সর্বশেষ সংবাদ :

গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে নেই কোনো আশার আলো

সানশাইন ডেস্ক: হামাসের দাবিদাওয়ার কারণে ‘কানা গলিতে আটকে গেছে’ গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা। যে কারণে ইসরায়েল নিজেদের প্রতিনিধিদের দোহা থেকে দেশে ডেকে পাঠিয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মোসাদ প্রধানের ঘনিষ্ঠ ওই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, গাজার হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ার ‘রমজানে এই যুদ্ধকে আরো উসকে দেওয়ার বৃহত্তর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে’ কূটনৈতিক নাশকতা চালাচ্ছেন। কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় মুসলমানদের পবিত্র মাস রমজানে গাজায় ছয় সপ্তাহের একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হতে দোহায় আলোচনা শুরু হয়েছিল। যেখানে বলা হয়েছিল, ইসরায়েল ছয় সপ্তাহ গাজায় অভিযান বন্ধ রাখবে। বিনিময়ে এখনও হামাসের হাতে বন্দি ১৩০ ইসরায়েলি জিম্মির মধ্যে ৪০ জনকে মুক্তি দিতে হবে।
কিন্তু হামাস গাজা যুদ্ধের অবসান এবং সেখান থেকে ইসরায়েলি সৈন্যদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহার দাবি করে বসে আছে। যে দাবি উড়িয়ে দিয়ে ইসরায়েল বলেছে, হামাসকে সম্পূর্ণ রূপে নির্মূল না করা পর্যন্ত তাদের এই অভিযান বন্ধ হবে না। যুদ্ধের শুরুর দিকে ইসরায়েল যখন গাজার উত্তরে স্থল অভিযান শুরু করে তখন ওই অঞ্চলে বসবাস করা লাখ লাখ ফিলিস্তিনি প্রাণ বাঁচাতে নিজেদের বাড়িঘর ছেড়ে দক্ষিণের দিকে পালিয়ে যায়। হামাস ওইসব বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের উত্তরে ফেরার অনুমতি দেওয়ার দাবিও জানিয়েছে।
ইসরায়েল বলেছে, প্রথম যুদ্ধবিরতিতে ইসরায়েল থেকে যত ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে এবার তারা তার দ্বিগুণ বন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি আছে। কিছু কিছু বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের তারা গাজার উত্তরাঞ্চলে ফেলার অনুমতিও দেবে। কিন্তু হামাস চুক্তির শর্ত হিসেবে ‘বিভ্রান্তিকর’ সব দাবি জানিয়েছে। যাতে বোঝাই যাচ্ছে, ফিলিস্তিনিরা একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে উপনীত হতে আগ্রহী নয়। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে মঙ্গলবার এ কথা বলা হয়েছে।
এদিকে, এখনও ইসরায়েলের হাতে বন্দি জিম্মিদের প্রায় ৩০০ স্বজন ও তাদের সমর্থকরা মঙ্গলবার তেল আবিবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা সদরদপ্তরের বাইরে জড়ো হন এবং জিম্মিদের মুক্ত করে আনতে যেকোনো মূল্যে একটি চুক্তিতে উপনীত হওয়ার দাবি জানান। বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ নিজেদের খাঁচায় বন্দি করে প্রতিবাদ জানান। কারো কারো হাতে ধরা প্ল্যাকার্ডে জিম্মি স্বজনদের ছবি। একটি প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘কোনো মূল্যই অনেক বেশি নয়’।
ইসরায়েল যেমন যুদ্ধবিরতি চুক্তির আলোচনা আটকে যাওয়ার জন্য হামাসকে দায়ী করছে। তেমনি হামাস বলছে, আলোচনা চলাকালেও ইসরায়েল গাজায় হামলা চালিয়ে আলোচনার পরিবেশকে বাধাগ্রস্ত করেছে। উভয় পক্ষ যখন পরষ্পরকে দায়ী করায় ব্যস্ত সে সময়ে গাজার লাখ লাখ সাধারণ ফিলিস্তিনি প্রতিনিয়ত প্রাণ বাঁচাতে লড়ে যাচ্ছে। ছোট্ট ওই ভূখণ্ডটি দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘসহ নানা মানবাধিকার সংস্থা।


প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৪ | সময়: ৫:৫৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ