বড়রা ব্যর্থ হলেও পথ দেখালো ছোটরা

স্পোর্টস ডেস্ক: ছেলেদের ক্রিকেটে বড়রা এখন পর্যন্ত যা করতে পারেনি সেটাই করে দেখালো ছোটরা। ২০২০ সালে আকবর আলীর নেতৃত্বে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের পর এবার এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বও অর্জন করেছে বয়সভিত্তিক ক্রিকেট দল। রবিবার ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে আরব আমিরাতকে স্রেফ উড়িয়ে দিয়েছে যুবারা। ২৮৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে সংযুক্ত আরব আমিরাত অলআউট হয়েছে ৮৭ রানে। ১৯৫ রানের বড় জয়ে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো মাথায় দিয়েছে যুব এশিয়া কাপের মুকুট। তাতে যুব বিশ্বকাপের পর এশিয়া কাপ জিতে বড় টুর্নামেন্টে সফল হওয়ার পথটা এই ছোটরাই দেখালো।
দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ নিয়মিত জিতলেও বাংলাদেশ জাতীয় দল বড় টুর্নামেন্টে সাফল্যহীন। সাকিব-মুশফিকরা তিনবার এশিয়া কাপের ফাইনালে খেলেও সাফল্য পাননি। আর বিশ্বকাপের ফাইনালতো দূরের পথ, এখন অব্দি কোয়ার্টার ফাইনালের গণ্ডিই বড়রা পেরুতে পারেনি। বড়দের ব্যর্থতার ভিড়ে এখন আশা দেখাচ্ছে ছোটদের বয়সভিত্তিক ক্রিকেট। এই ছোটরাই সাকিব-মুশফিকদের পথ দেখাচ্ছেন!
প্রথমে গ্রুপ পর্বে জাপান, আরব আমিরাত, শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে দিয়ে বাংলাদেশ যুব দল সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে। যে ভারতের সামনে সাকিব-তামিমরা দুইবার এশিয়া কাপের শিরোপা খুঁইয়েছেন, সেই দেশটির যুব দলকে হারিয়েই বাংলাদেশ শিরোপা জয়ের পথটা সুগম করেছে।তার পর শিরোপা মঞ্চে তো বাংলাদেশের সামনে স্রেফ উড়ে গেছে স্বাগতিকরা।
ফাইনালে বাংলাদেশ এই অসাধ্য সাধন করেছে মাত্র দ্বিতীয় টেষ্টায়। এর আগে ২০১৯ সালে প্রথমবারের মতো এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলে ভারতের কাছে হেরে শিরোপা বঞ্চিত হয়েছিল আকবর-শামীম-জয়রা।
রবিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে স্বাগতিকদের ২৮৩ রানের বড় লক্ষ্য দেয় বাংলাদেশ। কঠিন এই লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই খেই হারায় সহযোগী সদস্যের ক্রিকেট খেলুড়ে দেশটি। রোহানাত দৌল্লা বর্ষণ, ইকবাল হোসেন ইমন ও মারুফ মৃর্ধার দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করে স্বাগতিকরা। ধ্রুব পরাশর এক প্রান্ত আগলে রেখে লড়াই না করলে আরও আগে থামতো আরব আমিরাতের ইনিংস। ধ্রুবর ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ২৫ রানের অপরাজিত ইনিংস। এছাড় অক্ষত রায়ের ব্যাট থেকে আসে ১১ রান। এর বাইরে কেউই দুই অঙ্কের ঘরে পৌঁছাতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ রান আসে অতিরিক্ত খাত থেকে।
পুরো টুর্নামেন্টে অসাধারণ বোলিং করা বাংলাদেশের বোলাররা আজও ছিলেন অসাধারণ। আগ্রাসী ব্যাটিংয়ের পর বাংলাদেশের বোলারদেরও আক্রমণাত্মক রূপ দেখা গেছে। দুই পেসার বর্ষণ ও মারুফ তিনটি করে উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া ইকবাল হোসেন ও শেখ পারভেজ জীবন নেন দুটি করে উইকেট।
দুবাইয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনালে টস জিতে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন আমিরাত অধিনায়ক আয়ান আফজাল খান। স্বাগতিক বোলাররা দারুণ বোলিংয়ে শুরুতে চেপে ধরলেও শেষ অব্দি ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। শিবলির সেঞ্চুরি এবং চৌধুরী মোহাম্মদ রিজওয়ান ও আরিফুল ইসলামের জোড়া হাফসেঞ্চুরিতে ৮ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ২৮২ রান। তরুণ ওপেনার শিবলি পুরো টুর্নামেন্টেই দারুণ ব্যাটিং করেছেন। জাপানের বিপক্ষে সেঞ্চুরির পর আজ আরও একটি সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন তিনি।
১২৯ বলে ১০টি চারে সেঞ্চুরি দেখা পাওয়া শিবলি থেমেছেন ১২৯ রানে। ইনিংস শেষ হওয়ার দুই বল আগে লম্বা শট খেলতে গিয়ে বাউন্ডারি লাইনে তালুবন্দি হয়েছেন তিনি। ১২ চার ও ১টি ছক্কায় ১৪৯ বলে নিজের ইনিংসটি সাজান শিবলি। টুর্নামেন্টে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ৫ ম্যাচে দুই সেঞ্চুরি ও দুই হাফ সেঞ্চুরিতে শিবলি টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ৩৭৮ রান করেছেন।


প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩ | সময়: ৬:৩৩ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ