বাহারি পিঠার পসরা হলি ক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজ রাজশাহী’র প্রাঙ্গনে

স্টাফ রিপোর্টার: হেমন্তের শেষ প্রকৃতিতে পালকি দোলের মতো দুলতে দুলতে এসে পড়ে শীত। কনকনে ঠাণ্ডা আর হিমেল হাওয়া যেন হাঁড়ে কাঁপুনি ধরায় । সবুজ দিগন্ত কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে শুভ্র হয়ে উঠে। শীতের ভোরে প্রাণিকুল যে যার মতো উষ্ণতার খোঁজে ব্যস্ত। তখন প্রকৃতি মাতে শিশির স্নানে। বিকেল গড়াতেই আগুন তাপানোর ইচ্ছে জাগে মনে। উঠানের এক ধারে হেঁশেল ঘরে মাটির চুলোটা ঘিরে বেড়ে যায় মানুষের উপস্থিতি। শীতের মাঝে নিজেকে উষ্ণ করে নেয়ার মজাটাই আলাদা। সেই মজা আরো বাড়িয়ে দেয় সেই চুলায় যদি চলে ভাপা পিঠার আয়োজন।
শীতের সময় এমন আয়োজন প্রায় দিনই গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই চলে। আজ এই পিঠে তো কাল সেই পিঠা। জামাই আদরও জমে বেশ। কেমন যেন উৎসবের আয়োজন চলে। পিঠাপুলি বাঙালীর সর্বকালীন এক ঐতিহ্য। গ্রামীন জীবনে এ উৎসব এখনোও বেঁচে থাকলেও শহরের মানুষের যান্ত্রিক জীবনে তা পেরে উঠা সম্ভব হয় না। শহরাঞ্চলের মানুষের পিঠার চাহিদা মেটাতে রাস্তার মোড়ে, অলিগলিতে, বাসস্ট্যান্ডে বসে ছোট ছোট পিঠার দোকান।
বাঙালির বহু প্রাচীন ঐতিহ্যের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরিচিত করে দিতে হলি ক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রাজশাহী’র কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠান প্রঙ্গনে এ পিঠা উৎসবের আয়োজন করেছিলো। রবিবার সকালে এ পিঠা উৎসবে মেতেছিলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির চার শতাধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
সকালে প্রধান অতিথি হিসেবে পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন, হলি ক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ব্রাদার প্লাসিড পিটার রিবেরু, সিএসসি।
পিঠা উৎসবকে ঘিরে বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গনে বসানো হয়েছিলো বেশ কয়েকটি স্টল। বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা স্টলগুলোতে পিঠাপুলির পসরা সাজান। জনপ্রিয় পিঠাগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিলো ভাপা পিঠা, গোলাপ পিঠা, ঝাল পিঠা, হৃদয় হরণ পিঠা, সিরিজ, ডিম সুন্দরী, পার্টি সাপ্টা, নকশি পিঠা, চকলেট কেক, গ্লাস কেক, মাংস পুলি পিঠা, পুলি পিঠা, মোয়া, তাল বড়া, ডিম ঝাল পিঠা, ঝাল চিতাই, বাহারি পিঠা, নিমকি, ঝিনুক পিঠা, দুধ পুলি, সেমাই পিঠা, বকুল পিঠা, চিংড়ি পিঠা, ট্রুটিফুটি পিঠাসহ অনেক ধরনের বাহরি পিঠা ও শরবত।
পিঠা উৎসব ঘিরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ দেখা যায়। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা বিভিন্ন স্টল ঘুরে পিঠা কিনে খান ও বাড়ির জন্যও নিয়ে যান।
নার্সারি শ্রেণির শিক্ষার্থী মীম, জাফিয়া, নুসরাতসহ কয়েকজন জানায়, এমন মজার মজার পিঠা দেখে খুব ভালো লাগছে। তারা ইচ্ছেমতো স্টল থেকে পিঠা কিনে খেয়েছে।
ক্লাস ওয়ানের শিক্ষার্থী রাহা বলে, আজ খুব খুশি লাগছে। কেক ও পিঠা কিনে খেয়েছি। বেশ মজা হয়েছে।
শিক্ষকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, ব্রাদার অর্পন ব্রেইল সিএসসি, ব্রাদার শংকর কস্তা, ব্রাদার এ্যালেক্স সিএসসি, ব্রাদার আন্তনী সিএসসি, সহকারি শিক্ষক অ্যাঞ্জিলা বিশ^াস, কণিকা কস্তা, শানিন, সাথী সরকার, মৌ রোজারিও, নার্গিস খাতুন, নন্দিতা সাহা, সাফিয়া, প্রবির কুমার দাস, পবিত্র বর্মন, রায়হানুল ইসলাম, সুমন, জেমস, পিটার হালদার।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪ | সময়: ৮:৫৮ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine