শুটকী তৈরী করে লাভবান নওগাঁর ২০ গৃহবধু

নওগাঁ প্রতিনিধি: চ্যাপা শুটকী তৈরী করে সমবায় ভিত্তিতে অর্থনৈতিক ভাবে আত্মনির্ভরশীল হওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ২০জন গৃহবধু। তাদের সাংসারিক কাজের অবসরে সমন্বিত ভাবে চ্যাপা শুটকী তৈরীর কাজ করছেন। পত্নীতলা উপজেলার আকবরপুর ইউনিয়নের রাউতারা গ্রামের নিলুফা বেগম। আকবরপুর ইউনিয়নের সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। তিনি পেশায় একজন গৃহিনী।
জানা গেছে, মৎস্য বিভাগের পরামর্শ এবং প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষন গ্রহন করে একই পার্শ্ববর্তী আরও ১৯জন গৃহিনীকে সাথে নিয়ে সমিতি গড়ে তোলেন। তারা চ্যাপা শুটকী তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। এখন থেকে ৬ মাস আগে প্রথম পর্যায়ে বাজার থেকে ৬০ কেজি পুঁটি মাছ ৩০০ টাকা কেজি করে ক্রয় করেন। সেই মাছের নারী ফেলে দিয়ে তেলেগুলোকে বোতলে বিশেষভাবে সংরক্ষণ করা হয়। সেই পুটি মাছ নির্দিষ্ট সময় শুকিয়ে নেয়া হয়। পরবর্তীতে ঐ শুটকী মাছ আগে থেকেই সংরক্ষিত মাছের তেলের সাথে ভালো ভাবে মেখে নিতে হবে। পরে একই ভাবে মাটির মটকী (বড় পাত্র) অভ্যন্তরে ঐ মাছের তেল দিয়ে মেখে নিয়ে তার ভিতর পুঁটি মাছগুলো ভালো ভাবে গেঁজে গেঁজে পুরে ফেলতে হবে। এরপর মাটির ঐ পাত্রের মুখ বিশেষ ভাবে বন্ধ করে মাটির নিচে পুঁতে রাখতে হবে। এভাবে দীর্ঘ ৬ মাস মাটির নিচে পাত্রগুলোকে রাখতে হবে। ৬ মাস পর এগুলো প্রকৃত ভাবে খাওয়ার উপযোগি হয়।
চ্যাপা শুটকী’র উদ্যোক্তা নিলুফা বেগম জানান, প্রথম পর্যায়ে ৬০ কেজি পুঁটি মাছের শুটকী তৈরী করেছেন। তৈরী হওয়ার পর ওজন তিনগুন হয়ে থাকে। অর্থাৎ পুরোপুরি শুটকী হওয়ার পর এর ওজন হয়েছে ১৮০ কেজি। এসব শুটকীর চলমান বাজার রয়েছে নাটোর এবং ঢাকা। এসব বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি শুটকীর মূল্য ৬০০ টাকা। সেই হিসাবে তাদের তৈরী চ্যাপা শুটকীর বিক্রি মূল্য পাবেন ১ লাখ ৮ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে তাদের খরচ হয়েছে সর্বোচ্চ ২০ টাকা। খরচ বাদ দিয়ে তারা নীট লাভ করবেন প্রায় ৯০ হাজার টাকা। সংসারের সব কাজ সময় মত সম্পাদন করেও অতিরিক্ত হিসেবে এই আয় করছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. আমিমুল এহসান বলেন, চ্যাপা শুটকী খুব উপাদেয় এবং সুস্বাদু খাবার। এটি লাভজনকও বটে। পত্নীতলা উপজেলার রাউতারা গ্রামের এসব মহিলারা চ্যাপা শুটকী তৈরী করে লাভবান হয়েছেন। এ ব্যাপারে যদি কেউ বা কোন গোষ্ঠী বানিজ্যিকভাবে চ্যাপা শুটকী তৈরী করতে চান তাহলে তাদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস তার।


প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২২ | সময়: ৬:২০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ