সর্বশেষ সংবাদ :

বাঘা সীমান্ত এলাকায় এখন মাদকের শীর্ষে গাঁজা

স্টাফ রিপোর্টার,বাঘা :
রাজশাহীর বাঘা সীমান্ত এলাকায় যে সব মাদক কেনা-বেচা হয়ে আসছে তার মধ্যে এখন শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে গাঁজা। সীমান্তবর্তী ভারত থেকে আসা- ইয়াবা, ফেন্সিডিল, হেরোইন ও মদ-সহ হরেক রকম নেশা সামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় মাদক আসক্তরা এখন গাঁজা সেবনের দিকে বেশি ঝুকে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন, স্থানীয় সুশীল সমাজের লোকজন। তাঁরা বলছেন, গাঁজা প্রাপ্তির জন্য অন্যদেশের শরণাপন্ন হওয়া লাগেনা। আমাদের দেশের অভ্যন্তরে পদ্মার চরাঞ্চল সহ সমতল এলাকায় অনেকের বাড়িতে খুঁজলে গাঁজার গাছের সন্ধান মিলবে। তবে এ বিষয়ে নজরদারি নেই জেলা মাদক দ্রব্য অধিদপ্তর নিয়ন্ত্রন কিংবা বিজিবির। এ জন্য তাঁরা প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

স্থানীয় লোকজন জানান, এই মুহুর্তে বাঘা উপজেলায় যারা গাঁজা ব্যসার সার্থে সম্পৃক্ত তাদের মধ্যে অন্যতম বিপ্লব হোসেন (৪০)। তার বাড়ি উপজেলার বাজিতপুর গ্রামে। এই বিপ্লবের নামে বাঘা থানায় প্রায় ৮-১০ টি মাদক মামলা রয়েছে। তাকে অত্র এলাকার লোকজন গাঁজার সাব ডিলার হিসাবে চেনে-জানেন। তবে বিপ্লবের মুল ডিলার বাউসা ইউনিয়নের প্রেমতলী বাজার এলাকার আলমগীর হোসেন বলে সূত্র নিশ্চিত করেন। এই আলমগীরের নামেও থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, বিপ্লব হোসেন বর্তমানে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর পাশ্ববর্তী আমোদপুর এলাকায় অবস্থিত “ঢেল পীরের মাজার’’ এবং আব্দুল কুদ্দুস সরকারের আম বাগান এলাকায় নির্জন পরিবেশে দেদারছে গাঁজা বিক্রী করে চলেছে। সেখানে গাঁজা সেবনের জন্য আম বাগানের মধ্যে যুবক সমাজের হাট বসছে বলেও অনেকে মন্তব্য করেছেন। এদিকে বাঘা থানা পুলিশের একজন মুখপাত্র জানান, বর্তমানে এ থানায় সারা মাসে যে পরিমান মামলা হয়ে থাকে তার মধ্যে চার ভাগের তিন ভাগই মাদক। এ দিক থেকে দুই ভাগ গাঁজা সেবন এবং একভাগ ফেন্সিডিল, ইয়াবা ও হেরোইন-সহ অন্যান্য মাদক। এমনও লক্ষ করা গেছে, গাঁজা সেবনকারীদের আটক করতে গিয়ে গত বছর আহত হয়ে ফিরে এসেছে পুলিশ। তার পরেও হরহামাশেই চলছে গাঁজা বিক্রীর কারবার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বছর উপজেলার হরিনা এলাকায় ৬ টি গাঁজার গাছ সহ আসামী অবাইদুল ইসলামকে তার বাড়ি থেকে আটক করেছিল পুলিশ। তবে তার দাঁতের কামড়ে মারাত্নক ভাবে আহত হয়ে ছিলেন থানার উপ-পরিদর্শক (এস.আই) মাহাফুজ। এর আগে বাঘায় পৃথক অভিযানে ২২ কেজি সুখনা গাঁজা জব্দ করেছিল পুলিশ। একই সাথে ৫ জন সেবনকারীকেও আটক করেছিল। তবে ঐ মামলার মুল হোতা গাজা বিক্রেতা চকরাজাপুর গ্রামের সালাম মন্ডল (৫০)এবং তার স্ত্রী ফেরদৌসী বেগম(৪০)-সহ একই ইউনিয়নের দাদপুর গ্রামের জামাল উদ্দিন(৫০) পালিয়ে যায়। তবে মাদকের ব্যবসা তাদের চলমান রয়েছে।

এ থানায় সর্বশেষ গত ১৬ জানুয়ারী (২০২৪) ইং তারিখ ২০ কেজি ২৫০ গ্রাম কাঁচা একটি গাঁজার গাছ-সহ আলাইপুর এলাকার ইসরাইল হোসেন (৫০) কে আটক করে পুলিশ। এর কয়েকদিন পূর্বে পাকুড়িয়ার বেল্লালের মোড় থেকে দেড় কেজি গাঁজা সহ আটক করেন ঐ এলাকার মুদি ব্যবসায়ী সাদেক আলী (৫২)। এ ছাড়াও গত দুই মাসে গ্রেফতার হয় অত্র অঞ্চল উত্তর মিলিক বাঘার আলোচিত গ্রাজা সম্রাট রবি ভান্ডারী । তবে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে বর্তমানে গায়ে বাতাশ লাগিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে মিলিকবাঘা এলাকার জিরো থেকে হিরো বনে যাওয়া বাস মালিক রোহিদুল (৪৮) এবং আড়ানী নুর নগর এলাকার জালাল উদ্দিন।

বাঘা থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, মাদকের সাথে কোন আপশ নেই। আমি এ থানায় যোগদানের পর গত প্রায় একমাস দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অনেকটা ব্যস্ত ছিলাম। তার পরেও অনেক মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে কোথাও মাদক বিক্রী কিংবা সেবন হচ্ছে এমন তথ্য পেলে আমরা তাৎক্ষনাত আইগত ব্যবস্থা নিচ্ছি।

 

 

 

সানশাইন/সোহরাব


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৯, ২০২৪ | সময়: ৭:০৫ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর