মঙ্গলবার, ২৮শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, ১৪ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী নগরের খানসামার চক এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোর রাতে শর্ট সার্কিট থেকে একটি কার কেয়ার সেন্টারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে সেন্টারে থাকা পাঁচটি প্রাইভেট কারসহ বিভিন্ন মালামাল পুড়ে গেছে।
এ সময় আগুনের শিখা কার কেয়ার সেন্টারের পাশের ১০ তলা ভবনের দ্বিতীয়তলার গ্র্যান্ড তোফা কনভেনশন হলে ছড়িয়ে পড়ে। এতে হলটির এসি, সোফা, চেয়ার, টেবিলসহ বেশ কিছু জিনিসপত্র পুড়ে গেছে। অগ্নিকাণ্ডের পর ওই ভবনের তিনতলা ও দোতলায় ফাটল দেখা দিয়েছে।
ভবনের মালিকপক্ষের দাবি, ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন এতে ২ কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৩টার দিকে আশিব মাহবুব সানির কার কেয়ার সেন্টারে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কার সেন্টারে কোন লোক ছিল না। এতে কোনো প্রাণহানি ঘটেনি।
আগুনে বিকট বিস্ফোরণের শব্দে ওই ভবনের বসবাসকারীরা জেগে যান। তারা দ্রুত রাজশাহী সদর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে খবর দেন। তবে এ সময়ের মধ্যেই আগুন আরও ভয়াবহ রূপ নেয়।
কার সেন্টারের ভেতরে থাকা সিলিন্ডারগুলো বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে থাকলে ভবন ও আশপাশে থাকা মানুষের মধ্যে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কার সেন্টার থেকে একই মালিকের পাশের ভবনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
কার সেন্টার ও কনভেনশন সেন্টারের মালিক আশিব মাহবুব সানি জানান, কার সেন্টারে তার নিজস্ব দুইটি এবং গ্রাহকের তিনটি গাড়ি, আধুনিক যন্ত্রপাতি, বিভিন্ন মালামাল ও নগদ টাকা ছিল, যা আগুনে পুড়ে গেছে। আর কনভেনশন সেন্টারের পাঁচটি এসি, টিভিসহ বিভিন্ন আসবাবপত্র ছিল। আর দামি ইন্টেরিয়র ডেকোরেশন করা ছিল, যা আগুনে পুড়ে গেছে। এই ঘটনায় তার প্রায় ১০ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দফতরের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ জানান, তারা ভোর ৪টা ২০ মিনিটে আগুনের খবর পান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দপ্তরের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে।
পরে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশন, নওহাটা স্টেশন, কাশিয়াডাঙ্গা উত্তর স্টেশনসহ মোট ১২টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। আর আগুন নিয়ন্ত্রণের এই পুরো অভিযান সার্বিকভাবে তত্ত্বাবধান করেন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী সদর দপ্তরের সহকারী পরিচালক রফিকুল ইসলাম। দুই ঘণ্টা চেষ্টা করার পর ভয়াবহ সেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পরে দুর্ঘটনাস্থলে এক ঘণ্টা ডাম্পিংয়ের কাজ চলে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স রাজশাহী বিভাগীয় উপ-পরিচালক (ডিডি) ওহিদুল ইসলাম জানান, তারা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই কার সেন্টারে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। পরে তা পুরো কার সেন্টার এবং পাশের ভবনের দোতলায় অবস্থিত তোফা কনভেনশন সেন্টারে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এতে প্রায় দুই কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে। এরপরও ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণের জন্য পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।