বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার, বাঘা: রাজশাহীর বাঘায় বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন (টিসিবি) পণ্য বিতরণের লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে দুই কাডধারির সংঘাত গ্রামবাসীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে। এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন ৭ জন। পরে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আ’লীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে দলীয় কার্যালয়ে সালিশ করতে গেলে ফের সেখানেও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আ’লীগ অফিসের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়। পরে পুলিশ এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। বুধবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে উপজেলার বাউসা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, উপজেলার বাউসা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে বুধবার সকালে বাংলাদেশ ট্রেডিং কর্পোরেশন (টিসিবি) কার্ডধারীরা পণ্য নিতে আসেন। এ সময় ইউনিয়নের হেদাপতিপাড়া ও ভাড়ালীপাড়া গ্রামের কার্ডধারীরা লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য নিচ্ছিলেন।
প্রত্যক্ষ দর্শীরা জানান, ভাড়ালীপাড়া গ্রামের রাজিব হোসেন নামের একজন কাডধারী লাইনের সামনে যেতে চায়। এ সময় হেদাতিপাড়া গ্রামের গোলাম রাব্বি কাজল তাকে সামনে যেতে বারণ করেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে তর্কবিতর্ক শুরু হয়। এক পর্যায়ে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘাত। এতে বেশ সাতজন আহত হয়।
এদিকে খবর পেয়ে বাউসা ইউনিয়ন আলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদ হোসেন, মহাসিন আলী ও শরিফুলের নেতৃত্বে বিষয়টি আপোশ-মিমাংশার জন্য ঐ ইউনিয়ন পরিষদের সামনে আ’লীগের দলীয় কার্যালয়ের বসলে ভাড়ালীপাড়া গ্রামের রাজিব হোসেনের নেতৃত্বে ফের সেখানেও সংঘর্ষ বাদে।
এ ঘটনায় অফিসের বেশ কিছু চেয়ার-টেবিল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে এবং টিসিবি পণ্য বিতরণ বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন সাথে করে ঘটনাস্থলে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে ফের টিসিবি পণ্য বিতরণ শুরু করার।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন, হেদাতিপাড়া গ্রামে নফেল প্রামানিকের ছেলে গোলাম রাব্বি কাজল (২৫), আবদুল মজিদ প্রামানিকের ছেলে খোরশেদ আলম (৪০) ও সুরাপ আলী প্রামানিকের ছেলে হুমায়ন কবির (৪০) সহ আরো অনেকে। স্থানীয় লোকজন এদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসা দিয়েছেন বলে সত্যতা নিশ্চিত করেন ডা. রেশমা খাতুন। এরদের মধ্যে তিনজনকে ভর্তি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বাউসা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মহসিন আলী বলেন, টিসিবি পণ্য নেওয়ার লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে প্রথমে তর্কবিতর্ক হয়। এ সময় ভাড়ালীপাড়া গ্রামের রাজিব হোসেনের নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি দল এসে হেদাতিপাড়া গ্রামের লোকজনের উপর হামলা করে।
অপরদিকে ভাড়ালীপাড়া গ্রামের রাজিব হোসেন দাবি করেন, হেদাতিপাড়া গ্রামের কার্ডধারীরা লাইনের আগে যাওয়াকে কেন্দ্র করে তর্কবির্তকের সূত্রপাত ঘটে। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তরিকুল ইসলাম জানান, আমি সকাল ১০টার সময় বাউসা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে উপস্থিত থেকে টিসিবি পণ্য বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে সেখান থেকে অফিসে চলে আসি। এরপরে সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ নিয়ে ফের ১২ টায় সেখানে উপস্থিত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে পুনরায় পণ্য বিতরণ শুরু করি।
বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, টিসিবি পণ্য নেওয়ার লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ছিলাম। এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।