খালেদাকে বিদেশে পাঠানোর নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট

সানশাইন ডেস্ক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে হাই কোর্টে আবেদন করেছেন এক আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইউনুছ আলী আকন্দ সোমবার হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট আবেদনটি করেন।
বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের বেঞ্চে মঙ্গলবার তা উপস্থাপন করা হবে বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান এ আইনজীবী। রিট আবেদনে আইনসচিব, মন্ত্রী পরিষদসচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের মুখ্যসচিব, রাষ্ট্রপতির সচিবালয়ের সচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবকে বিবাদী করা হয়েছে।
ফৌজদারী কার্যবিধির ৪০১(১), সংবিধানের ১১, ৩২ ও ৩৯ অনুচ্ছেদ ও জাতিসংঘের সর্বজনীন ঘোষণার ৩, ৫, ১১ ও ১৩(২) অনুচ্ছেদের অধীনে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসার অনুমতি দিতে বিবাদীদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারির আবেদন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে অন্তর্র্বতী আদেশে খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে যেতে অনুমতি দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।
রিট আবেদনে বলা হয়েছে, মানবিক ও মৌলিক অধিকার প্রশ্নে ‘ডকট্রিন অব নেসিসিটি’ ও জাতিসংঘের ‘হিউম্যান চার্টার্ড’ এর অধীনে সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারা অনুযায়ী দণ্ডিত খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করতে পারে। একই সঙ্গে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১(১) ধারা অনুযায়ী গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে সরকার শর্ত সাপেক্ষে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পদক্ষেপ নিতে পারে।
৭৬ বছর বয়সী খালেদা জিয়া বার্ধক্যজনিত নানা সমস্যা নিয়ে গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা। দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ড নিয়ে খালেদা জিয়া এখন সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্ত। দেড় বছর আগে তার সাময়িক মুক্তির শর্তে বলা হয়েছিল, তাকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।
এর মধ্যে বিদেশে নিয়ে চিকিৎসা করানোর আবেদন করা হয় খালেদা জিয়ার পরিবার-স্বজনদের পক্ষ থেকে। একই দাবিতে বিভিন্ন কর্মসূচিতে বিএনপি ‘কঠোর আন্দোলনের’ হুমকি দিলেও সরকার তাতে সায় দেয়নি। গত ২৩ নভেম্বর বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের কাছে স্মারকলিপি দেন বিএনপিপন্থি ১৫ জন আইনজীবী।
এ বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার সময় চেয়ে আইনমনন্ত্রী তখন জানান, স্মারকলিপিটি অবশ্যই পর্যালোচনা করা হবে। তবে সিদ্ধান্ত ও মতামতের বিষয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে। এর মধ্যে গত ১২ ডিসেম্বর সাংবাদিকদের প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেছিলেন, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানতে ‘অপেক্ষা’ করতে। এছাড়া গত ৫ ডিসেম্বর আইনি উপায় খোঁজার কথা বলেন তিনি। এর চারদিন আগে জানিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া সংক্রান্ত আবেদন বিবেচনা করতে ‘নজির’ খুঁজছেন। উপমহাদেশে কোনো আদালতে এমন ‘নজির আছে কি না’ তা দেখে ‘কিছুদিনের মধ্যেই’ সিদ্ধান্ত জানাবেন।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ২১, ২০২১ | সময়: ৭:১০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ