শনিবার, ১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্পোর্টস ডেস্ক: হেডিংলি টেস্টের দ্বিতীয় দিনেও ব্যাটে-বলে লড়াই হলো জমজমাট। দারুণ বোলিংয়ে ইংল্যান্ডকে আড়াইশর আগে আটকে দিলেন প্যাট কামিন্স। আগ্রাসী এক ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার লিড অবশ্য বেশি বড় হতে দিলেন না ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকস। পরে বল হাতে লড়াইয়ের চেষ্টায় তার দল।
অ্যাশেজের তৃতীয় টেস্টের প্রথম দিনে ১৩ উইকেট পতনের পর দ্বিতীয় দিনে পড়েছে ১১টি। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসে থামে এ দিন ২৩৭ রানে। দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার রান ৪ উইকেটে ১১৬। প্রথম ইনিংসে ২৬ রানের লিড মিলিয়ে ১৪২ রানে এগিয়ে আছে প্রথম দুই টেস্টের বিজয়ীরা।
ইংল্যান্ডের মাটিতে টেস্টে প্রথমবার পাঁচ উইকেটের স্বাদ পাওয়ার দিনে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক কামিন্সের প্রাপ্তি ৯১ রানে ৬টি। ১০৮ বলে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৮০ রানের ইনিংস খেলেন স্টোকস। ইংলিশদের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আগের দিনের জ্যাক ক্রলির ৩৩। লিডসে ৩ উইকেটে ৬৮ রান নিয়ে শুক্রবার দ্বিতীয় দিন শুরু করে ইংল্যান্ড। এ দিন প্রথম সেশনে ৭৪ রান যোগ করতে তারা হারায় আরও ৪ উইকেট।
দিনের দ্বিতীয় বলে কামিন্সের বাড়তি বাউন্সে প্রথম স্লিপে ধরা পড়েন জো রুট। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি জনি বেয়ারস্টোও। মিচেল স্টার্কের অফ স্টাম্পের অনেক বাইরের বলে ড্রাইভ করে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ দেন এই কিপার-ব্যাটসম্যান। ৮৭ রানে ৫ উইকেট হারানোর পর ষষ্ঠ উইকেটে স্টোকস ও মইন আলি যোগ করেন ৪৪ রান। কামিন্সের শর্ট বল পুল করার চেষ্টায় ফাইন লেগ ফিল্ডারের হাতে মইন ক্যাচ দেন ২১ রান করে।
ক্রিস ওকস দ্রুত বিদায় নেন লাঞ্চ বিরতির আগের ওভারে। বিরতির পর ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম তিন বলে স্টার্ককে দুই ছক্কা ও একটি চার মারেন মার্ক উড। পরের ওভারে তিনি ছক্কায় ওড়ান কামিন্সকে। ওই ওভারেই ক্যাচ দিয়ে শেষ হয়ে তার ৮ বলে ২৪ রানের ক্যামিও। অষ্টম উইকেট পতনের পর প্রায় প্রতি বলেই মেরে খেলার চেষ্টা করেন স্টোকস। স্টার্ককে মারেন টানা তিনটি চার। ৪৫ রানে পরপর দুই বলে দুবার জীবনও পান তিনি। প্রথমে লং অফ থেকে দৌড়ে এসে ক্যাচ নিতে পারেননি স্টার্ক। এরপর ফিরতি ক্যাচ হাতছাড়া করেন বোলার টড মার্ফি নিজেই।
পরের ওভারে বাউন্ডারিতে স্মিথের দারুণ ক্যাচে ফেরেন স্টুয়ার্ট ব্রড। মার্ফিকে টানা দুটি ছক্কার পথে স্টোকস ফিফটি করেন ৮৬ বলে। এই অফ স্পিনারের পরের ওভারে আবার পরপর দুই ছক্কার পথে তিনি পূর্ণ করেন ৬ হাজার টেস্ট রান। মার্ফির পরের ওভারে আবার ছক্কার পর আরেকটির চেষ্টায় লং অনে ধরা পড়েন ইংলিশ অধিনায়ক। তার সঙ্গে ৩৮ রানের দশম উইকেট জুটিতে অলি রবিনসনের অবদান স্রেফ ৫। শেষ ৩ উইকেট জুটিতে ইংল্যান্ড যোগ করে ৯৫ রান।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে আবারও শুরুতেই ডেভিড ওয়ার্নারকে হারায় অস্ট্রেলিয়া। প্রথম ইনিংসের মতো এবারও ব্রডের বলে স্লিপে ক্রলির হাতে ধরা পড়েন বাঁহাতি ওপেনার। এই টেস্টে দুবারসহ এই সংস্করণে ১৭ বার ব্রডের বলে আউট হলেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ৫৭ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন উসমান খাওয়াজা ও মার্নাস লাবুশেন। এরপরই জোড়া ধাক্কা খায় তারা। মইন পরপর দুই ওভারে ফিরিয়ে দেন লাবুশেন ও স্টিভেন স্মিথকে।
অফ স্পিনারকে সুইপের চেষ্টায় ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন লাবুশেন (৭৭ বলে ৩৩)। লেগ সাইডে খেলার চেষ্টায় সরাসরি শর্ট মিডউইকেট ফিল্ডারকে ক্যাচ দেন স্মিথ। নিজের শততম টেস্টে প্রথম ইনিংসে ২২ রানের পর এবার তিনি করেন ২। স্মিথকে ফিরিয়ে টেস্টে ২০০ উইকেটের মাইলফলক স্পর্শ করেন মইন। ইংল্যান্ডের ১৬তম ক্রিকেটার ও তৃতীয় স্পিনার হিসেবে এই মাইলফলক ছুঁলেন তিনি।
এরপর খাওয়াজাকে কট বিহাইন্ড করে ফেরান ওকস। ৯৬ বলে ৩ চারে ৪৩ রান করেন ৩৬ বছর বয়সী ওপেনার। প্রথম ইনিংসের মতো একশর আগে ৪ উইকেট পতনের পর ফের প্রতিরোধ গড়েন ট্রাভিস হেড ও মিচেল মার্শ। ৭৩ বলে ২৬ রানের জুটিতে অবিচ্ছিন্ন আছেন তারা। প্রায় চার বছর পর টেস্টে ফিরে প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা মার্শ অপরাজিত আছেন ১৭ রানে। ১৮ রানে খেলছেন হেড।