সর্বশেষ সংবাদ :

আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে আশা বাঁচিয়ে রাখল অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস ডেস্ক: প্রথম ৯ বলে দুটি ছক্কা ও একটি চার- রান তাড়ায় আয়ারল্যান্ডের ইনিংসের শুরুতে গর্জন যতটা ছিল, বর্ষণ হলো না ততটা। এক পর্যায়ে ৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে পথ হারানোর পর লড়াই জমাতে পারল না আইরিশরা। অ্যারন ফিঞ্চের ফিফটির পর বোলারদের নৈপুণ্যে জিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ভালোমতোই টিকে রইল অস্ট্রেলিয়া।
সুপার টুয়েলভ পর্বের ম্যাচে সোমবার ব্রিজবেনে চ্যাম্পিয়নদের জয় ৪২ রানে। ১৭৯ রানের পুঁজি গড়ে প্রতিপক্ষকে ১৩৭ রানে গুটিয়ে দিয়েছে স্বাগতিকরা। আগের ম্যাচে মন্থর ব্যাটিংয়ের পর এবার ৪৪ বলে ৬৩ রানের দারুণ ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা ফিঞ্চ। চতুর্থ উইকেটে অধিনায়কের সঙ্গে ৭০ রানের জুটি গড়া মার্কাস স্টয়নিস ২৫ বলে করেন ৩৫। আয়ারল্যান্ডের হয়ে একাই লড়াই করেন লর্কান টাকার। এই ওপেনারের ৪৮ বলে অপরাজিত ৭১ রানের ইনিংস পরাজয়ের ব্যবধানই কমাতে পারে শুধু। এই হারে আইরিশদের সেমি-ফাইনালের আশা প্রায় শেষ হয়ে গেল।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে তৃতীয় ওভারেই ডেভিড ওয়ার্নারকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে আয়ারল্যান্ডকে প্রথম সাফল্য এনে দেন ব্যারি ম্যাককার্থি। ফিঞ্চ এরপর দলকে এগিয়ে নেন মিচেল মার্শের সঙ্গে জুটি বেঁধে। ফিওন হ্যান্ডের একই ওভারে ১০২ ও ৮৬ মিটার দীর্ঘ দুটি ছক্কা হাঁকান মার্শ। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এই ব্যাটসম্যানকে (২২ বলে ২৮) ফিরিয়ে ৫২ রানের এ জুটিও ভাঙেন ম্যাককার্থি। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল এরপর টিকতে পারেননি। স্টয়নিসের সঙ্গে ৩৬ বলে ৭০ রানের জুটির পথে ফিঞ্চ ফিফটি পূর্ণ করেন ৩৮ বলে।
দ্বাদশ ওভারে পাঁচটি ওয়াইড দিয়ে ১১ বলের ওভারে ২৬ রান দেন মার্ক অ্যাডায়ার। তাও ভালো, এই ওভারে ছক্কা হতে যাওয়া একটি বলে লং-অন বাউন্ডারিতে দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে চার রান বাঁচিয়ে দেন ম্যাককার্থি। সেই ম্যাককার্থির বলেই থামে ফিঞ্চের ৫ চার ও ৩ ছক্কায় গড়া ৬৩ রানের ইনিংস। আগের ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রান তাড়ায় তিনি ৩১ রানে অপরাজিত ছিলেন ৪২ বল খেলে।
ওই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে দ্রুততম ১৭ বলে ফিফটির রেকর্ড গড়া স্টয়নিস এ দিন ২৫ বলে ৩৫ রান করেন ৩ চার ও এক ছক্কায়। শেষ ওভারে টিম ডেভিডের দুটি ও ম্যাথু ওয়েডের একটি চারের সৌজন্যে আসে ১৭ রান। ম্যাককার্থি ৪ ওভারে ২৯ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। অ্যাডায়ার ৪ ওভারে দেন ৫৯ রান। এই সংস্করণে আয়ারল্যান্ডের হয়ে এক ইনিংসে তার চেয়ে বেশি রান দেওয়ার ঘটনা আছে কেবল একটি, ২০১৭ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬৯ রান দিয়েছিলেন ম্যাককার্থি।
রান তাড়ায় প্রথম ৯ বলে কোনো উইকেট না হারিয়ে আয়ারল্যান্ড তুলে ফেলে ১৭ রান। এরপর ১৩ বলের মধ্যে ৭ রানে তারা হারায় ৫ উইকেট! অ্যান্ডি বালবার্নিকে বোল্ড করে শুরুটা করেন প্যাট কামিন্স। গ্লেন ম্যাক্সওয়েল আক্রমণে এসেই জোড়া শিকার ধরে পল স্টার্লিং ও হ্যারি টেক্টরকে ফিরিয়ে। পরের ওভারে মিচেল স্টার্কও প্রথমবার আক্রমণে এসে দারুণ দুটি ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন কার্টিস ক্যাম্পার ও জর্জ ডকরেলকে।
একটা পর্যায়ে বিনা উইকেটে ১৮ থেকে আইরিশদের স্কোর হয়ে যায় ৫ উইকেটে ২৫! গ্যারেথ ডেলানির সঙ্গে এরপর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন টাকার। ১৪ রান করা ডেলানিকে ফিরিয়ে ৪৪ রানের জুটি ভাঙেন স্টয়নিস। সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মাঝে টাকার ফিফটি পূর্ণ করেন ৪০ বলে। শেষ দুই ওভারে দরকার যখন ৪৩ রান, জস লিটলের রান আউটে অলআউট হয়ে যায় আইরিশরা।
অস্ট্রেলিয়ার হয়ে কামিন্স, ম্যাক্সওয়েল, স্টার্ক ও একাদশে ফেরা লেগ স্পিনার অ্যাডাম জ্যাম্পা নেন ২টি করে উইকেট। চার ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে এক নম্বর গ্রুপে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এলো অস্ট্রেলিয়া। নেট রানরেটে যদিও বেশ পিছিয়ে আছে তারা এখনও। এক ম্যাচ কম খেলে তাদের সমান পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে নিউ জিল্যান্ড। তিন ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে তিনে ইংল্যান্ড। চার ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে আয়ারল্যান্ড চারে। সমান ২ পয়েন্ট নিয়ে পরের দুটি স্থানে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। দুই দলই খেলেছে তিনটি করে ম্যাচ। এই পর্বে অস্ট্রেলিয়ার শেষ ম্যাচ আগামী শুক্রবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে।


প্রকাশিত: নভেম্বর ১, ২০২২ | সময়: ৬:৩১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ