হারিকেন-পাখা হাতে ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ

সানশাইন ডেস্ক: বিদ্যুতের লোড শেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে বিএনপির এই কর্মসূচি।
বিদ্যুতের লোড শেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করে বিএনপি। বিদ্যুতের লোড শেডিংয়ের প্রতিবাদে হাতপাখা-হারিকেন নিয়ে ঢাকায় সমাবেশ করেছে বিএনপি।
রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই সমাবেশে ঢাকার কেরানীগঞ্জ, ধামরাই, সাভার, নবাবাগঞ্জ ও দোহার থানা থেকে নেতা-কর্মীরা যোগ দিয়েছিলেন। তারা সরকারবিরোধী নানা স্লোগানে লোড শেডিংয়ের প্রতিবাদ জানান। বিদ্যুতের লোড শেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভের অংশ হিসেবে ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এই সমাবেশ হয়।
সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “আজকে ঢাকায় যারা আছেন, কিছুটা ভালো আছেন। কিন্তু গ্রামের মানুষ আরও কষ্টে আছে। সারা দিনে গ্রামে ৪/৫ ঘণ্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। এই গরমের দিনে কী কষ্টে আছে মানুষ বুঝুন।” তিনি বলেন, সরকার বিদ্যুতের অভাব দেখিয়ে, জ্বালানি তেলের অভাব দেখিয়ে সার কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। কোথায় পাবে মানুষ সার? কীভাবে দেশের কৃষির উন্নয়ন হবে, আমার কোটি কোটি কৃষক বাঁচবে কীভাবে?
“রেকর্ড বলছে যে, বাংলাদেশে ৮ বছরের যে বাজেট তার চেয়ে বেশি টাকা ব্যয় করা হয়েছে বিদ্যুৎ খাতের উন্নয়নের জন্য। বলা হয়েছিল যে, আমাদের যা বিদ্যুৎ প্রয়োজন, তার চেয়ে ডাবল আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা হয়ে গেছে, আমরা বাইরে বিদ্যুৎ রপ্তানি করব। অথচ আমরা দেখলাম রপ্তানি না, আরও বিদ্যুৎ আমদানির জন্য অনেক বেশি টাকায় আদানি গ্রুপের (ভারত) সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে।”
কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্ল্যান্টকে ‘আজব’ অভিহিত করে নজরুল বলেন, ‘‘এই কুইক রেন্টালের নামে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকা জনগণের পকেট কেটে কিছু ব্যক্তিকে দেওয়া হচ্ছে। “আমাদের উৎপাদন ক্ষমতা এতই যদি বেশি, তাহলে কেন এত বেশি টাকা দিয়ে আামরা কুইক রেন্টাল বিদ্যুতের চুক্তি বার বার বাড়াচ্ছি? এমন কি আইন করা হয়েছে সংসদে যে এসব দুর্নীতি-অনাচারের বিরুদ্ধে কোনো আদালতে আপনি মামলা করতে পারবেন না।”
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রোববার বিএনপির বিক্ষোভে বক্তব্য রাখেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। সরকার আবারও ক্ষমতায় আসতে আগামীতে ইভিএমে ‘ভোট লুটপাট’ করার ‘চক্রান্ত’ করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতা নজরুল। তিনি বলেন, “তারা ক্ষমতায় থেকে ভোট চুরি করেছে, ডাকাতি করেছে। এবার তারা ইভিএমের নামে লুট করতে চায়।
“আমরা স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, কিছুতে দেয়া হবে না, কোনো মতেই নয়। এদেশটা আমরা লিজ দেই নাই কাউকে। এদেশ আমাদের, এ দেশকে আমরা বাঁচাব ইনশাল্লাহ।” ঋণ খেলাপিদের সুবিধা দেওয়ার সমালোচনা করে নজরুল বলেন, “তাদেরকে এই সুবিধা দেয়ার অর্থটা কী? এটা জনগণ মানতে রাজি নয়।” যারা ‘অন্যায়ভাবে’ অর্থ উপার্জন করছে, বিদেশে ‘পাচার’ করছে, দেশটাকে ‘ফোকলা’ সরকার তাদের করে দিচ্ছে সরকার তাদের পক্ষে বলেও অভিযোগ নজরুলের।
বিএনপিকে জনগণের ‘পক্ষের’ দল দাবি করে বিএনপি বলেন, “জনগণের যে আজকে কষ্ট, আজকে তাদের যে দুর্গতি, তাদের যে সঙ্কট, তাদের পাশে থেকে তাদের সাথে নিয়ে মোকাবিলার জন্য এগিয়ে যেতে হবে।” বাংলাদেশকে বসবাসযোগ্য এবং দুর্নীতি মুক্ত তরতে ‘ফাঁকা বেলুনের’ মত নয় টেকসই উন্নয়নে এগিয়ে আসতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান নজরুল। আর এ কাজে “গণবিরোধী অনির্বাচিত” সরকারের পতন ঘটিয়ে ‘নির্বাচিত’ সরকার প্রতিষ্ঠার তাগিদ দেন।
ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি দেওয়ান সালাউদ্দিন বাবুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাকের পরিচালনায় সমাবেশে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, জেলার নেতা নাজিম উদ্দিন মাস্টার, মোজাদ্দেদ আলী বাবুও বক্তব্য রাখেন।


প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২২ | সময়: ৫:৩৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ