রাবিতে জনস্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সিম্পোজিয়াম

রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) জনস্বাস্থ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক এক সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. মুহাম্মদ কুদরাত-এ-খুদা একাডেমিক ভবনে এই সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করা হয়।
‘ব্রিংগিং টেকনোলজি অ্যান্ড পাবলিক হেলথ আনডার ওয়ান আমব্রেলা ইন বাংলাদেশ: ব্রেকিং ব্যারিয়ারস’ শীর্ষক এই সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করেন বিশ^বিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগ।
সিম্পোজিয়ামে প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক তানজিমা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন রাবি উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার এবং প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বিজ্ঞানী এবং পরিচালক ড. সেঁজুতি সাহা।
সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, মানুষ পরাজিত হওয়ার জন্য জন্ম নেয়নি। প্রতিনিয়ত বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যাওয়াই মানুষের ধর্ম। বিজ্ঞানের মূল কাজ হলো হৃদয়ের অন্ধকার দূরীভূত করা। এখানে মূখ্য ভুমিকা হলো বিজ্ঞানীদের। বাংলাদেশের হেলথ সেক্টর নিয়ে অনেক কথা আছে। আমরা আমাদের নিজেদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করিনা। জিডিপির ৫ শতাংশ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দেওয়া হলেও, আমরা সেটার যথাযথ ব্যবহার করতে পারিনা। এটা আমাদের জাতীয় একটা সমস্যা বলা যায়।
তিনি আরও বলেন, আশার কথা হলো ২০০৫ থেকে ২০১৭ সালে আমাদের আয়ুষ্কাল ছিল ৬৩ বছর, এখন সেটা ৭৩ বছর। ২০০৫ সালে শিশু মৃত্যু হার ছিলো হাজারে ৫২ জন এখন সেটা ২৪ জন। ২০০৫ সালে মাতৃমৃত্যু হার ছিলো প্রতি লাখে ৩৪৮ জন, এখন সেটা কমে প্রায় ১৪৮। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টার কারণে এই অর্জন সম্ভবপর হয়েছে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ড. সেঁজুতি সাহা বলেন, প্রযুক্তির সাথে স্বাস্থ্যের সম্পর্ক অনেক। প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, গবেষণার ক্ষেত্র তত প্রসারিত হচ্ছে, নিত্য নতুন আবিস্কার সম্ভব হচ্ছে। ফলে বিভিন্ন রোগ সনাক্ত করে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরেই আমরা বাংলাদেশের শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করছি, টাইফয়েড, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগ সনাক্তকরণ ও প্রযুক্তির মাধ্যমে কার্যকরী সমাধান দেয়ার চেষ্টা করছি। তবে এসব কাজ করতে গিয়ে অনেক প্রতিবন্ধকতারও মুখোমুখি হতে হয়েছে। বিশেষ করে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের সরবরাহ কম ও দাম বেশি, গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামোর অপ্রতুলতা ইত্যাদি। তবে এসব প্রতিবন্ধকতা ছাপিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। আমরা দেশে তরুণদের প্রকৃত বিজ্ঞান চিন্তায় অনুপ্রেরণা দিতে দিতে চাই, যাতে একঝাঁক তরুণ বিজ্ঞানী দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে।
তিনি আরো বলেন, যেখানে বেশি প্রযুক্তি আছে, সেখানে রোগী কম। আর যেখানে বেশি রোগী আছে, সেখানে প্রযুক্তি কম। বর্তমানে এই অবস্থার কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে। কিন্ত এই যে গ্যাপ, এই গ্যাপটা আমাদের দূর করতে হবে। এসময় তিনি বাংলাদেশি শিশুদের চিকনগুনিয়া ও মেনিনজাইটিস রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা ও সম্ভাবনা এবং এক্ষেত্রে নিজের সাফল্য নিয়ে আলোচনা করেন।
বিভাগের শিক্ষার্থী মিকাইল হোসেন এবং আশফিয়া তাসনিম তন্নি’র যৌথ সঞ্চালনায় সিম্পোজিয়ামে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন রাবি উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক শাহেদ জামান।


প্রকাশিত: অক্টোবর ১৭, ২০২২ | সময়: ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ