বাঘায় কৃষি ও শিল্পে নারীদের সম্পৃক্ততা বাড়ছে

নুরুজ্জামান,বাঘা :

রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় অর্থনৈতিক ভাবে সাবলম্বী হওয়ার লক্ষে কৃষি ক্ষেত্রে পুরুষের পাশা-পাশি গ্রামীণ নারীরা অগ্রণী ভূমিকা রেখে চলেছে। সীমান্তবর্তী উপজেলা হওয়ায় অত্র অঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠান তেমন একটা গড়ে উঠেনি। তবে হাতে গোনা যে দু’একটি ক্ষুদ্রশিল্প রয়েছে সেই সব শিল্প-সহ কৃষি খাতে নারীদের সম্পৃক্ততা দিন-দিন বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন উপজেলা কৃষি অফিসার। এর ফলে তারা আর্থিক ভাবে সাবলম্বী হচ্ছেন।

 

 

স্থানীয় লোকজন জানান, গ্রামের দরিদ্র শ্রেণীর নারী এবং উপজাতীয় মেয়েরা কৃষি প্রকল্প যেমন-ধান রোপন, আলু , বেগুন , পেঁয়াজ, রসুন, মসুর, সরিষা, হলুদ, টমেটো বরই ইত্যাদি ফসল উত্তোলন ও বহনে সাফল্যের সাথে কাজ করে যাচ্ছে। বিশেষ করে এ অঞ্চলে পেঁয়াজ এবং আলু উৎপাদনে পুরুষের চেয়ে নারীদের সংখ্যাই বেশি লক্ষনীয়। এ ক্ষেত্রে গৃহস্থ ঘরের বধুরা ক্ষেতে-খামারে কাজে না গেলেও বাড়িতে বসে প্রায় সকল কাজেই তারা সহায়তা করছে।

বাঘার সুশীল সমাজের লোকজন জানান, এ অঞ্চলের নারীরা শুধু কৃষিতেই নয়, ক্ষুদ্র-ক্ষুদ্র কুঠির শিল্পেও তাদের প্রচুর অবদান রয়েছে। যেমন, মৃত ও হস্ত শিল্পে গ্রামীণ নারীদের একক ভূমিকা লক্ষ্যনীয়। বর্তমানে অত্র অঞ্চলের নারীদের গড়া হস্ত শিল্পের নানা পন্য যেমন, নকশী কাঁথা, সূচী কর্ম, সেলাই ফোড়া, শাড়ি-পাঞ্জাবি ও গামছা সহ বিবিধ কারুকাজ এবং খোদায় করা মৃৎ শিল্পের কাজ দেশের বিভিন্ন মার্কেটে বিক্রী হচ্ছে।

 

এ বিষয়ে বাঘার আমোদপুর গ্রামের হাসিনা খাতুন ও সুরুলি বেগমের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, আমাদের নিজেদের কোন জায়গা-জমি না থাকায় বাড়িতে ছাগল লালন-পালনের পাশা-পাশি বাড়তি আয়ের লক্ষে অন্যের জমিতে কৃষি কাজ করে সংসার চালায়। তারা বলেন, শুধু আমরা নয়, বর্তমানে আমোদের মতো অনেক নারী এখন কৃষির পাশা-পাশি ক্ষুদ্র কুঠির শিল্পে কাজ করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছে। অপর একজন বলিহার গ্রামের নারী রকেয়া বেগম বলেন, আমাদের ২ বিঘা নিজের জমিতে ফসল উৎপাদন করতে কৃষি শ্রমিকের পারিশ্রমিক দেয়ার মতো সামর্থ্য নাই। এ কারনে স্বামীর সাথে মাঠে কাজ করে তাকে সাহায্য করি।

 

বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহ সুলতার বলেন, আমি এর আগে অনেক জায়গায় চাকরি করেছি। তবে বাঘা কৃষি সমৃদ্ধ একটি উপজেলা । এখাসে সকল প্রকার ফসল ব্যপক হারে উৎপাদন হয়। আর এসব ফসল উত্তোলনে পুরুষের পাশা-পাশি নারীদের অংশ গ্রহন দিন-দিন বাড়ছে। বিশেষ করে জমি থেকে- পেঁয়াজ , টমেটো, রসুন, মসুর, সরিষা,হলুদ, বেগুন ও আলু উত্তোলনে তাদের জুড়ি মেলা ভার।

 

এক কথায় আর্থ সামাজিক অবস্থা পরিবর্তনের লক্ষে অত্র অঞ্চলের দরিদ্র শ্রেণীর নারীরা পুরুষের পাশা-পাশি কাজের সন্ধানে ছুটে চলেছে কৃষি থেকে শিল্প,বাসা-বাড়ি এমনকি কল কারখানা পর্যন্ত। তারা কাজের ক্ষেত্রে কোন কিছুকেই তোয়াক্কা করছে না। বেরিয়ে আসছে খোলা আকাশের নিচে। এর ফলে স্বাবলম্বী হচ্ছে তাদের পরিবার।

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৪ | সময়: ৬:০১ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine