বিপিএলে ফিরছে দর্শক, তবে বিক্রি হবে না টিকেট

স্পোর্টস ডেস্ক: সরকারের অনুমতি নিয়ে ক্রিকেট মাঠে দর্শক ফেরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিসিবি। তবে এখনই সবার জন্য খুলছে না মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দুয়ার। বিসিবির অংশীদার ও বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজি সংশ্লিষ্টরাই কেবল সুযোগ পাচ্ছেন টুর্নামেন্টের শেষ চারটি ম্যাচ মাঠে বসে দেখার।
গত বছরের শেষ দিকে পাকিস্তানের সফর দিয়ে মহামারীকালে বাংলাদেশের ক্রিকেট মাঠে ফেরে দর্শক। তবে ওমিক্রন ধরনের প্রাদুর্ভাবে এবার ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে বিপিএলের প্রাথমিক পর্ব হয় দর্শকশূন্য মাঠে। পরিস্থিতির উন্নতির মধ্েয আবার দর্শক মাঠে ফেরাতে সরকারের অনুমতি চায় বিসিবি। রোববার মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মলেন বিসিবির গণমাধ্যম ও যোগাযোগ কমিটির প্রধান তানভির আহমেদ টিটো জানান, অনুমতি তারা পেয়েছেন।
“তিন থেকে চার হাজার দর্শক মাঠে খেলা দেখতে আসতে পারবে। তবে এখানে যেন বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি না হয়, সেজন্য টিকেট সেল করতে হচ্ছে না, সেলিংয়ে যাচ্ছি না।” “যে ফ্রাঞ্চাইজিগুলি আছে, যারা অংশ নিয়েছে বিপিএলে, তাদের সঙ্গে এখানে যারা যারা সম্পৃক্ত, তাদের মাধ্যমে আমরা টিকেটগুলো দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেব। যেন তিন থেকে চার হাজার দর্শক মাঠে ছড়িয়ে বসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে খেলা দেখতে পারে।”
বিপিএলের প্রাথমিক পর্বের টিকেট নিয়ে কোনো আসরেই তেমন মাতামাতি হয় না। তবে শেষ চার ম্যাচ, এলিমিনেটর, দুই কোয়ালিফায়ার ও ফাইনালের টিকেটের সবসময়ই তুমুল চাহিদা থাকে। মহামারীকালেও এর ব্যতিক্রম হওয়ার কথা নয়, সেটা মানছেন তানভির।
“সিদ্ধান্তটা এভাবে হয়েছে যেহেতু আমাদের কোভিড প্রটোকলটা মানতে হচ্ছে। কোভিডের জন্য সীমিত দর্শকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আমরা যদি বাইরে টিকেট বিক্রি করতে চাই, তাহলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাহলে কোভিড প্রটোকল মানাটা মুশকিল হয়ে যাবে। যে কারণে এই সিদ্ধান্তটা নেয়া হয়েছে যে, টিকিট ওভাবে বিক্রি না করে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের মাধ্যমে বিক্রি করছি।”
বিসিবি যেখানে বিশৃঙ্খলার শঙ্কায় টিকেট বিক্রি করছে না সেখানে ফ্র্যাঞ্চাইজি কীভাবে পারবে? এই প্রশ্নে তানভির যে ব্যাখ্যা দিলেন তাতে পরিষ্কার, সাধারণ দর্শকদের জন্য আসলে কোনো টিকেট থাকছে না। “ফ্র্যাঞ্চাইজিদের অপশন থাকবে বিসিবি থেকে টিকেট কিনে নিয়ে যাওয়ার। তাদের যে সমর্থক আছে, সেই হিসেবে টিকেটগুলো তারা আমাদের কাছ থেকে নিয়ে যাবে। একটা ফ্র্যাঞ্চাইজি জন্য কতগুলো টিকেট লাগবে, সেটা আসলে তারা ঠিক করবে। তারা তাদের চাহিদা জানাবে, পরে সেই অনুযায়ী তাদেরকে দেয়া হবে। তাদের সমর্থনে যেসব দর্শক আছে তাদের হয়তো সেভাবে টিকেট ‘প্রোভাইড’ করবে।”
“অবশ্যই সেখানে আমাদের যে স্বাস্থ্যবিধির ব্যাপারগুলো আছে। সরকারের যে নির্দেশনা আছে, সেগুলো মেনে এখানে আসতে হবে। মাস্ক অবশ্যই পরতে হবে, দুটো ভ্যাকসিন নেওয়ার সার্টিফিকেট যাদের আছে, সেগুলো নিয়ে খেলা দেখতে আসতে হবে, কালকের ম্যাচ থেকে।” ফ্র্যাঞ্চাইজি সূত্রে জানা গেছে, প্রতিটি ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য তিনশ করে টিকেট বরাদ্দ রয়েছে। এগুলোর দাম পাঁচশ ও এক হাজার টাকা করে। এসব টিকেট তারা বাইরে বিক্রি করবেন না। প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ও তাদের স্বজনদের মধ্েয এগুলো বণ্টন করে দেওয়া হবে।
সাধারণ দর্শক টিকেট পেতে পারেন আফগানিস্তান সিরিজ থেকে। বিপিএলের পরই অনুষ্ঠেয় সেই ম্যাচগুলোতে আরও বেশি দর্শক রাখা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তানভির। তিনি নিশ্চিত করেছেন সেই সিরিজে থাকবে ডিআরএস (ডিসিশান রিভিউ সিস্টেম)। তবে বিপিএলের শেষ পর্যায়েও এই প্রযুক্তি রাখতে পারছে না বিসিবি, থেকে যাচ্ছে ‘এডিআরএস।’
“ইকুইপমেন্টগুলো চলে এসেছে। ডিআরএস পরিচালনার জন্য যে ইকুইপমেন্ট দরকার সেগুলো এরই মধ্েয বাংলাদেশে চলে এসেছে। কিন্তু আমাদের সমস্যা হচ্ছে সেগুলো পরিচালনা যারা করবেন তারা এখনও এসে পৌঁছাননি।” “তারা (এখন) আসতে পারছে না, তবে আমরা আশা করেছিলাম বিপিএলের এই রাউন্ড থেকে হয়তো পাব। সেটা মনে হয় হচ্ছে না। তবে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ডিআরএস থাকবে এটা নিশ্চিত করা হয়েছে। বিপিএলে মনে হয় আর ডিআরএস রাখা সম্ভব হচ্ছে না।”


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২ | সময়: ৬:৩৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ