এসডব্লিউআইপি পরির্দশনে বিএমডিএ’র চেয়ারম্যান

স্টাফ রিপোর্টার: বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ণ কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‘পুকুর পুনঃখনন ও ভূ-উপরিস্থ পানি উন্নয়নের মাধ্যম ক্ষুদ্র সেচ ব্যবহার (এসডব্লিউআইপি) পরির্দশন করেছেন বিএমডিএ এর চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য বেগম আখতার জাহান। বুধবার এই প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী পবা উপজেলার কসবা মৌজায় অবস্থিত খাস পুকুরের পুনঃখনন কাজ পরিদর্শন করেন তিনি।
এসময় (বিএমডিএ) এর চেয়ারম্যান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সেভাবেই বাংলাদেশ কৃষি খাতকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে বিশ্ব দরবারে। তার একক প্রচেষ্টায় আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ দেশে পরিণত হয়েছে। এমন কি খাদ্য উদ্বৃত্তে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ’।
তিনি বলেন, ‘বরেন্দ্র অঞ্চলে পানির সংকট নিরসনের জন্য পুকুর পুনঃখনন যে প্রকল্পটি গ্রহণ করেছে তা যুগ উপযোগী এবং বাস্তবমুখী একটি প্রকল্প। এ পুকুর পণঃ খননের ফলে মানুষ এখন জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহার করতে আগ্রহ বাড়ছে এতে বরেন্দ্র অঞ্চলের পানির যে সংকট তা অনেকাংশে লাঘব হবে। এই পানি ব্যবহার করে স্বল্প সেচের মাধ্যমে যেসকল ফসল উৎপাদন করা যায় মানুষ তা সহজে পানি ব্যবহার করতে পারবেন।
এছাড়া পুকুর খননের ফলে পুকুরের চারপাশে বিভিন্ন ধরনের প্রজাতির ফলদ, বনজ ও ওষুধ গাছ রোপন করা হয়েছে যা আমাদের অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণে অনেক সাহায্য করবে। পুকুর পুনঃ খননের বরেন্দ্র অঞ্চলের সাধারণ মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশাব্যক্ত করেন এবং প্রকল্পের সর্বাঙ্গীন সাফল্য কামনা করেন তিনি।
এময় উপস্থিত ছিলেন, বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী আব্দুর রশীদ, প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শরীফুল হক, বিএমডিএর সচিব প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন, পবা জোনের সহকারী প্রকৌশলী কামরুল আলম। প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী শরীফুল হক জানান, প্রকল্প এলাকাগুলো হলো- রাজশাহী, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও বগুড়া জেলা। এর মধ্যে ৪৩টি উপজেলা রয়েছে। এই প্রকল্পে পুনঃখননের জন্য মোট ৭১৫টি খাস পুকুর আছে। তন্মম্যে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ৪৫০টি পুকুর পুনঃখনন করা হয়েছে। (বিএমডিএ) এর চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য বেগম আখতার জাহান প্রকল্পের কার্যক্রম পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এসময় উপকারভোগী কৃষক মজিদ মিয়া জানান, পুকুরগুলো দীর্ঘদিন খনন না করার কারণে পুকুরে পানি থাকতো না। এতে আশেপাশের জমি গুলো সঠিক সময়ে সেচ দিতে পারতাম না এর ফলে স্বল্প সেচের ফসল গুলো করতে অনেক ব্যয় হতো। কিন্তু পুকুর খননের ফলে এখন আমরা এই পানি দিয়ে স্বল্প সেচের ফসল করতে পারব এবং ব্যয় কম হবে যার ফলে অধিক মুনাফা পাবো আমরা।
উপকারভোগী আরেকজনকে কৃষাণী রানী বেগম বলেন, পুকুরে পানি না থাকার জন্য আমাদের অনেক সমস্যা হতো আমাদের গোসলের পানি, রান্নার পানি, হাঁস মুরগি পালন করতে পারতাম না। এই পুকুরটা খনন হওয়ার ফলে এখন আমরা সব কাজ এখান থেকেই পানি নিয়ে করতে পারব। যার ফলে আমাদেরকে কষ্ট করে আর দূর থেকে পানি নিয়ে আসতে হবে না। পুকুরটা খনন করাতে আমাদের অনেকেই উপকার হয়েছে। এছাড়া বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা নিরসন করে কৃষি কাজে সচল অবস্থার সৃষ্টিএবং শুকনো মৌসুমে পানির অভাবে পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধ সহ কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পুকুরের পুনঃখনন গুরুত্ব পূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জানা গেছে- ৭১৫টি খাস পুকুর, ১০টি দিঘী, ৮৫টি সোলার শক্তি চালিত এলএলপি, বৃক্ষরোপন ১ দশমিক ৫ লাখ এছাড়া ভূ-গর্ভস্থ সেচনালা নির্মাণ ৮০ কিলোমিটার। এছাড়া ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে কাজ সম্পন্ন হয়েছে- ৪৫০টি পুকুর, ৬টি দিঘী, ৫০টি সোলার শক্তি চালিত এলএলপি, বৃক্ষরোপন দশমিক ৭৫ লাখ, এছাড়া ভূ-গর্ভস্থ সেচনালা নির্মাণ ৫০ কিলোমিটার। অন্যদিকে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ২০০টি পুকুর, ৩টি দিঘী, ২৫টি সোলার শক্তি চালিত এলএলপি, বৃক্ষরোপন ৩৭ হাজার ৫০০ টি। (ফলজ ও বনজ)।


প্রকাশিত: মে ২৬, ২০২২ | সময়: ৩:১৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ