রাসায়নিকে কলা পাকছে বাগমারায়

মাহফুজুর রহমান প্রিন্স, বাগমারা: বাগমারা উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে রাসায়নিকে পাকানো হচ্ছে বিভিন্ন জাতের কলা। বিষাক্ত এই কলা স্বাস্থ্যর জন্য হুমকির কারণ হলেও অসাধু ব্যবসায়ীদের এই তৎপরতা থামছে না। তারা অতি মুনাফার লোভে বিভিন্ন হাট বাজারের আনাচে কানাচে গোডাউন ভাড়া নিয়ে দেদারসে রাসায়নিক মিশিয়ে দ্রুত কলা পাকানোর ব্যবস্থা করছে। ফলে এতে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন কলা চাষী ও ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা গেছে, এই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় ছোট বড় মিলে ২৬টি কলার আড়ৎ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি কলার আড়ৎ রয়েছে তাহেরপুর হাটে। এখানেই বসে কলার বৃহৎ হাট। প্রতি সোম ও শুক্রবার এখানে হাট বসে। এই হাট সহ অন্যান্য হাট থেকে প্রতিদিন অন্তত বিশ ট্রাক কলা রাজধানী ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলা শহরে রপ্তানী হয়ে থাকে। রপ্তানীকৃত এসব কলার অধিকাংশই কাঁচা থাকে।
তবে স্থানীয় বাজারে যেসব কলা ক্রয় বিক্রয় করা হয়। তার সবগুলোই থাকে পাকা। আর এসব কলাই রাসায়নিকে পাকানো হয়।
ভবানীগঞ্জ কারিগরি ও ব্যবস্থাপনা কলেজের অধ্যক্ষ আতাউর রহমান শিবলী জানান, তিনি শবরী কলা (মানিক) পছন্দ করেন। ইদানিং কলা গুলোতে তেমন স্বাদ পাচ্ছেন না। টকটকে হলুদ রংগের কলা বাড়িতে এনে খাওয়ার সময় দেখেন সেগুলো কচকচ করছে।
একই বাজারের আরেক কলার ক্রেতা কলেজ শিক্ষক ইয়াছিন আলী জানান, বাজারে এখন যে কলা ওঠেছে তার সবগুলোই অপরিপক্ষ। তার মতে, রাসায়নিক দিয়ে এসব কলা পাকানোর ফলে সেগুলোতে আর তেমন স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আব্দুর রাজ্জাক জানান, তারা কলা চাষ ও কলা বাগানের পরিচর্চা নিয়ে তারা কাজ করেন।
তার মতে, রাসায়নিকে পাকানো কলা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্বক ক্ষতিকর। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. গোলাম রাব্বানী বলেন, রাসায়নিকে পাকানো কলা খেলে পেটের পীড়া, কিডনী বিকল ও ক্যান্সারের মত মারাত্বক রোগের ঝুকি রয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা স্যানিট্যারি ইন্সপেক্টর আশরাফুল ইসলাম মণ্ডলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রাসায়নিক ছাড়া ধুয়া দিয়ে কলা পাকানো সম্ভব। আমরা এ জন্য কলা ব্যবসায়ীদের উৎসাহিত করে থাকি। তবে কলা পাকানোতে কেউ কোন ক্ষতিকর রাসায়নিক ব্যবহার করলে এবং প্রমান পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইদা খানম বলেন, ক্ষতিকর রাসায়নিকে কলা সহ যেকোন ফল পাকানো শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এমন অভিযোগ ও প্রমান পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


প্রকাশিত: অক্টোবর ১৪, ২০২২ | সময়: ৫:১৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ