রাজশাহীর ৬ আসনে এমপি নির্বাচিত হলেন যারা : নতুন মুখ আসাদ, কালাম ও বাদশার চমক

স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। দিনরাত পরিশ্রম করে প্রার্থীরা ভোটারদের মন জয় করতে ছুটি বেড়িয়েছে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি। অক্লান্ত পরিশ্রম। কিন্তু খেলা শেষ একজনই বিজয় হয়। ৪২ জন প্রার্থী ছিলো ভোটের মাঠে। এদের মধ্যে রাজশাহীর ৬টি আসনে বিজয়ী হয়েছেন ৬ জন। ৬টি আসনের মধ্যে চারটিতে পেয়েছে নতুন মুখ। অন্য দুইটিতে থাকছে পুরানো মুখই। রাজশাহীর ৬টি আসনে গড়ে ৪২ শতাংশ ভোট পড়েছে।
রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী): আসনটি নিয়ে এবার আলোচনা একটু বেশি ছিলো। গনমাধ্যমগুলোতে আলোচনার হয়েছে বেশ আসনটি নিয়ে। কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোটের মাঠে ট্রাক প্রতীক নিয়ে নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। তবে ভোট যুদ্ধে ওই আসন থেকে তৃতীয় স্থান অধিকার করেছেন তিনি। আসনটিতে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী (নৌকা প্রতীক)। তিনি ভোট পেয়েছেন এক লাখ ৩ হাজার ৫৯২টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী তানোর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র গোলাম রাব্বানী (কাঁচি প্রতীক)। তিনি ভোট পেয়েছেন ৯২ হাজার ৪১৯টি। ১১ হাজার ১৭৩ ভোটে ওমর ফারুক চৌধুরী নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন।
রাজশাহী-২ (সদর): রাজশাহী সদর আসনটি ঘিরে দুই বাদশার প্রচার লড়াই ছিলো চোখে পড়ার মতো। এ আসনটিতে এবার নতুন মুখ বিজয়ী হয়েছেন। তিনি হলেন, কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা। তিনি ভোট পেয়েছেন ৫৪ হাজার ৯০৬টি। যদিও স্বতন্ত্রপ্রার্থী তবুও স্বাধীনতার পর এই প্রথম আওয়ামী লীগের কোন নেতা এ আসনটি থেকে বিজয়ী হয়েছেন। আসনটিতে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে লড়া বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা বর্তমান সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা। তিনি পেয়েছেন ৩১ হাজার ৪৬৬টি ভোট। এ আসনে মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১১২টি। ভোট পড়ার হার ২৬ দশমিক ৪১ শতাংশ।
রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর): আসনটি হিসেব-নিকাশ অনেকটাই স্পষ্ট ছিলো আগে থেকেই। শক্ত কোন প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন এক লাখ ৫৪ হাজার ৯৪৬ ভোট। তার নিকটতম প্রার্থী ছিলেন লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা আব্দুস সালাম। ভোট পেয়েছেন ৫ হাজার ২৩৫টি।
রাজশাহী-৪ (বাঘমারা): এ আসনটি পেয়েছে নতুন মুখ। নৌকার প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ আসনটি থেকে বিজয়ী হয়েছেন। ভোট পেয়েছেন এক লাখ ৭ হাজার ৯৮৩টি। নৌকা না পেয়ে কাঁচি প্রতীক নিয়ে বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুল হক ছিলেন নিকটতম প্রার্থী। তার মোট ভোট ৫৩ হাজার ৮১২টি।
রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর): রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া-দুর্গাপুর) আসনটিতে ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৬ জন প্রার্থী। তবে ভোটের মাঠে লড়াই চলেছে নৌকা ও ঈগল প্রতীকের মাঝে। নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দুই বারের সাবেক এমপি আব্দুল ওয়াদুদ দারা। ভোট পেয়েছেন ৮৬ হাজার ৯১৩টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় উপ কমিটির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ও জেলা যুবলীগের সহসভাপতি ওবায়দুর রহমানের (ঈগল)। তিনি ভোট পেয়েছেন ৮৩ হাজার ৮৬২টি।
রাজশাহীÑ৬ (বাঘা-চারঘাট): আসনটিতে হ্যাভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রালয়ের ২ বারের প্রতিমন্ত্রী ও তিনবারের সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম। অনুমেয় তিনিই বিজয়ী হয়েছেন। তিনি মোট ভোট পেয়েছেন এক লাখ এক হাজার ৫৯৯টি। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য, চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাহেনুল হক রায়হান। কাঁচি প্রতীকে রাহেনুল হক রায়হান ভোট পেয়েছেন ৭৪ হাজার ২৭৮টি।


প্রকাশিত: জানুয়ারি ৮, ২০২৪ | সময়: ৫:৪৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ