মোহনপুর আওয়ামী লীগের দু-পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৫

মোহনপুর প্রতিনিধি: রাজশাহীর মোহনপুরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দু-পক্ষের অন্তত ৫ জন আহত হয়েছেন। সোমবার সন্ধায় উপজেলার শ্যামপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এসময় রণক্ষেত্রে পরিনত হয় পুরো বাজার এলাকা। পরিস্থিতি শান্ত করতে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আধিপত্ত বিস্তার কেন্দ্র করে গত দু-দিন থেকে সাবেক সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন এমপির সমর্থক আমজাদ গ্রুপের সাথে বর্তমান সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদের সমর্থক ঘাসিগ্রাম ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন বকুল গ্রুপের উত্তেজনা চলছিল। রোববার আয়েন উদ্দিন সমর্থক বড় দেউপুর গ্রামের বিলায়েত সরদারের ছেলে আমজাদকে মারধর করে বুকল গ্রুপের সদস্যরা।
এরপরদিন সোমবার বিকেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আব্দুস সালাম শ্যামপুর হাট বাজারে লোকজনের সাথে দেখা করতে আসেন। এসময় এডভোকেট আব্দুস সালামের সাথে দেখা করতে আসেন আমজাদ, আতা, নারায়নপুর গ্রামের রহিম উদ্দিন সরকারের ছেলে কুদ্দুসসহ অন্যান্যরা।
আলাপ আলোচনা শেষে এডভোকেট আব্দুস সালাম শ্যামপুর বাজার থেকে চলে যান। এরপর আমজাদ ও কুদ্দুসকে চারিদিক থেকে ঘিরে ফেলে মারধর করে বকুল গ্রুপের সদস্যরা। একপর্যায়ে আমজাদ ও কুদ্দুস বাজারের এক দোকানে ঢুকে নিজেদের রক্ষা করেন। খবর পেয়ে পুনরায় শ্যামপুর বাজারে ফিরে আসেন এডভোকেট আব্দুস সালাম। তিনি থানা পুলিশের সহায়তায় আমজাদ ও কুদ্দুসকে উদ্ধার করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, আমজাদ পক্ষের লোকজন স্থানীয় টেইলার্স ব্যবসায়ী মহিষকুন্ডি গ্রামের শফিকুল ইসলামকে মারধর করে শ্যামপুর হাট কলেজ গেটে গিয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে গোছা গ্রামের মৃত মনির সোনারের ছেলে মতিন, শ্যামপুর গ্রামের মৃত আলি হোসেনের ছেলে রাজাকে মারধর করে গুরুতর জখম করে। এরপর দুপক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। একপর্যায়ে থানা পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। যদিও সে সময় ঘটনাস্থলে আফজাল হোসেন বকুল উপস্থিত ছিলেননা বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে আসেন এবং তার সমর্থকদের শান্ত করেন।
পরে পরিস্থিতি নিয়ে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন আফজাল হোসেন বকুল। এসময় তিনি দাবি করেন, আমজাদ পক্ষের লোকজনের হামলায় তার ৫ জন কর্মী সমর্থক গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি জানান, সাবেক সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন এমপির লোকজন দীর্ঘ ১০ বছর তাদের উপর নির্যাতন চালিয়েছেন। একারণে ক্ষমতার পালা বদলে নির্যাতিতরা তাদের মনোকষ্ট কিছুটা প্রকাশ করেছেন। তাতেই তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ছে।
মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হরিদাস মন্ডল জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি শান্ত করে। সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবে এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত কোন পক্ষের অভিযোগ হয়নি বলে জানা গেছে।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৪ | সময়: ৫:৪৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ