সর্বশেষ সংবাদ :

রাজশাহীতে জড়ো হচ্ছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীর ঐতিহাসিক মাদ্রাসা মাঠে বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ ঘিরে বাইরের জেলা থেকে লোকজন আসতে শুরু করলেও এখন প্রস্তত হয়নি মঞ্চ। পুলিশের দখলে থাকা মাদ্রাসা মাঠের পাশে বিএনপির উপস্থিতি বৃদ্ধি পেলেও শনিবারের আগে অনুমতি না মেলায় তারা মাঠের আশেপাশে অবস্থান নিচ্ছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মঞ্চ তৈরির জন্য বিএনপির ভাড়া করা ডেকোরেটরের লোকজনকে দেখা গেছে। তবে এখনো মঞ্চ তৈরী শুরু হয়নি। ধারনা করা হচ্ছে শেষ পর্যন্ত মাদ্রাসা মাঠের স্থায়ী মঞ্চই হয়ত ব্যবহার করতে পারেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এ নিয়ে সমাবেশের দায়িত্বে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীরাও মুখ খুলছেন না। তবে বিএনপির একটি সূত্র বলছে, এরই মধ্যে মঞ্চ তৈরী করা হবে। নতুন মঞ্চেই তাদের শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেবেন।
এদিকে বুধবার রাত থেকেই রাজশাহীতে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের উদ্দেশে উপস্থিত হতে শুরু করেছেন রাজশাহীর বাইরের জেলার নেতাকর্মীরা। রাতে বাস ভাড়া করে তারা রাজশাহীতে পৌছে মাদ্রসা মাঠের পাশে কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠে অবস্থান নিয়েছে। নেতাকর্মীদের জন্য স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা রান্না করে খাবার সরবরাহ করছেন। সমাবেশের দুই দিন বাকি থাকলেও ইতোমধ্যে মাদরাসা মাঠে কয়েক হাজার নেতাকর্মীরা জড়ো হয়েছেন বলে বিএনপি নেতারা দাবি করেন। সমাবেশস্থলের পাশের ঈদগাহ মাঠে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রান্না শুরু হয়েছে। একসঙ্গে রান্না, খাওয়া ও আড্ডা দেওয়াসহ সব মিলিয়ে সেখানে এখন উৎসবমুখর পরিবেশের বিরাজ করছে।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে মাদ্রাসা মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ঈদগাহ মাঠে অস্থায়ীভাবে ক্যাম্প তৈরি করা হয়েছে। সেগুলোতে রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা অবস্থান করছেন। এছাড়া অনেকেই পদ্মার পাড়ে সময় কাটাচ্ছেন। ঈদগাহ মাঠের একপাশে বড় বড় হাঁড়িতে নেতাকর্মীদের জন্য রান্নার করছেন। সমাবেশে ইতোমধ্যে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, জায়পুরহাট, বগুড়া, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ থেকে আসা নেতাকর্মীদের দেখা গেছে। তবে সবচেয়ে বেশী এসেছেন বগুড়া ও পাবনা জেলার নেতাকর্মীরা।

রাজশাহীর ঈদগাহে রান্নার দায়িত্বে থাকা বাবুর্চি সেলিম জানান, সকাল থেকে রান্না শুরু করেছি। মাঠে ৬ থেকে ৭ জায়গায় রান্না হচ্ছে। রান্না শেষ হলে মাঠে থাকা যেকোনো নেতাকর্মী এই খাবার খেতে পারবেন। আপনারা দেখছেন মাঠের আশেপাশে অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। অনেকেই ক্যাম্পগুলোতে অবস্থান করছেন। সবাই এক সঙ্গে মাটিতে বসে তিনবেলা খাবার খাবে।
রাজশাহী বিএনপির এক নেতা বলেন, শনিবার (৩ ডিসেম্বর) সমাবেশ। তবে বৃহস্পতিবার মানুষ চলে এসেছে। এটা জনগণের দাবিতে পরিণত হয়েছে। আমরা কষ্ট করে আগে বাসে চলে এসেছি।
রাজশাহী জেলা বিনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও গণসমাবেশ মিডিয়া কমিটির মেম্বার গোলাম মোস্তোফা মামুন জানান, ইতোমধ্যে অনেক জেলার নেতাকর্মী এখানে এসেছেন। সমাবেশস্থলের পাশে ঈদগাহ মাঠে রান্না হচ্ছে। এছাড়া আশেপাশের এলাকায় রান্না হচ্ছে। সেখান থেকে রান্না করা খাবার মাঠে নিয়ে আসা হবে। এখানে বেশিরভাগ নেতাকর্মীরাই রান্না করছেন। কোথাও বাবুর্চি দিয়ে রান্না করানো হচ্ছে। তারা নিজেদের কর্মী দিয়েই রান্না করাচ্ছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ থেকে আসা নাজমুল হোসেন বলেন, ‘বাস ধর্মঘট তাই বুধবার রাতেই চলে এসেছেন তারা রাজশাহীতে। সমাবেশে উপস্থিত থাকবেন জানিয়ে বলেন এখন মাদ্রাসা মাঠে পুলিশ কাউকে যেতে দিচ্ছে না। তবে এখানে আমাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানেই থাকবো। শনিবার সমাবেশের দিন মাদ্রাসা মাঠে সুযোগ পেলে অবস্থান নিব। না হলে এখান থেকেই সমাবেশ দেখবো। মাদ্রাসা মাঠ আর ঈদগাহ মাঠ পাশাপাশি হওয়ায় আমাদের তেমন কোনো সমস্যা হবে না। এখান থেকেই সমাবেশে উপস্থিতি বুঝানো যাবে।
মাদ্রাসা মাঠে দায়িত্বরত রাজশাহী নগর পুলিশের বোয়ালিয়া জোনের এডিসি তৌহিদুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসা মাঠের জনাসভাস্থলে শনিবারের আগে বিএনপির নেতাকর্মীদের প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। তারা মাঠের বাইরে ঈদগাহ মাঠে অবস্থান করতে পারবেন। কিন্তু কোনো মাইক এখন বাজানো যাবে না। কোনো মিছিলও করতে পারবেন না। সমাবেশের আগে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যেন না হয়, এ কারণে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এর আগে বিএনপির গণসমাবেশের জন্য বুধবার রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ আটটি শর্ত বেঁধে দিয়েছে। শর্তে বলা হয়- তিন ঘণ্টার মধ্যে বিএনপিকে রাজশাহী বিভাগীয় গণসমাবেশ শেষ করতে হবে, মঞ্চ তৈরির সঙ্গে যারা জড়িত (আইডি কার্ডসহ) তারা ব্যতীত অন্য কেউ আগামী ৩ ডিসেম্বর সমাবেশের আগে সমাবেশস্থলে প্রবেশ কিংবা অবস্থান করতে পারবে না। সমাবেশের যাবতীয় কার্যক্রম ওই দিন দুপুর ২টা থেকে বিকেলে ৫টার মধ্যে শেষ করতে হবে। সমাবেশে আসা নেতাকর্মীরা যাতে কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারেন, দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ বা আয়োজকদের সেই দায়িত্ব নিতে হবে।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২২ | সময়: ৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ