বিভাগের মেধাবী ছাত্রী। এ ঘটনায় একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।
মামলা ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, প্রতিদিনের ন্যায় হাটগাঙ্গোপাড়ায় এক শিক্ষকের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যেত আর্নিকা। সম্প্রতি সে হাটগাঙ্গোপাড়ায় ওই শিক্ষকের বাড়িতে প্রাইভেট পড়তে যায়। এ সময় আর্নিকার পথ রুদ্ধ করে তাকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে একই কলেজের শিক্ষক আনোয়ার হোসেন(৪৫)। সে আর্নিকাকেও অশ্লীল কথা-বার্তা বলে। এই অশ্লীলতার অপমান সহ্য করতে না পেরে ঐ দিন বাড়িতে ফিরে আত্নহত্যার জন্য হারপিক পান করে আর্নিকা। আনোয়ার শ্রীপুর রামনগর ডিগ্রি কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক। সে এর আগে একই কলেজের একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানী ও কু প্রস্তাব দিয়েছে বলে একাধিক ছাত্রীর অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন।
এদিকে হারপিক পানের পর আর্নিকার চিকিৎসায় সর্বস্ব ব্যয় করেছেন তার ভুমিহীন পিতা বজলুর রশিদ। মেয়ের চিকিৎসা করতে তিনি আজ নিঃস্ব। তার মেয়ে এখন মৃত্যুর প্রহর গুনছে। আর্নিকা বর্তমানে রাজশাহীস্থ রয়েল নামের বেসরকারী হাসপাতালে ৬১৭ নং ওয়াডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। ঐ ঘটনার কয়েকদিন পর এলাকাবাসি ঐ শিক্ষক ও মেয়ের বাবাকে নিয়ে শালিসী বলেছিল বলে জানান এলাকাবাসী। সেখানে সিদ্ধান্ত হয় আর্নিকার চিকিৎসার জন্য সমস্ত খরচ ঐ শিক্ষককে বহন করতে হবে। এই সিদ্ধান্তের পর মাত্র ৫ হাজার টাকা দেয় শিক্ষক আনোয়ার হোসেন। এরপর সে আর টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়।
ঘটনার পর আর্নিকার বাবা গত ২৬ নভেম্বর ইউএনও’র দপ্তরে শিক্ষার্থী নির্যাতনের বিচার চেয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। সে অভিযোগের কোন সুরাহ হয়নি। পরে গত ৭ জানুয়ারি বাগমারা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। সে অভিযোগের তদন্ত দেওয়া হয় হাটগাঙ্গোপাড়া পুলিশ ফাড়ির উপর।
সেখানকার দায়িত্ব প্রাপ্ত অফিসার এস আই আব্দুল মজিদ বিবাদির সঙ্গে আপোসের জন্য চাপ দেন বলে মেয়ের বাবা জানান। এরপর ১১ জানুয়ারি রাজশাহী জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট আদালতে আনোয়ারকে আসামি করে একটি মামল দায়ের করেন বজলুর রশিদ। আর্নিকার বাবা বজলুর রশিদ বলেন, এ ঘটনার তিনি সুবিচার চান। এ ঘটনায় শিক্ষক আনেয়ার হোসেন কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। মামলার তদন্তকর্মকর্তা এস আই আব্দুল মজিদ বলেন, বিষয়টি ওসি স্যারকের বিস্তারিত জানিয়েছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজের অধ্যক্ষ এম এ সালাম বলেন, ঘটনার সময় আমি দেশের বাইরে ছিলাম। তবে দেশে এসে ওই ঘটনায় আপোশের কথা শুনেছি। বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি সবে মাত্র ্এ থানায় যোগদান করেছি। এ বিষয়ে একটি অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৩ | সময়: ৫:২৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর