সর্বশেষ সংবাদ :

তানোরে কবর থেকে লাশ উত্তোলন মামলার বাদি এখন আসামী

স্টাফ রিপোর্টার, তানোর: রাজশাহীর তানোরে আছর আলী মন্ডল (৫৮) নামে এক ব্যক্তির লাশ দীর্ঘ ৭ মাস পর কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। সোমবার তানোর উপজেলার সরনজাই ইউনিয়নের সরকারপাড়া কবরস্থানে তানোর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্বীকৃতি প্রামাণিকের উপস্থিতিতে কবর থেকে লাশ উত্তোলনের কাজ শেষ হয়। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, তানোর থানার তদন্ত (ওসি) উছমান গণি, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জসিম উদ্দীন।
মৃত আছর আলীর মা সুফিয়া বেওয়া বাদি হয়ে তার ছেলের লাশ ময়না তদন্ত করে সঠিক বিচারের আশাই রাজশাহী অতিরিক্ত চিফ জুটিসিয়াল আদালতে মামলা করেন। মামলায় আসামী করা হয় মৃত আছর আলীর স্ত্রী ফেরদৌস বেগম, ছেলে ফিরোজ আলীসহ পাঁচজনকে।
আদালতে মামলা তানোর থানায় গত ২ জুলাই রেকর্ড করা হয়। সেই মামলা আদালতের নির্দেশে লাশ উত্তোলন করা হয়।
জানা গেছে, গত ১ লা ফেব্রুয়ারি রাতে সড়ক দূর্ঘটনায় রহস্যজনক ভাবে আছর মন্ডল (৫৮) তানোর পৌর এলাতার ধানতৈড় গ্রামের মোড় মরে পড়ে থাকে। পুলিশের ধারণা রাতে কোন যানবাহন তাকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
নিতহ ব্যাক্তির ছেলে ফিরোজ আলী সেই সময়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, পহেলা ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) বিকালে বাড়ি থেকে আমার বাবা চা খাবার জন্য বের হয়ে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। সন্ধ্যার পর আমরা বিভিন্ন স্থানে আমার বাবাবে খুঁজেছি। আমার বাবা প্রতি রাতে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে থাকতো। রাত সাড়ে ১০টার দিকে মোবাইল ফোনে মাধ্যমে জানাতে পারি আমার বাবা ধানতৈড় মোড়ের রাস্তায় মরে পড়ে আছে। আমি ও পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে রাতেই তাকে তানোর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাই। কর্তব্যরত ডাক্তার বলেন কোন যানবাহন আঘাতে তার মৃত্যু হয়েছে। লাশ দাফনের অনুমতি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে ওসির কাছে লিখিত ভাবে আবেদন করি। পুলিশ লাশ দাফনের অনুমতি দিয়েছেন। তবে থানা আমি বাদি হয়ে সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা করি।
গতকাল সকালে তানোর পৌর এলাকার রায়তন বাজে আকচা (ফকিরপাড়া) গ্রামের মৃত আছর আলী মন্ডলের মা মামলার বাদি সুফিয়া বেওয়া বলেন, আমার ছেলে আমার কলিজার টুকরা আছর আলী সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যায়নি তাকে মেরে ফেলে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছিল। আমার ছেলের সঙ্গে আমার ছেলের বউয়ের সব সময় ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। আমার ছেলের পুত্র ফিরোজও বদমাইস। তারা সড়োজন্ত করে আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই। মামলার আসামীরা সবাই গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জসীম উদ্দীন বলেন, মামলার গোপনিয়তা রক্ষার্থে এখন কিছু বলা যাবে না। তবে আমরা খুব গভীর ভাবে মামলা তদন্তের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।
তানোর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, আদালতের নির্দেশে থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। লাশ উত্তোলন করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত চলছে। ময়না তদন্তের রির্পোট এলে সব কিছু বোঝা যাবে।


প্রকাশিত: আগস্ট ১১, ২০২২ | সময়: ৬:০১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ