রাজশাহীতে ট্রাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে গৃহকর্মীকে হয়রানির অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার : রাজশাহী মহানগর পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের এক সার্জেন্টের বিরদ্ধে গৃহকর্মীকে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। বাড়িতে কাজ করতে না চাওয়ায় হয়রানির করেন সাজেদা খাতুন নামের এক গৃহকর্মী। তিনি নগরীর শিরোইল এলাকায় ভাড়া থাকেন। একসঙ্গে কয়েকটি বাড়িতে কাজ করে সংসার চলে তার।
হয়রানীর শিকার ওই গৃহকর্মী শুক্রবার নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে জানা গেছে, অভিযুক্ত সার্জেন্টের নাম মাহমুদ রানা। তিনি রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত। সম্প্রতি রানার স্ত্রী সুমি খাতুন সন্তান প্রসব করেন। গৃহকর্মী সাজেদা সার্জেন্ট রানার স্ত্রীর নানির বাড়িতেও বহুদিন যাবৎ কাজ করেন। তাই রানার নানিশ্বাশুড়ি তাকে নাতনির বাড়িতে কয়েকদিন কাজ করতে যাওয়ার অনুরোধ করেন।
সাজেদা জানান, একসঙ্গে কয়েকটি বাড়িতে কাজ করার কারণে কয়েকদিন যাওয়ার পর তিনি সার্জেন্টের বাড়িতে কাজ করার সময় করে উঠতে পারছিলেন না। গত মঙ্গলবার সাজেদা জানিয়ে দেন তিনি রানার বাড়িতে কাজে আসতে পারবেন না।
তখন সার্জেন্ট রানা তাকে হুমকি দিয়ে বলেন, কাজে না এলে তার নামে মিথ্যা মামলা করা হবে। তার বিরুদ্ধে বাড়ির স্বর্ণচুরির অভিযোগ করা হবে। সার্জেন্টের এ হুমকি আমলে না নিয়ে সাজেদা পরদিন থেকে কাজে যাওয়া বন্ধ করে দেন।
তবে হঠাৎ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সার্জেন্ট মাহমুদ রানা নগরীর শিরোইল বাস টার্মিনাল পুলিশ বক্স থেকে চারজন কনস্টেবলকে নিয়ে সাজেদার বাড়ি যান। সাজেদা তখন অন্য এক বাড়িতে কাজে গিয়েছিলেন। বাড়ি ফিরে তিনি জানতে পারেন, তাকে খুঁজতে বাড়িতে পুলিশ এসেছিল। সাদা পোশাকে আসা সার্জেন্ট মাহমুদ রানা আশপাশের লোকজনদের জানিয়ে গেছেন, সাজেদা নাকি তার বাড়ির গয়না ও টাকা চুরি করে এনেছেন।
গৃহকর্মী সাজেদা খাতুন আরও জানান, বাড়িতে পুলিশ যাওয়ায় শুক্রবার সকালে তিনি নিজেই বোয়ালিয়া থানায় যান। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা কিংবা অভিযোগ হয়েছে কিনা খোঁজ নেন। তখন জানতে পারেন, তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা কিংবা অভিযোগ নেই। সার্জেন্ট রানা তাকে জোরপূর্বক তুলে আনতে গিয়েছিলেন। ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চুরির মিথ্যা অপবাদ দেওয়ায় তিনি ওই সার্জেন্টের বিরুদ্ধে রাতে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারন চন্দ্র বর্মন এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে অভিযুক্ত সার্জেন্ট রানাকে একাধিকবার মোবাইলে ফোন করা হয়। তিনিও ফোন ধরেননি। তবে আরএমপির মুখপাত্র গোলাম রুহুল কুদ্দুস বলেন, তিনি বিষয়টি শুনেছেন। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরএমপির ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার অনির্বান চাকমা জানান, আরএমপির সদর দফতর থেকে তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারাও এ বিষয়ে তদন্ত করবেন। অভিযোগের সত্যতা মিললে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।