চারঘাটে প্রতিবন্ধী হরিপদ দাসের সফলতা

মিজানুর রহমান, চারঘাট: প্রতিবন্ধকতা কখনোই সাফল্যকে আটকে দিতে পারে না। প্রতিবন্ধীরা বোঝা নয়, সঠিক যত্ন ও পরিচর্যা পেলে ওরাও বদলে দিতে পারে সমাজ, সংসার ও পরিবার। সমাজের মানুষের শুভ দৃষ্টি ও রাষ্ট্রের সামান্য সহযোগিতা পেলে অন্যদশ জন সুস্থ্য স্ববল স্বাভাবিক মানুষের মতই দেশ জাতি গঠনে ভুমিকা রাখতে পারে।
এমনি একজন রাজশাহীর চারঘাট উপজেলা সদরের হঠাতপাড়া গ্রামের বাসিন্দা শ্রী অনুপ কুমার ওরফে হরিপদ দাস। প্রতিবন্ধী হয়েও জীবন সংগ্রামে থেমে নেই তিনি। কাজের মাঝেই তার পরম আনন্দ। তার বাবার নাম মৃত গনেশ দাম। ব্যাক্তি জীবনের তিনি বিবাহিত, তিন সন্তানের জনক তিনি।
চারঘাট সদর বাজারে ফুটপাতের পাশে বসে দীর্ঘ ৫০ বছর করছেন জুতা-সেন্ডেল সেলাইয়ের কাজ। এ কাজ করেই তিনি তার সংসারে এনেছে স্বচ্ছলতা। কিনেছেন মাথা গোজার ঠায় ৩ কাঠা জমি। বিয়ে দিয়েছেন এক ছেলে ও দুই মেয়ের। শুক্রবার দুপুরে কথা হয় শারীরিক প্রতিবন্ধী হরিপদ দাসের সঙ্গে। এসময় তিনি জানালেন তার জীবন সংগ্রামের না জানা কাহিনী।
তিনি বলেন, জন্মের পর থেকে তিনি শারীরিক প্রতিবন্ধী। শারীরিকভাবে প্রতিবন্ধী হওয়ায় দাঁড়াতে কিংবা হাঁটতে পারেন না তিনি। দুই হাতের ওপর ভর দিয়ে চলাফেরা করেন। মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকে এলাকায় ঘুরে ঘুরে জুতা-স্যান্ডেল সেলাই করতেন তিনি। পরে শারীরিক সমস্যা বেড়ে গেলে বেকায়দায় পড়েন। পরে চারঘাট বাজারে চারঘাট-আড়ানী রোডে রাস্তার পাশে ফুটপাতে শুরু হয় জুতা-সেন্ডেল সেলাইয়ের কাজ। এ কাজ করে তিনি কিনেছেন মাথা গোজার ঠায় তিন কাঠা জমি। বিয়ে দিয়েছেন এক ছেলে ও দুই মেয়ের । আগে এ কাজ করে সংসার ভালো চললেও এখন বর্তমান বাজারে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। তার পরেও আমি কারো কাছে ভিক্ষা করি না। আমি আমার শ্রম দিয়ে সংসার চালাই এতেই আমি সন্তুষ্ট। তবে সরকারী ভাবে ৩ মাস পর পর ২৫৫০ টাকা ভাতা ছাড়া তার ভাগ্যে আর কিছুই জোটে না। তবে প্রতিবন্ধীরা যে সমাজের বোঝা নয়, সেটিই প্রমান করেছেন চারঘাটের শারীরিক প্রতিবন্ধী হরিপদ দাশ।