শিবগঞ্জে স্বতন্ত্র প্রার্থীর ১২ সমর্থকের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর, আহত ৫

স্টাফ রির্পোটার, শিবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলামের ১২ সমর্থকের বাড়িতে হামলা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে বিজয়ী নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পাঁচজন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও নবনির্বাচিত সাংসদ।
মঙ্গলবার দুপুরে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির ব্যানারে শিবগঞ্জ ডাকবাংলো চত্বরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল ইসলাম টুটুল খাঁন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, গত রবিবার রাতে মোবারকপুর ইউনিয়নের কান্তিনগর এলাকায় জেলা মহিলা লীগের সহ-সভাপতি নুরজাহান বেগমের বাড়িসহ দুটি বাড়িতে, একইদিন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তোহুর আহমেদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায় এমপি ডা. শিমুলের লোকজন। গত সোমবার সকালে ঘোড়াপাখিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িসহ দুটি বাড়িতে হামলা, ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও ভাঙচুর চালিয়েছে।
একইদিন সন্ধ্যায় বিনোদপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিশ^নাথপুর গ্রামের ডা. শিমুল এমপির লোকজন ট্রাক প্রতিকের সমর্থক মাহবুব আলমের হাতের আঙ্গুল কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
এছাড়া ওইদিন বিকেলে শিবগঞ্জ পৌর এলাকার পিঠালীতলা মহল্লায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা ট্রাক প্রতিকের সমর্থক ইব্রাহিমের বাড়িতে, ওইদিন ছত্রাজিতপুর ইউনিয়নের বহলাবাড়ি মোড়ে একটি দোকানে হামলা চালিয়ে একজনকে বেধড়ক মারপিট করে, উজিরপুর ইউনিয়নের ট্রাক প্রতিকের একটি অফিসে আগুন দেয়া হয় বলে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়।
তিনি আরো বলেন, এ পর্যন্ত ১২টি বাড়িতে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলেও শিবগঞ্জ থানায় পৃথক পৃথক অভিযোগ করার পরও পুলিশ এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করেনি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ নজরুল ইসলাম, উপজেলা নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ নাজমুল কবির মুক্তা ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আব্দুল আওয়াল গণি জোহা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ (শিবগঞ্জ) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ডাক্তার শামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক দুর্লভপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মুক্তা মিয়া ভিলেজ পলিটিক্স করার কারণে তাদের নিজেদের মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে। আমি যতটুকু জানি এসব হামলার সাথে মুক্তা মিয়ার ভাই কামাল জড়িত।
আর অন্যানজায়গায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হামলার ঘটনা বলছে তা সবই বানোয়াট ও তাদের নিজেদের দ্বন্দ্ব। বরং যারা তাদের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে তারাই উল্টো প্রতিশোধ নিতে হামলা করছে। এসব ঘটনায় তার কোন নেতা বা কর্মী জড়িত নয়। অথচ তার প্রতিপক্ষ প্রার্থী পরাজিত হয়ে ব্যক্তিগত সমস্যাকে রাজনৈতিক রূপ দেয়ার চেষ্টা করছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক।
এসময় উল্টো তিনি অভিযোগ করে বলেন নৌকা সমর্থকদের উপর হামলা মামলা ঘটলেও তার সকল নেতাকর্মীকে চুপ করে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এব্যাপারে শিবগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ সাজ্জাদ হোসেন জানান, এ পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ছোট বড় দিয়ে ৬টি ঘটনা ঘটেছে। একটি অভিযোগ ধর্তব্যের মধ্যে নয়। ৪টি ঘটনার অভিযোগ পেয়েছি। তার মধ্যে ছত্রাজিতপুর, ঘোড়াপাখিয়া ও মোবারকপুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির বাড়িতে হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। মোবারকপুরে নুরজাহান সহ ২ জনের বাড়িতে ভাঙচুর ও হামলার বিষয়টি তদন্তাধীন।
পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা বা আসামী না ধরার বিষয়টি সত্য নয়। অভিযোগে যাদের নাম রয়েছে সবাইকে ধরার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছে। আসামীরা পলাতক থাকায় তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ১০, ২০২৪ | সময়: ৭:২১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ