১২ বছর শিকলে বন্দী সাইফুল

বড়াইগ্রাম প্রতিনিধি: নাটোরের বড়াইগ্রামে ১২ বছর ধরে শিকলে বন্দী জীবন যাপন এক মানসিক প্রতিবন্ধী। মস্তিস্কে সমস্যা দেখা দেওয়ার পর থেকে তার এই জীভন শুরু হয়েছে। পরিবার আশাবাদি চিকিৎষা করালে এখন ভাল হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
তার নাম সাইফুল ইসলাম (৪০)। তিনি উপজেলার বনপাড়া পৌরসভার কালিকাপুর বুজুর আলী মোড় এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে।
প্রতিবেশি স্কুল শিক্ষক আলফুর রহমান বলেন, ছোটবেলা থেকে সাইফুল জমায় রিক্সা চালাতো। ১২ বছর আগে তার মস্তিস্কে সমস্যা দেখা দেয়। অর্থাভাবে তখন তার উপযুক্ত চিকিৎসা করাতে পারেনি পরিবার। খোলা জায়গাতেই মলমুত্র ত্যাগ করা শুরু করে। সেই থেকে বাড়ির পাশে খোলা জায়গায় পলিথিনের ছাউনি ও চটের বেড়া দিয়ে একটি তাঁবু তৈরি করে দিয়েছে।
হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে ছাউনি সংলগ্ন সুপারির গাছের সাথে শিকল বেঁধে তা পায়ে পরিয়ে রাখে। প্রকৃতির ডাকের সাড়া পেলে শিকল খুলে দেওয়া হয়।
সাইফুলের মা হেলেজান বেগম বলেন, বাবার ভিটার ২ শতাংশ জমিতে কোন রকম ঘর তুলে পাঁচ সদস্য নিয়ে বসবাস সাইফুল ইসলামের। প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়ে চলে সংসারের খরচ। সাইফুল অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই আমি ও তার স্ত্রী লোকের বাড়িতে ঝি এর কাজ করি।
প্রতিবেশী স্কুল শিক্ষক পরিতোষ কবিরাজ বলেন, সাইফুলের দুটি ছেলে মেয়েই মেধাবী। উভয়েই মাধ্যমিকে পড়াশোনা করে। টাকার অভাবে তাদের লেখাপড়া ঠিক মতো করতে পারে না। তবে লেখাপড়ায় বেশ আগ্রহী।
বনপাড়া পৌর মেয়র অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, যদি তাদের পরিবার থেকে আবেদন করে তাহলে তার জন্য একটি টয়লেট ও ছেলে মেয়ের পড়াশোনার বিষয়ে আমার সামর্থ অনুযায়ী সহযোগীতা করবো।
সাইফুলের স্ত্রী মিনা বেগম বলেন, আমি এখনও আশাবাদী উপযুক্ত চিকিৎসা করা গেলে সাইফুল সুস্থ হয়ে যাবে। তাই তারা সাইফুলের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করণের জন্য সমাজের বিত্তবান ও হিতৈষী ব্যক্তিদের প্রতি সদয় দৃষ্টি কামনা করেছেন।
ইউএনও মারিয়াম খাতুন বলেন, তদন্ত সাপেক্ষে আমার যা সামর্থ সেটুক আমি দেখবো।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২২ | সময়: ৪:০১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ