সর্বশেষ সংবাদ :

আইএমএফ ঋণ দেওয়ায় বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে: কাদের

সানশাইন ডেস্ক: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল-আইএমএফের ঋণ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবান্তর মন্তব্য করেছেন অভিযোগ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আইএমএফ বাংলাদেশকে ঋণ দেওয়ায় বিএনপির গাত্রদাহ শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব থেকে এই ঋণ নিয়ে রাজনীতি করছে। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রেখে দেশের মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকার আইএমএফ-এর কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করছে বলে কাদের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য আছে বলেই আইএমএফ ঋণ প্রদানে সম্মত হয়েছে।’
শুক্রবার এক বিবৃতিতে আইএমএফ-এর ঋণ নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ‘অবান্তর ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ মন্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। কাদের বলেন, ‘করোনা মহামারির অভিঘাতের মধ্যেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী এক চরম অর্থনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে যে অর্থনৈতিক সংকট প্রতীয়মান হচ্ছে, তা একটি বৈশ্বিক সংকট। এই সংকটের অভিঘাতে জর্জরিত হচ্ছে আমাদের দেশের অর্থনীতিও। কেননা, বাংলাদেশ বিচ্ছিন্ন কোনও দ্বীপ নয়। এই সংকট মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার মধ্য দিয়ে দেশের মানুষকে স্বস্তি দিতে সরকার সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সরকার আইএমএফ-এর কাছ থেকে ঋণ গ্রহণ করছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আইএমএফ-এর ঋণ নিয়ে অবান্তর মন্তব্য করেছে এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রশ্ন তুলেছে। বিএনপির রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব এমন তলানিতে ঠেকেছে যে তারা এখন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর ঋণ নিয়েও রাজনীতি করছে। কিছু দিন পূর্বে আইএমএফ যাতে ঋণ প্রদান না করে, সেজন্য তারা ষড়যন্ত্র করেছে এবং বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে মিথ্যা ও মনগড়া তথ্য উপস্থাপন করেছে। আবার আইএমএফ যখন ঋণ দিচ্ছে, তখন তারা বিভ্রান্তিকর মন্তব্য করছে। মির্জা ফখরুল কি ভুলে গেছেন—বিএনপির সময় জাতীয় অর্থনীতি পরিচালিতই হতো বৈদেশিক সহায়তা ও ঋণের ওপর ভিত্তি করে। ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বিএনপি গড়ে জাতীয় আয়ের ২৮ শতাংশ ঋণ নিয়ে দেশ পরিচালনা করেছে। তাদের সময় রিজার্ভ ছিল সাড়ে ৩ বিলিয়নেরও কম। তাদের সর্বশেষ বাজেট ছিল মাত্র ৬৯ হাজার ৭৪০ কোটি টাকার। অপরদিকে সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে একযুগেরও বেশি সময় ধরে ধারাবাহিক অর্থনৈতিক অগ্রগতির কারণে বৃহৎ বৃহৎ প্রকল্প বাস্তবায়নের পরও বৈদেশিক ঋণের নির্ভরতা বহুলাংশে কমেছে। রিজার্ভ ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৪৮ বিলিয়ন ডলার এবং জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮.২ শতাংশ ছুঁয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান বাজেট বিএনপির সর্বশেষ বাজেটের তুলনায় প্রায় ১০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ বিএনপির নেতারা আজ নির্লজ্জের মতো আইএমএফ-এর ঋণ নিয়ে কথা বলেন। রিজার্ভ নিয়ে কথা বলেন। প্রকৃতপক্ষে, বিএনপির নেতারা এই সংকটকে পুঁজি করে জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোর অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সংকটে আতঙ্কগ্রস্ত না হয়ে সচেতন ও উদ্যোগী হলেই তা মোকাবিলা সহজতর হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই সংকট মোকাবিলায় সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘চলমান বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে। বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য আছে বলেই আইএমএফ ঋণ প্রদানে সম্মত হয়েছে। যার মধ্য দিয়ে আরও একবার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে। অথচ বিএনপির সময় অর্থনৈতিক সক্ষমতা বলতে কিছুই ছিল না। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পরনির্ভরতার সেই সংকট থেকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উত্তরণ ঘটেছে। আইএমএফ-এর এই ঋণ জনগণের জন্য বোঝা না হয়ে সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হিসেবে বিবেচিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘চলমান বৈশ্বিক সংকটের ভয়াবহ অভিঘাত থেকে দেশের মানুষকে সুরক্ষা দিতে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দল ও দেশপ্রেমিক নাগরিকের দায়িত্বশীল আচরণ এবং কর্তব্যপরায়ণতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সেখানে বিএনপি এই সংকটকে পুঁজি করে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা চালাচ্ছে। দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে তারা সংকটকে আরও ঘনীভূত করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। দেশবিরোধী এবং দেশের মানুষের স্বার্থের পরিপন্থি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত বিএনপির এই হীন অপতৎপরতা রুখে দিতে সবাইকে সচেতন হতে হবে। আসুন, অনাকাঙ্ক্ষিত এই বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি। বঙ্গবন্ধুকন্যার আহ্বানে সাড়া দিয়ে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধিতে সক্রিয় অবদান নিশ্চিত করি।’


প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২২ | সময়: ৬:০১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ