পবা-মোহনপুর হবে আধুনিকায়নের মডেল : আসাদ

স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে রাজশাহীর-৩(পবা-মোহনপুর) আসন থেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মোহা: আসাদুজ্জামান আসাদ। বুধবার দুপুরে দৈনিক সানশাইন এর সাথে একান্ত সাক্ষাতকালে জানিয়েছেন পবা – মোহনপুর নিয়ে নিজের একান্ত চিন্তাভাবনা ও পরিকল্পনার কথা।
সানশাইন : দলের কোন পদে না থেকেও আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় সংসদ সদস্য পদে নির্বাচিত হওয়ার লক্ষ্যে মনোনয়ন পেয়েছেন কিভাবে ব্যাখা করবেন :
আসাদ : আমি আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চির কৃতজ্ঞ কারণ রাজশাহীর পবা-মোহনপুর আসনে সংসদীয় নির্বাচন করার জন্য আমাকে মনোনীত করেছেন। আমি গত ৩৪ বছর ধরে রাজনীতির সাথে জড়িত। একবারে তৃনমূল ছাত্রলীগ, যুবলীগ, তারপর আওয়ামী লীগের সংগঠন করেছি। আমার রাজনীতির অতীত ও বর্তমান পথচলাকে মূল্যায়ন করেই দলের পক্ষ থেকে মনোনয়ন দেয়া হয়েছে। পবা মোহনপুরের মানুষের যে প্রত্যাশা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সে প্রত্যাশা গ্রহণ করে আমাকে নৌকার মাঝি হওয়ার জন্য দলীয় মনোনয়ন দিয়েছেন। আমার এ মনোনয়ন পাবার জন্য অনেকের মধ্যে অন্যতম আরেকজন মানুষ রয়েছে যার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। তিনি রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জননেতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
সানশাইন : পবা-মোহনপুর আসনে জয়লাভ করলে কিভাবে সার্বিক উন্নয়ন করা সম্ভব বলে মনে করেন ?
আসাদ : পবা – মোহনপুর এলাকা একটি সম্ভাবনাময়ী একটি জায়গা। এখানে অনেক শাখা নদী,উপনদী রয়েছে। এ নদীগুলো এখন খালে ডোবায় পরিণত হয়েছে। এ নদীগুলোকে সংস্কার করলে এক দিকে বিনোদন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব, অপরদিকে পাশর্^বর্তী অঞ্চল থেকে পণ্য পরিবহনের সুযোগ সৃষ্টি তৈরি হবে। যেটি অর্থনীতিতে একটি বড় যোগান হবে বলে আমি বিশ^াস করি।
এছাড়া মোহনপুরের পান সারাবিশে^ বিখ্যাত, এছাড়া আম, আলু, সবজি মিলিয়ে যে পরিমান কৃষি পণ্য এখানে উৎপাদিত হয় এখানে কৃষির সাথে সংশ্লিষ্ট ছোট ছোট কারখানা গড়ে তোলার ব্যাপক সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া হযরত শাহমুখদুম বিমানবন্দরকে আরো বড় পরিসরে তৈরি করে যাত্রী উঠানামার পাশাপাশি কার্গো বিমানবন্দর রুপে ব্যবস্থা করতে পারলে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মান ব্যাপকভাবে পরিবর্তন ও কর্মসংস্থানের বেশ ভালো একটা ক্ষেত্র তৈরি হবে। সকল মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করা একার পক্ষে সম্ভব নয়। নিজেদের জীবনমান পরিবর্তনে নিজেদের চেষ্টা করতে হবে। আমি যদি সংসদ সদস্য হতে পারি তবে দিক নির্দেশনা বা পথ প্রদর্শক হয়ে দেখিয়ে দিতে পারবো এই দুই উপজেলার মানুষের উন্নত জীবনযাপনে ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে। সরকারি সহায়তার ব্যবস্থা আমি করবো।
এখানে ইপিজেড অথবা অর্থনৈতিক জোন তৈরি করতে হবে। রাজশাহীর এ অঞ্চলে অনেক খাস জায়গা রয়েছে সেই জায়গাগুলোতে যদি সকলের সহায়তায় কৃষি সম্পর্কিত কারখানা গড়ে তুলে আম, আলু, টমেটো, শাকসবজি,পানসহ অন্যান্য ফসলগুলোকে প্রসেসিং করে দেশে ও বিদেশে পাঠানোর মতো পরিবেশ তৈরি করা গেলেই পবা-মোহনপুর এ দুই উপজেলা শুধু নয় উত্তরাঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনমানের সার্বিক উন্নয়ন করা সম্ভব। এছাড়া উন্নয়নের যে মহাসড়কে দেশ চলছে সেই রাস্তা আরো প্রসারিত হবে।
সানশাইন: পবা-মোহনপুরের মানুষের কেমন প্রতিক্রিয়া দেখেছেন ?
আসাদ : আমি মঙ্গলবার বেলা ১২ টার পর যখন রাজশাহী বিমানবন্দরে আসি এতো মানুষ সেখানে দাড়িয়ে অপেক্ষা করেছিল ও তাদের চোখে মুখের ভাষা আমি দেখতে পেয়েছি তাতে আমি তাদের আশার প্রতিফলন কতোটুকু দিতে পারবো নির্বাচনে বিজয়ী হলে সেটি নিয়ে আমি কিছুটা চিন্তিত। পবা-মোহনপুরবাসীর ভোটাররা যদি আস্থা ভালোবাসা রেখে আমাকে বিজয়ী করে,আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি আবারো পুনরায় প্রধানমন্ত্রী হোন তবে উপরোক্ত বিষয়গুলো নিয়ে আমি অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে সরকারের সাথে আলোচনা করে এই কাজগুলো করতে চাই।
সানশাইন : আমরা দেখেছি এ দুই উপজেলার আপনাদের দলের অনেক নেতাকর্মি প্রকাশ্যে বর্তমান এমপির বিরুদ্ধে অনেক আগে থেকেই অবস্থান নিয়েছিলেন আপনার কি ধারণা ?
আসাদ : আমার জানা মতে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মিই ক্ষুদ্ধ ও কষ্টে ছিলেন। আমি মনোনয়ন নিয়ে রাজশাহীতে আসার পর দেখেছি বিমানবন্দরে মানুষের স্বতস্ফুর্ত ঢল। এরা কিন্তু আওয়ামী লীগের নিবেদিত ও ত্যাগী নেতাকর্মি। এখানে হাইব্রিড কোন নেতৃবৃন্দকে আমি দেখিনি। সঙ্গত কারণেই পবা-মোহনপুরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। আমি বিশ^াস করি আসন্ন নির্বাচন নিয়ে আমি যতোটুকু ব্যস্ত হয়ে আছি তার চেয়ে কয়েকগুন আমার পবা- মোহনপুরের ত্যাগী নেতাকর্মিরা আরো বেশি ব্যস্ত নির্বাচন নিয়ে। এই অভূতপূর্ব সাড়া শুধু দলীয় সাড়া নয়, সকল সাধারন মানুষরা একটি রায় দেয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে রয়েছেন।
সানশাইন : স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের অনেকেই নির্বাচন করবেন কিভাবে বিষয়টি দেখছেন :
আসাদ : যেহুতু প্রধানমন্ত্রী একটি সিগন্যাল দিয়ে রেখেছেন দলের যে কেও সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করতে পারবে এখানে আমার কোন ধরণের আপত্তি থাকতে পারেনা। তবে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন পরবর্তীতে আমরা সবাই আবারো এক আওয়ামী লীগের কর্মি হিসেবে যেনো থাকতে পারি সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি দিতে আহ্বান থাকবে আমার।


প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২৩ | সময়: ৬:৫৫ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ

আরও খবর