দুবাইফেরত যুবককে অপহরণ করে ২০ লাখ টাকা দাবি, দু’জন আটক

রাণীনগর প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে দুবাই ফেরত আজাদুল ইসলাম (৪৩) নামে এক যুবককে অপহরণ করে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবির ঘটনা ঘটেছে। পরে স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে থানা পুলিশের সহায়তায় বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার গুলিয়া কৃষ্ণপুর গ্রাম থেকে অপহৃত যুবককে উদ্ধারসহ অপহরণকারী দুইজনকে হাতেনাতে আটক করেছে।
এঘটনায় মঙ্গলবার রাতে রাণীনগর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ দায়েরকৃত মামলায় আটককৃতদের গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার আদালতে সোর্পদ করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার রাতে উপজেলার উপর তালিমপুর গ্রামে। অপহৃত যুবক ওই গ্রামের মৃত মাজেদ আলীর ছেলে।
যুবক আজাদুল ইসলাম জানান, সোমবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ গ্রামে ইসলামী জলসায় ছিলেন। এসময় অপরিচিত নাম্বার থেকে মোবাইল ফোনে কল করে গ্রামের সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে আসতে বলে অপহরনকারীরা। সেখানে যাবার পর এক সাথে চা-পান শেষে বাড়ী ফেরার সময় জোর করে মোটরসাইকেলে তুলে মুখে টেপ লাগিয়ে পার্শ্ববর্তী বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার গুলিয়া কৃষ্ণপুর গ্রামে অপহরণকারী রিপনের বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেখানে ঘরের মধ্যে আটকে রেখে মারপিট করে গলায় চাকু ধরে ২০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
এক পর্যায়ে অপহরনকারীদের সাথে ধস্তা-ধস্তির সময় গ্রামের লোকজন টের পেয়ে স্থানীয় থানা পুলিশের সহায়তায় রাত সোয়া ১২টা নাগাদ আজাদুলকে উদ্ধার সহ অপহরনকারী আব্দুল করিম (৩২) ও রিপন হোসেন (২৮) কে হাতে নাতে আটক করে নন্দীগ্রাম থানায় নিয়ে যায়। আটক করিম গুলিয়া কৃষ্ণপুর গ্রামের আব্দুল জব্বারের ছেলে এবং রিপন একই গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে।
আজাদুল আরো জানান, দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর দুবাই ছিলেন। গত তিন বছর আগে দেশে ফিরেছেন। অপহরনকারীরা পার্শ্ববতি গ্রামের বাসিন্দা হওয়ায় আগে থেকে মুখ পরিচিত ছিল। তবে তাদের নাম-ঠিকানা বা তাদের সম্পর্কে কিছু জানা ছিলনা।
এঘটনায় মঙ্গলবার রাতে তিনি বাদী হয়ে অপহরণ করে মারপিট ও মুক্তিপণ দাবির অভিযোগে রাণীনগর থানায় এজাহার নামীয় দুইজনসহ আরো ৪ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামী করে মামলা দায়ের করেছেন।
রাণীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ওবায়েদ বলেন, আজাদুলকে অপরহন করে বাড়ীতে আটকে রেখে মারপিট করে মুক্তিপণ দাবি করার ঘটনা টের পেয়ে স্থানীয় লোকজন পুলিশের সহায়তা আজাদুলকে উদ্ধার সহ অপহরনকারী দুইজনকে হাতে নাতে আটক করে। পরে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মঙ্গলবার রাতে নন্দীগ্রাম থানাপুলিশ আমাদের কাছে আটককৃতদের হস্তান্তর করেছে।
এ ঘটনায় আজাদুল বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। দায়েরকৃত মামলায় করিম ও রিপনকে গ্রেফতার দেখিয়ে বুধবার আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মামলাটি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে এবং ঘটনার সাথে আরো যারা জড়িত রয়েছে, তাদেরকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।


প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৪ | সময়: ৬:১৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ