শুক্রবার, ১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৬শে আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
স্পোর্টস ডেস্ক: প্রথমার্ধে দারণ খেললো আবাহনী লিমিটেড। একের পর এক গোলের সুযোগ পেয়েও দুর্ভাগ্য যে, তা কাজে লাগানো যায়নি। বসুন্ধরা কিংসও পাল্টা জবাব দিয়েছে। তবে চমক অপেক্ষা করছিল বিরতির পরই। এবার একদম উল্টো চিত্রের অবতারণা। কিংস প্রায় একপেশে ম্যাচে দাপট দেখিয়ে ধসিয়ে দিয়েছে আবাহনীকে। স্বাধীনতা কাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অস্কার ব্রুজনের দল ৪-০ গোলে আকাশী-নীলদের উড়িয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছে।
শুক্রবার কিংস অ্যারেনাতে আবাহনী শুরু থেকে আধিপত্য দেখাতে থাকে। জোনাথন-হৃদয়রা মধ্যমাঠের দখল অনেকটা নিয়ে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত কিংসের ওপর চড়াও হয়েছিল। যেভাবে তারা খেলছিল তাতে করে মনে হচ্ছিল গোল বুঝি সময়ের বিষয়। কিন্তু ফিনিশিং ব্যর্থতায় ও কিংস গোলকিপার মেহেদী হাসান শ্রাবণের দৃঢ়তায় গোলের মুখ দেখা যায়নি।
ম্যাচ ঘড়ির ৪ মিনিটে আবাহনী প্রথম সুযোগ পায়। ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার ওয়াশিংটন প্রায় ৪০ গজ বল টেনে নিয়ে বক্সে ঢুকে কোনাকুনি শট নিলেও তা প্রায় পোস্ট ঘেঁষে যায়। দুই মিনিট পর আরেক ব্রাজিলিয়ান জোনাথনের ফ্রি কিক গোলকিপার শ্রাবণ ফিস্ট করে ক্লিয়ার করেন।
৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে নিয়ে দারুণ শট নিয়েছিলেন জোনাথন। তবে তা সরাসরি গোলকিপারের হাতে জমা পড়ে। ফাঁকে ফাঁকে কিংস কয়েকবার আক্রমণে গিয়েছিল। ১০ মিনিটে রবিনহোর শট গোলকিপার পাপ্পু হোসেন এক হাত উঁচিয়ে কোনোমতে রক্ষা করেন। ১৬ মিনিটে ডান প্রান্ত দিয়ে বোবুরবেককে টপকে ওয়াশিংটন বক্সে ঢুকে জোরালো শট নিয়েছিলেন, তবে গোলকিপার শ্রাবণ সেভ করেন।
২১ মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে এক ভুল পাসে কিংসের শেখ মোরসালিন বল পেয়ে আগুয়ান গোলকিপার পাপ্পুকে কাটিয়ে ফাঁকায় ঠিকঠাক শট নেন। কিন্তু জোনাথন দৌড়ে গিয়ে নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে দেন। তিন মিনিট পর এমেকা ওগবাগ বক্সের বাইরে থেকে জায়গা করে নিয়ে জোরালো শট নিয়েছিলেন। তবে গোলকিপার শ্রাবণও দারুণভাবে তা রুখে দেন। ২৬ মিনিটে জোনাথন ফাঁকায় বক্সের ভেতরে বল পেয়ে গোলকিপারের শরীরে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন। একই ধারায় ওয়াশিংটনের হেডও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।
বিরতির আগে কিংস ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে। তবে গোল আসেনি। ৩৮ মিনিটে মিগেলের সঙ্গে ওয়ান টু খেলে দোরিয়েল্তনের স্লাইডিং শট লক্ষ্যে থাকেনি। বিরতির পর কিংসের আক্রমণের মুখে আবাহনীর রক্ষণ হুড়মুড় করে ভেঙে যায়। একের পর এক গোলও আসতে থাকে। চার গোলের সবই এসেছে এই অর্ধে।
৪৮ মিনিটে কিংস প্রথমবার এগিয়ে যায়। মধ্যমাঠ থেকে বল নিয়ে মিগেলের সঙ্গে ওয়ান টু খেলে বক্সে ঢুকে বাঁ পায়ের দারুণ এক শটে মোহাম্মদ সোহেল রানা গোলকিপারকে পরাস্ত করেন। ৫৩ মিনিটে মিলাদের ভুল পাসের বল ধরে দুই ডিফেন্ডারকে টপকে ডান দিক থেকে কোনাকুনি শটে নেন, গোললাইন অতিক্রম করার আগে দোরিয়েলতন আলতো টোকায় জড়িয়ে দেন জালে।
দুই গোলে পিছিয়ে থেকে আবাহনী কিংসের আঁটসাট রক্ষণ ভেদ করতে পারেনি। ৬৮ মিনিটে রয়েলের শট পোস্টের অনেক দূর দিয়ে যায়। একটু পর তার নেওয়া আবারও শট বাইরের জাল কাঁপায়। রবিউল ও জীবন বদলি নেমেও কিছুই করতে পারেননি। ৭৭ মিনিটে কিংস তিন গোলে এগিয়ে যায়। সাদ উদ্দিনের ক্রসে মিগেল ফাঁকায় দারুণ হেডে গোলকিপারকে পরাস্ত করেন। ম্যাচ শেষ হওয়ার দুই মিনিট আগে পেনাল্টি পায় কিংস। ৮৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে রবিনহো সহজেই দলকে ৪-০ গোলে জয় নিশ্চিত করেন।
কিংস অ্যারেনার গ্যালারিতে সমর্থকরা নানান টিফো নিয়ে এসেছিলেন। বিজয় দিবসসহ এএফসি কাপের নানান দিক ছিল তাতে। তবে এরই মাঝে কিংস ১৮ ডিসেম্বরের ফাইনাল নিশ্চিত করেছে, প্রতিপক্ষ মোহামেডান। অন্য দিকে আর্জেন্টিনা কোচ দিয়েগো ক্রুসিয়ানির অধীনে বড় ব্যবধানে হারের লজ্জা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে আকাশী-নীলদের।