রাজশাহীর বানেশ্বর-পাবনার ঈশ্বরদী সড়কের নির্মাণ কাজে গতি নেই

চারঘাট প্রতিনিধি:

একদিকে বিটুমিন ও পাথর সংকট আরেকদিকে জমি অধিগ্রহণ সবমিলিয়ে নানা জটিলতায় রাজশাহীর বানেশ্বর-পাবনার ঈশ্বরদী সড়ককে আঞ্চলিক মহাসড়কে উন্নীতকরণ কাজ অনেকটাই ধীরগতিতে পড়েছে।

 

 

সড়ক ও জনপথ বিভাগ রাজশাহী সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীর সাথে ঈশ্বরদীর রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও দেশের দক্ষিণ অঞ্চলের যোগাযোগ বৃদ্ধির লক্ষে একনেক সভায় ২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি বানেশ্বর থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার সড়কটিকে আঞ্চলিক মহাসড়কে উন্নীতকরণে প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। প্রকল্প চুক্তি অনুযায়ী ২০২২ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু জমি অধিগ্রহণ, পাথর ও বিটুমিন সংকটসহ নানা সমস্যার কারণে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

 

 

সড়কটির কাজ অসম্পূর্ণ অবস্থায় ফেলে রাখায় চারঘাট-বাঘাসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি উপজেলার হাজারো মানুষ চলাচলে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। রাজশাহী সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের আওতায় সাত ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সড়কের নির্মাণ কাজ করছেন।

 

 

 

নির্দিষ্ট সময় পার হলেও কাজ শেষ হয়েছে মাত্র ৬০ শতাংশ। এ অবস্থায় কাজের মেয়াদ আরো দেড় বছর বাড়ানো হয়েছে। প্রকল্প ব্যয় আরো ৯০ কোটি টাকা বাড়ানোর জন্য প্রকল্প সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

 

 

সওজ আরো জানায়, ৫৫ কিলোমিটার সড়কটি ছিল ১৮ ফুট চওড়া। নতুন সড়ক হচ্ছে ৩৪ ফুট চওড়া। সড়ক চওড়া করতে নাটোরের লালপুর ও পাবনার ঈশ্বরদী বাজারে জমি অধিগ্রহণের প্রয়োজন না থাকলেও রাজশাহীর চারঘাট ও বাঘা বাজারে জমি অধিগ্রহণ ছাড়া সড়ক চওড়া করা সম্ভব না। এজন্য চারঘাট ও বাঘা বাজারের সড়কের কাজ এখনো শুরু হয়নি।

 

 

এই প্রকল্পে শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ৫৫৪ কোটি টাকা। কিš‘ জমি অধিগ্রহণসহ নানা কারণে প্রকল্প ব্যয় আরো প্রায় ৯০ কোটি টাকা বাড়াতে প্রকল্প সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তবে নির্দিষ্ট সময়ে জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব না হলে এবং বিটুমিন ও পাথর সংকট না কাটলে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে কাজ শেষ করা সম্ভব হবেনা বলে জানা গেছে।

 

 

এদিকে চারঘাট-বাঘা অংশের বিভিন্ন জায়গায় সড়কের পুরনো পিচ-পাথর তুলে নতুন পাথর বালি দিয়ে রোলার করে ফেলা রাখা হয়েছে দীর্ঘদিন। এতে সড়কে প্রায় ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। গত তিন মাসে প্রাণ হারিয়েছে চার ব্যক্তি, আহত হয়েছে অর্ধশতাধিক।

 

 

চারঘাটের রাওথা এলাকার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, নিজের পেশাগত কাজে মোটরসাইকেল নিয়ে চারঘাট থেকে ঈশ্বরদী পর্যন্ত যাতায়াত করি। রাস্তার কাজ অসম্পূর্ণ অবস্থায় ফেলে রাখায় এত বেশি পরিমাণ ধুলা ওড়ে যে সময় সামনে কিছু দেখা যায় না। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে খানা খন্দের সৃষ্টি হয়ে দূর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে।

 

 

 

চারঘাট নাগরিক কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা সড়ক ও জনপথ বিভাগকে সড়কের কাজ সঠিক সময়ে শেষ করতে ও ঝুঁকিপূর্ণ বাঁক গুলোকে সোজা করতে চিঠি দিয়েছি। শুরুতে কাজে গতি থাকলেও এখন কাজের গতি একেবারেই নেই। জমি অধিগ্রহণ জটিলতার দোহায় দিয়ে সড়কের বাঁকগুলোও সোজা করা হয়নি। এ অবস্থায় প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা।

 

 

 

এ বিষয়ে রাজশাহী সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহ মো. আসিফ বলেন, ৫৫ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কের রাজশাহীর জেলার আওতাভুক্ত চারঘাট ও বাঘার ৩১ কিলোমিটারের মধ্যে ৫ কিলোমিটার সড়কের কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। বিটুমিন ও পাথর সংকটের কারণে পিচের কাজ বন্ধ আছে। বরাদ্দ না থাকায় জমি অধিগ্রহণ শুরু করা যায়নি। প্রকল্প ব্যয় আরো প্রায় ৯০ কোটি টাকা বাড়ানোর জন্য প্রকল্প সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া করা হয়েছে। সব সংকট কেটে গেলে বর্ধিত সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে বলে জানান তিনি।

সানশাইন / শামি

 


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৬, ২০২৩ | সময়: ৯:৫৮ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine