সর্বশেষ সংবাদ :

রাজশাহীতে বর্ণিল আয়োজনের প্রস্তুতি

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহীতে বর্ণিল আয়োজনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া কালচারাল মিট’। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে চারদিন ব্যাপী এ কালচারাল মিট অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার সম্পর্কের বন্ধন আরও দৃঢ হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মুজিব শতবর্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রীর ৫০ বছর পূর্তিতে ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া কালচারাল মিট’। এ উপলক্ষে সোমবার রাজশাহী নগর ভবনের গ্রিনপ্লাজায় অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রস্তুতি কমিটির সভা।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে অনুষ্ঠানের রূপরেখা উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি। সভায় বক্তারা গুরুত্বপূর্ণ মতামত ও প্রস্তাব ব্যক্ত করে ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া কালচারাল মিট’ এর সফলতা কামনা করেন।
খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহযোদ্ধা জাতীয় চার নেতার একজন শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের স্মৃতিবিজড়িত রাজশাহীতে বাংলাদেশ-ভারত কালচারাল মিট অনুষ্ঠান হতে যাচ্ছে। এ জন্য তিন রাসিক মেয়রের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, মানুষ সামাজিক জীব। আমরা যদি প্রতিবেশির সঙ্গে সামাজিক সম্পর্ক রাখতে না পারি তাহলে কোন দিনই আমরা কোন উন্নতি করতে পারি না। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে আমাদের এককোটি মানুষকে খাইয়ে মুক্তিযুদ্ধে সহযোগিতা করে ভারত আমাদের অনেক এগিয়ে দিয়েছে। এটা আমাদের ভুলার না। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পরে এ কালচারটা শেষ হয়ে যাচ্ছিল। তবে জননেত্রী শেখ হাসিনা সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে এই সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং ভাষা আন্দোলনের মাসেই ভারত বাংলাদেশ কালচারাল মিট অনুষ্ঠান যুগপযোগী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ। তিনি বলেন এই কালচার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের বন্ধন আরো দৃঢ় হবে।
কমিটির আহ্বায়ক ও রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বাংলাদেশ ভারত মৈত্রীর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দুই দেশের মৈত্রী আরো চিরঞ্জীব করে রাখবার জন্যে আমাদের এই আয়োজন। এই আয়োজনটি উভয় দেশের মধ্যে বেশ কয়েকবার হয়েছে। এবার সৌভাগ্যবশত রাজশাহীতে হতে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, রাজশাহীকে বর্ণিলভাবে সাজানো হবে। ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে প্রায় ৬০ জনের প্রতিনিধি দল আসবেন, তার মধ্যে চারজন প্রাদৈশিক মন্ত্রী থাকবেন, সাংস্কৃতিক টিম ও মিডিয়া প্রতিনিধি থাকবেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর সিএন্ডবি মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের মাধ্যমে উৎসব শুরু হবে। বিকেলে ঐতিহাসিক রাজশাহী কলেজ মাঠে বিশাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। সেখানে অনুষ্ঠানটি তিনটি পর্বে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমে আমন্ত্রিত গুরুত্বপূর্ণ অতিথিবৃন্দ দুই দেশের সম্প্রীতির ব্যাপারে বক্তব্য রাখবেন। সেখানে ব্যবসায়িক ব্যাপারেও আলোকপাত করা হবে। এরপর বাংলাদেশ ও ভারতের তারকা শিল্পীদের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় জানানো হয়, ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া কালচারাল মিট’ এর কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারত থেকে মন্ত্রীবর্গ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ ও অন্যান্য অতিথিদের আগমন। ২৬ ফেব্রুয়ারি সিন্ডবি মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ। এদিন রাসিক মেয়রের পক্ষ থেকে ভারতীয় অতিথিদের নাগরিক সংবর্ধনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। বিকেলে উভয় দেশের অংশগ্রহণে রাজশাহী কলেজ মাঠে মনোজ্ঞ সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। ২৭ ফেব্রুয়ারি বরেন্দ্র জাদুঘর, রাজশাহী বিশ^বিদ্যালয়, পুঠিয়া রাজবাড়ি, বাঘা মাসজিদ, নাটোর রাজবাড়ি, উত্তরা গণভবন ইত্যাদি স্থাপন পরিদর্শন। ২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ত্যাগ করবেন ভারতীয় অতিথিবৃন্দ।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন ‘বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া কালচারাল মিট, রাজশাহী প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব প্রফেসর রুহুল আমিন প্রামাণিক। সঞ্চালনা করেন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকার। ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি, যুগ্ম আহ্বায়ক ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এমপি, ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশের সমন্বয়কারী এএসএম শামসুল আরেফিন।
সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপিকা জিনাতুন নেসা তালুকদার, পাবনা-১ আসনের সংসদ সদস্য শামসুল হক টুকু, বগুড়া-১ আসনের সংসদ সদস্য শাহাদারা মান্নান, রাজশাহী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, নওগাঁ-২ আসনের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকার, পাবনা-৩ আসনের সংসদ সদস্য মকবুল হোসেন, নাটোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস, সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য আব্দুল আজিজ প্রমুখ।
এছাড়া রাজশাহী-৩ আসনের এমপি আয়েন উদ্দিন, রাজশাহী-৫ আসনের এমপি ডা. মনসুর রহমান, বগুড়া-৩ আসনের এমপি নূরুল ইসলাম তালুকদার, বগুড়া-৭ আসনের এমপি রেজাউল করিম বাবলু, নওগাঁ-৩ আসনের এমপি ছলিম উদ্দিন তরফদার, নওগাঁ-৫ আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন জলিল (জন), নওগাঁ-৬ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ার হোসেন হেলাল, নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম (বকুল), পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির, পাবনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য নূরুজ্জামান বিশ^াস, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি বেগম ফেরদৌসী ইসলাম ও বেগম রত্না আহমেদ, জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আশরাফুল হক, নওগাঁ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড. এ. কে. এম. ফজলে রাব্বি, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর রফিকুল ইসলাম সেখ, রাসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এবিএম শরীফ উদ্দিন, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল খালেক। সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, বিশিষ্ট নাগরিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজশাহী জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ, ১৪ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ, চিকিৎসক নেতৃবৃন্দ, আইনজীবীবৃন্দ, স্কুল ও কলেজের প্রধানগণ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। ছাড়াও এ অঞ্চলের বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২২ | সময়: ৬:০৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ