সর্বশেষ সংবাদ :

তামিম-মায়ার্সে চট্টগ্রামকে বিদায় করে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে বরিশাল

স্পোর্টস ডেস্ক: বিপিএলে তিন বছরে দ্বিতীয় ফাইনাল খেলা থেকে আর এক ম্যাচ দূরে ফরচুন বরিশাল। ২০১২, ২০১৫ ও ২০২২ সালের রানার্সআপরা দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার নিশ্চিত করেছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে হারিয়ে। তামিম ইকবাল ও কাইল মায়ার্সের নৈপুণ্যে তিনবারের রানার্সআপরা জিতেছে ৭ উইকেটে।
লিগ পর্বের দুই ম্যাচে বরিশালকে উড়িয়ে দিয়েছিল চট্টগ্রাম। স্বাভাবিকভাবেই আত্মবিশ্বাসে টগবগ করছিল তারা। জয়ের বিশ্বাস নিয়ে এলিমেনেটরে তামিম ইকবালের বরিশালের বিপক্ষে মুখোমুখি হয় চট্টগ্রাম। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে এসে হোঁচট খেতে হলো শুভাগত হোমের দলকে। এদিন আগে ব্যাটিং করে বরিশালকে ১৩৬ রানের লক্ষ্য দেয় চট্টগ্রাম। সহজ এই লক্ষ্য দেওয়ার পর তামিম-মায়ার্স ঝড়ে উড়ে যায় তারা। ৩১ বল আগে ৭ উইকেটের জয়ে বিপিএলের দশম আসরের ফাইনাল খেলার আশা টিকে থাকলো বরিশালের।
এলিমেনেটর ও প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচকে ঘিরে মিরপুরে উৎসব বিরাজ করছে। স্টেডিয়ামে আশপাশে একটি টিকিটের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকরা। যারা টিকিট নামক সোনার হরিণ হাতে পেয়েছেন তারা নিজেদের ভাবছেন চরম সৌভাগ্যবান। পুরো টুর্নামেন্টে ছুটির দিনে দর্শক দেখা গেলেও আজকে সবদিনকে ছাড়িয়ে গেছে। মিরপুর স্টেডিয়াম কানায় কানায় পূর্ণ ছিল। এমন একটি ম্যাচে দর্শকরা সেভাবে আনন্দ করতে পারলেন না! অনেকটা একতরফা খেলে ম্যাচ জিতেছে ফরচুন বরিশাল।
এদিন ১৩৬ রানের মামুলি লক্ষ্য পেয়েছিল বরিশাল। তবে প্রথম বলেই সৌম্য সরকার সাজঘরে ফিরলে চট্টগ্রাম দর্শকরা নড়েচড়ে বসার সুযোগ পান! কিন্তু সেই সুযোগ দেয়নি তামিম-মায়ার্স জুটি। তাদের ৫৪ বলে ৯৮ রানের জুটিতেই জয়ের রাস্তাটা পেয়ে যায় বরিশাল। তামিমের তুলনায় কিছুটা ধীরস্থির ছিলেন মায়ার্স। কিন্তু শুভাগত হোমের করা পঞ্চম ওভারে ঘুম ভাঙে ক্যারিবিয়ান এই অলরাউন্ডারে। ওই ওভারে ৩ ছক্কা ও ২ চারে তোলেন ২৬ রান! ২৫ বলে হাফ সেঞ্চুরি ছোঁয়ার পরের বলে অবশ্য সাজঘরে ফিরতে হয় ক্যারিবিয়িান ব্যাটারকে। ৩ চার ও ৫ ছক্কায় মায়ার্স নিজের ইনিংসটি সাজান।
মায়ার্সকে হারানোর পর ক্রিজে নামেন ‘কিলার মিলার’ খ্যাত ডেভিড মিলার। যদিও বিপিএলের শুরুটা ভালো হয়নি তার। ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেওয়ার আগে খেলেন ১৭ রানের ইনিংস। ১৩ বলে ২ চারে নিজের ইনিংসটি সাজান তিনি। বাকি পথটা অনায়াসেই পাড়ি দেন মুশফিক ও তামিম। ১৪.৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বরিশাল।
তামিম চলতি বিপিএলে নিজের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন। আগের ম্যাচেই বিপিএলের শীর্ষ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন বাঁহাতি ব্যাটার। আজ সেই আসন আরও পোক্ত করেছেন তিনি। ১৩ ম্যাচে ৩ হাফ সেঞ্চুরিতে তামিমের রান ৪৪৩। এদিন খেলেছেন ৫২ রানের ইনিংস। ৪৩ বলে ৯ চারে বাঁহাতি ওপেনার নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। মুশফিক ৫ বলে ৬ রানে অপরাজিত ছিলেন।
চট্টগ্রামের বোলারদের মধ্যে রোমারিও শেফার্ড, বিল্লাল খান ও শুভাগত প্রত্যেকে একটি করে উইকেট নিয়েছেন। এর আগে টসে জিতে চট্টগ্রামকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানান অধিনায়ক তামিম। ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই বরিশালের বোলারদের তোপের মুখে পড়ে তারা। মায়ার্স, সাইফউদ্দিন, ওবেড ম্যাককয়- এই পেসত্রয়ীর বোলিংয়ে ১৩৫ রানে থামে চট্টগ্রামের ইনিংস। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দলটির টপ অর্ডার ক্লিক করতে পারেনি। টপ অর্ডারদের মধ্যে কেবল চট্টগ্রামের ওপেনার জোশ ব্রাউনই কেবল ছড়ি ঘোরাতে পেরেছেন। ২০ রানে জীবন পেয়ে শেষ পর্যন্ত ২২ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় তিনি ৩৪ রানে আউট হন। অন্যদিকে মিডল অর্ডারে অধিনায়ক শুভাগত দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করছিলেন। মায়ার্সের বলে আউট হওয়ার আগে ১৬ বলে খেলেন ২৪ রানের ইনিংস। সবমিলিয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে চট্টগ্রামের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৩৫।
বরিশালের তিন পেসার বল হাতে দারুণ ভূমিকা রেখেছেন। মায়ার্স, সাইফউদ্দিন ও ম্যাককয় প্রত্যেকেই দুটি করে উইকেট নিয়েছেন। তাইজুল ইসলাম ও জেমস ফুলার নেন একটি করে উইকেট। আগামী বুধবার দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে খেলবে বরিশাল। তাদের প্রতিপক্ষ চূড়ান্ত হবে প্রথম কোয়ালিফায়ার শেষে, যে ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এই ম্যাচের পরাজিত দলের বিপক্ষে ফাইনালে ওঠার শেষ সুযোগ পাবে বরিশাল।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৪ | সময়: ৬:১৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ