দুর্নীতির প্রতিবাদ : রাবি থেকে পাওয়া স্বর্ণপদক ফেরত দিলেন মেধাবী নূরুল হুদা

স্টাফ রিপোর্টার : বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রশাসন কর্তৃক প্রাপ্ত স্বর্ণপদক ও স্বর্ণপদকের মূল সনদপত্র কুরিয়ারযোগে ফেরত পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. নূরুল হুদা। রবিবার কুরিয়ারটি পাঠালে সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আব্দুস সালাম এ স্বর্ণপদক ও সনদপত্র হাতে পান বলে নিশ্চিত করেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বলেন, সোমবার দুপুরে নূরুল হুদার স্বর্ণপদক ও সনদপত্র হাতে পেয়েছি। এখন বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবর এটি জমা দেওয়া আমার কাজ। এর আগে রবিবার বিকেলে এস এ পরিবহনের কুরিয়ারের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর পদক ও সনদপত্র পাঠান নূরুল হুদা।
এ বিষয়ে নূরুল হুদা বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি তদন্ত করে, সেখানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়। আমার প্রত্যাশা ছিল সরকার দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে। দীর্ঘদিনেও তদন্তে প্রমাণিত দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না দেখে দুর্নীতির প্রতিবাদে আমি জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে দুটি স্বর্ণপদক ফেরত দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলাম। সেই ঘোষণা অনুযায়ী স্বর্ণপদক ফেরত পাঠিয়েছি।
নূরুল হুদা লালমনিরহাট জেলার মৃত আহর উদ্দীনের ছেলে। তিনি জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন। এলএলবিতে (সম্মান) সিজিপিএ-৩.৬৫৪ এবং এলএলএমে ৩.৬০৭ অর্জন করেন। এলএলবি পরীক্ষার ফলাফলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে প্রথম স্থান অর্জন করায় ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক এবং ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক পান তিনি।
ভালো ফল অর্জন করেও নিজে শিক্ষক নিয়োগে আবেদন করে দুর্নীতি-স্বজনপ্রীতির কাছে হার মেনেছেন। এজন্য প্রধানমন্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদকও ফেরত দিয়েছেন। বর্তমানে নূরুল হুদা সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার (১৩ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে পদক ফেরতের ঘোষণা দেন নূরুল হুদা। সেখানে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আর্থিক লেনদেন, স্বজনপ্রীতি ও অনিয়ম দেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যাওয়া শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় স্বর্ণপদক প্রত্যাখ্যান করছি।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৬, ২০২৪ | সময়: ৫:৪৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ