চলন বিলে কুমড়ার বড়ি তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

তাড়াশ প্রতিনিধি: শীত আসতেই সিরাজগঞ্জের তাড়াশ, উপজেলায় কুমড়ার বড়ি তৈরির কারিগরদের ব্যস্ততা বেড়েছে। এ অঞ্চলে সুস্বাদু কুমড়ো বড়ির চাহিদা রয়েছে দেশ জুড়ে। তাই প্রতি বছরের মতো সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন গ্রামে কুমড়ার বড়ি তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগর ও ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, গ্রামের পিছিয়ে পড়া মানুষের অনেকের ভাগ্য উন্নয়নে শ্রম দিয়ে অনেক বছর ধরে এ কুমড়ার বড়ি তৈরির কাজে নিয়োজিত তাড়াশ, উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রামের প্রায় ৪০-৫০টি পরিবার। সরেজমিন উপজেলার নওগাঁ ইউনিয়নের নওগাঁ গ্রামে দেখা যায়, সারি সারি কুমড়ার বড়ি তৈরি করে শুকানোর জন্য রোদে দিয়েছেন। আর এ কাজের নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও কাজ করে চলেছেন। সারা বছর তৈরি করা সম্ভব হলেও এটি শীতকালেই বেশি তৈরি করা হয়।
উপজেলার নওগাঁ গ্রামের ভাংশিং পাড়ার শ্রীকৃষ্ণ জানান, কুমড়ার বড়ি ব্যবসায়ী পরিবারগুলো প্রথম অবস্থায় তেমন সচ্ছল ছিল না। এই ব্যবসা করে তারা এখন অনেকটাই সচ্ছল অবস্থানে এসেছে। তাছাড়া বড়ি তৈরির জন্য আগে তারা সনাতন পদ্ধতিতে সন্ধ্যায় ডাল ভিজিয়ে রাখতেন এবং পরের দিন তারা কুমড়োর বড়ি তৈরির জন্য ডাল, রং, তেল, টিন ও শীলপাটায় বেটে বড়ি তৈরি করতেন। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন মেশিনের মাধ্যমে কুমড়ার বড়ি তৈরির ডাল ফিনিশিং করা হয়।
অপর এক কুমড়ার বড়ি ব্যবসায়ী মঞ্জিল হোসেন জানান, হাটবাজারে কুমড়ার বড়ি বর্তমানে খুচরা ১৩০-১৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে আশা করছেন আর কয়েক দিন পর আরও দাম বাড়বে। কারণ এ বছর ডালের দাম বেশি, তাই কুমড়ার বড়ির দামও বেড়েছে।
তাড়াশ উপজেলার কুমড়ার বড়ির কারিগর আমিরুল ইসলাম জানান, অত্যন্ত সুস্বাদু হওয়ায় এ অঞ্চলের কুমড়ার বড়ি এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানো হয়। বিশেষ করে রাজধানিতে এর চাহিদা রয়েছে বেশি। তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ লুৎফুন্নাহার লুনা জানান, এ অঞ্চলের কুমড়ার বড়ির কদর রয়েছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। এই কুমড়া বড়ি তৈরই করে অনেক অসচ্ছল পরিবারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। প্রয়োজনে এদের সহায়তা প্রদানের কথা জানান তিনি। তিনি আরও জানান, এই এলাকায় পুরুষের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাই বেশি কাজ করে চলেছেন।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২, ২০২২ | সময়: ৬:২৯ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ