গোদাগাড়ীতে উপজেলা চেয়ারম্যানে এবার মনোনয়ন প্রত্যাশীর ছড়াছড়ি

স্টাফ রিপোর্টার: দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ডামাডোল শেষ হতে না হতেই দরজায় এসে কড়া নাড়ছে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। নির্বাচন কমিশন থেকে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের দিকেই ঘোষণা করা হতে পারে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল।
এই নির্বাচন ঘিরেই রাজশাহীজুড়ে বিভিন্ন উপজেলায় শুরু হয়ে গেছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তৎপরতা। বর্তমান চেয়ারম্যানরা দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে করছেন সভা। আবার নতুন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিভিন্ন জায়গায় সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগ করে জানান দিচ্ছেন তাদের নির্বাচন করার কথা। বর্তমান এবং নতুনরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তুলে ধরছেন বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি।
তবে নির্বাচন থেকে দূরে সরে আছে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাকর্মীরা। বিন্দু মাত্র আগ্রহ নেই আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে। যাদিও জামায়াতের নেতাকর্মীরা ভোটে আসবে কিনা তাও এখনি মুখ খুলছেন না।
জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ছাড়া অন্য কোন দলের পক্ষ থেকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন করার মনোভাব দেখা যায়নি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচন করবেন। আবার এই দলেরর নেতাকর্মীরা স্বতন্ত্র বা বিরোধী হয়ে ভোটের মাঠে লাড়াই করবেন বলে আভাস পাওয়া তবে আওয়ামী লীগের নেতারা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক রাখবেন কিনা তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে দলীয় প্রতীক যদি উঠিয়ে দেয় তাহলে তাহলে নির্বাচনী আমেজ ভিন্ন হওয়ার কাথাও জানান।
এবার গোদাগাড়ী উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যানসহ মোট ৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। তারা সকলেই আওয়ামী লীগের নেতা। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ২০১৯ সালে নৌকা প্রতীক পেয়ে নির্বাচন করে বিজয়ী হন। সে উপজেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।
অন্য মনোনয়ন প্রত্যাশীরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান। গতবার মনোনয়ন থেকে ছিটকে পড়লে বিদ্রোহী হয়ে ভোট করে পরাজিত হন। এরপর স্থানীয় এমপির কাছ থেকে দূরে সরে যায়। দলীয় কর্মকান্ড থেকেও সে সরে দাড়ায়। পরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হলে সেখান থেকেই সে দূরে থাকে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর সাথে সরব থাকতে দেখা যায়।
এছাড়াও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মালেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রশিদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও গোগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-প্রচার সম্পাদক সুনন্দন দাস রতন। তিনি কাস্টমস গেয়েন্দা সংস্থার সহকারি পরিচালক ছিলেন।
২০২১ সালে অবসর গ্রহণ করার পর রাজনীতির মাঠে সরব হন। ১৯৮০ সালের দিকে প্রেমতলী ডিগ্রী কলেজ শাখার ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও উপজেলা যুবলীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক ও দেওপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বেলাল উদ্দিন সোহেল চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে ভোট করার ঘোষণা দিয়েছেন।
এমপির অনুসারী হিসেবে পরিচিত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বলেন, নির্বাচন করার প্রাত্যাশা করতেই পারি তবে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর নির্দেশনার বাইরে গিয়ে নির্বাচন করবেন না। তিনি যেভাবে চাইবেন সেই ভাবেই তারা নির্বাচন করবে বলে জানান।
বর্তমান চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি যেহেতু নৌকার প্রার্থী হয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান আছি তাই মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপরে শতভাগ আশাবাদি। আমি জনগণের কাছে গিয়ে ভোট চাইছি।
এছাড়াও গত নির্বাচনের যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সেসব শতভাগ বাস্তাবায়ন না হলেও কম উন্নয়ন হয়নি। আগমীদিনে আবারও সুযোগ পেলে এই এলাকার উন্নয়ন শতভাগ বাস্তাবায়ন করবেন বলে জানান।
নির্বাচনে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গোদাগাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল সালাম শাওয়াল বলেন, এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচনেই বিএনপি অংশগ্রহণ করবেনা বলে সিদ্ধান্ত হয়ে আছে। তাই আমাদের কোন নেতাকর্মী নির্বাচন করার প্রশ্নই আসেনা।
রাজশাহী জেলা পশ্চিম জামায়াতের আমির গোদাগাড়ী মাটিকাটা ডিগ্রী কলেজের সহকারি অধ্যাপক আব্দুল খালেক জানান, নীতিগত ও দলীয় ভাবে জামায়াতের পক্ষ থেকে এই সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন না করার সিন্ধান্ত বহাল আছে। তাই এখনি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়টি বলা যাচ্ছে না।
এদিকে গোদাগাড়ী উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক বরজাহান আলী পিন্টু বলেন, আমাদের দলীয় সভা হবে সেই সভায় কি সিদ্ধান্ত হয় তারপর বলা যাবে কে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হবেন নাকি হবেন না।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৩, ২০২৪ | সময়: ৫:০০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর