সোমবার, ২৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্টাফ রিপোর্টার : বান্ধবীর বিয়ের পর ক্ষুব্ধ হয়ে অন্তরঙ্গ ছবি এবং ভিডিও ফাঁস করার অপরাধে রাজশাহীতে মিজানুর রহমান তুহিন (২৬) নামের এক যুবকের ছয় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আলাদা তিনটি ধারায় বুধবার তাকে এই দণ্ড দেন রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনাল।
একইসঙ্গে জরিমানা করা হয়েছে তিন লাখ টাকা। অনাদায়ে আরও নয় মাসের কারাদণ্ড। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহীর সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জিয়াউর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন। সাজাপ্রাপ্ত তুহিনের বাড়ি চাঁপাইনবাবঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চককীর্তি চাতরা চৌদ্দমাথা গ্রামে। তিনি রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের কৌশুলি ইসমত আরা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ২০২৩ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। মামলার এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, কলেজে পড়াশোনা করার সময় আসামির সঙ্গে বাদীর প্রেমের সম্পর্ক হয়। সম্পর্ক চলাকালে তুহিন গোপনে তার মোবাইলে বাদীর কিছু স্থির ছবি ও অন্তরঙ্গ ভিডিও ধারণ করে রাখেন। পরবর্তী সময়ে তুহিন তাকে বিয়ের জন্য চাপ দেন এবং তাকে বিয়ে না করলে এসব ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল করে দেওয়ার হুমকি দেন। কিন্তু ওই তরুণী তাকে বিয়ে করতে রাজি হননি।
এরপর তার পরিবার তাকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেন। আর বিয়ের পর থেকে অভিযুক্ত যুবক বাদীর সম্পর্কে তার স্বামী এবং শাশুড়ির মোবাইলে বিভিন্ন আপত্তিকর এসএমএস, ছবি এবং ভিডিও পাঠাতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে ফেসবুকে ‘শেষের কবিতা’ নামে একটি প্রোফাইল খুলে সেখানে ওইসব আপত্তিকর ছবি এবং ভিডিও পোস্ট করেন তুহিন। এ ঘটনায় তুহিনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী।
ওই মামালার রায় ঘোষণা করা হলো বুধবার। রায়ে তুহিনকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮ এর ২৫ (২) ধারায় তিন বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে আরও তিন মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড। একই আইনের ২৬ (২) ধারায় দুই বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা করেন আদালত। অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড।
এছাড়া ২৯ (২) ধারায় এক বছর সশ্রম কারাদন্ড এবং আরও এক লাখ টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড। পৃথক ধারায় দেওয়া এই সাজাগুলো একটার পর অন্যটা কার্যকর হবে। রায় ঘোষণাকালে অভিযুক্ত আসামি আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।