কাজে আসছে না কোটি টাকার তিনটি সড়কবিহীন সেতু

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি: চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনটি সেতু নির্মাণ করা হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুগুলো এলাকাবাসীর কোনো কাজে আসছে না। প্রায় ৬ বছর আগে নির্মাণ করা এই সেতুগুলো অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। সরকারের অর্থ ব্যয় হলেও ভোগান্তি কমেনি এলাকাবাসীর। কৃষিপণ্য পরিবহনেই বেশি সমস্যায় পড়তে হয় কৃষকদের। সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তায়ন কর্মকর্তার অফিস বলছে এখনো সেতু কিছুটা হলেও মানুষের কাজে আসছে। বাস্তবে সরেজমিনে দেখা গেছে এখন আর এ সেতু দিয়ে কেউ চলাচল করে না।
জানা গেছে, সুন্দরপুর ইউনিয়নে মরা নদীর উপর সেতুগুলো নির্মাণ করা হয় ৬ বছর আগে। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সেতু নির্মাণ প্রকল্পের অর্থায়নে কোটি টাকা ব্যয়ে এক সড়কে তিনটি সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সংযোগ সড়ক না থাকায় কাঙ্খিত সুফল না এলাকাবাসী।
এলাকাবাসী বলছেন, সুন্দরপুর ইউনিয়নের দুটি গ্রামের স্বাভাবিক যোগাযোগ রক্ষা ও কৃষিপণ্য পরিবহণ করার জন্য এই তিন সেতু নির্মাণ করা হয়। কিন্তু সেতু নির্মাণের পর এখানে সংযোগ রাস্তা নির্মাণ করা হয়নি। সেতু থেকে দুই পাশের রাস্তা অস্বাভাবিক নিচু হওয়ায় বর্ষাকালে পানির নিচে তলিয়ে যায়। শুকনো মৌসুমেও চলাচল করা যায় না। কোটি টাকার এই সেতু তাদের কোনো কাজে আসছে না।
সুুন্দরপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা হুমায়ন কবির বলেন, মরা নদীর উপর সংযোগ রাস্তা বিহীন তিনটি সেতু পড়ে আছে। শুকনো মৌসুমেও রাস্তাটি ব্যবহার করা যায় না। এ সেতুর মাধ্যমে পাশের আরও তিন গ্রামের মধ্যে সরাসরি চলাচল করা যেত। কিন্তু সংযোগ রাস্তা না থাকায় মালামাল পরিবহনে কষ্ট হচ্ছে। আমাদের দাবি এ সেতুর সংযোগ সড়ক স্থাপন করে কষ্ট লাঘব করা হোক।
স্থানীয় বাসিন্দা অনিকুল ইসলাম বলেন, সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল কৃষিপণ্য পরিবহণ ও স্বাভাবিক যোগাযোগ রক্ষা করার জন্য। কিন্তু সেতু নির্মাণের পর এখানে কখনো রাস্তা হয়নি। দুপাশের সংযোগ সড়ক তুলনামূলক নিচু হওয়ায় বর্ষাকালে পানির নিচে তলিয়ে যায়।
ফলে, এটি জনগণের ব্যবহারের জন্য কোনো কাজে আসছে না। তিনি আরও বলেন, এ বিভিন্নভাবে বঞ্চিত। জনসাধাণ ও কৃষকরা এ রাস্তাটি ব্যবহার করতে পারলে কষ্ট লাঘব হতো। আমরা দ্রুত এসব সেতুর সংযোগ রাস্তা চাই।
সুন্দরপুর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নুরুল ইসলাম জানান, এই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি সেতু একই অবস্থায় পড়ে আছে; যার নির্মাণ ব্যয় প্রায় কোটি টাকা। সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে সেতুগুলো ব্যবহার উপযোগী করা গেলে হাজার হাজার মানুষের উপকার হবে।
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মৌদুদ আলম খাঁ জানান, যে সময়ে এ সেতুগুলো নির্মাণ করা হয়েছিল তখন জনসাধারণের এগুলো কাজে এসেছিল। ঐ এলাকার পাশেই এখন এলজিইডির বড় সেতু নির্মাণ হওয়ায় মানুষ এখন বড় সেতু ব্যবহার করেন। তারপরও ঐ সেতুলো এখনো মানুষের কাজে আসে বলে দাবি করেন তিনি।


প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৪ | সময়: ৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ