লাগামহীন বাজার অসহায় ক্রেতা

ওয়াসীম আকরাম, মান্দা: নওগাঁর মান্দায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে সবধরণের শাক-সবজির দাম। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে দ্বিগুন দামে বিক্রি হচ্ছে আলু। নিয়ন্ত্রণ নেই পেঁয়াজের বাজারে। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কাঁচা মরিচের দাম।
প্রতিদিন এভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকায় মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। অনেকেই আয়ের সঙ্গে ব্যয় মিলাতে পারছেন না। বাজার তদারকি না থাকায় ফায়দা লুটছেন অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট।
ভোক্তাদের অভিযোগ, বাজারে প্রতিদিনই বাড়ছে সবধরণের সবজির দাম। এতে বাজারে গিয়ে ভোক্তাদের নাভিশ্বাস উঠছে। আজকের বাজারের সঙ্গে আগামিকালের বাজারের কোনো মিল থাকছে না। তাই হিসাব কষে অল্প অল্প করে পণ্য কিনে বাড়ি ফিরতে হচ্ছে।
বাজারে প্রশাসনের তদারকি না থাকায় ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো প্রত্যেকটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন। প্রয়োজনের তাগিদে নিরুপায় ক্রেতারা বাধ্য হচ্ছেন বাড়তি দামেই পণ্য কিনতে। সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের তোয়াক্কা করছেন না ব্যবসায়ীরা।
সরজমিনে উপজেলার দেলুয়াবাড়ি, সাবাই, চৌবাড়িয়া, প্রসাদপুরসহ বিভিন্ন হাটবাজারে গিয়ে অত্যন্ত চড়া দামে নিত্যপণ্য বিক্রি হতে দেখা গেছে। এসব হাটবাজারে প্রতি কেজি বেগুন ১২০ টাকা, আলু ৬০ টাকা, পটল প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কচু ১০০ টাকা, ঢেঁড়শ ও করল্যা ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকা, কাঁকরুল, বরবটি ও শসা ৮০ টাকা এবং কাঁচা কলা ৩০ টাকা হালি বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৮৫ টাকা, রসুন ও আদা ২৬০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৫০ টাকা, জিরা ১২০০ টাকাসহ ব্যাপক বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরণের মসলা জাতীয় পণ্য।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, কাঁচা সবজির বাজারদর আমদানির ওপর নির্ভর করে। দীর্ঘদিন বর্ষার কারণে সবজির খেত নষ্ট হয়ে যাওয়ায় প্রত্যেক দিনই দাম বাড়ছে। বাজারে পেঁয়াজসহ অন্যান্য পণ্যের আমদানি একইভাবে কমে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। নতুন ফসল বাজারে না আসা পর্যন্ত দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই।
উপজেলার দেলুয়াবাড়ি হাটে সবজি কিনতে আসা এনামুল হক বলেন, শনিবার হাটে ৮০ টাকায় এককেজি বেগুন ও ৭০ টাকায় কিনেছে এককেজি পেঁয়াজ। গতকাল সোমবার সেই বেগুন কিনতে হচ্ছে ১২০ টাকা ও পেঁয়াজ কিনতে হল ৮৫ টাকা দরে। মাত্র একদিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি বেগুনে বেড়েছে ৪০ টাকা ও পেঁয়াজে বেড়েছে ১৫ টাকা।
উপজেলার শামুকখোল গ্রামের আনিছার রহমান বলেন, বাজারে সবধরণের পণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। সেই তুলনায় ধানের দাম বাড়েনি। এক মণ ধান বিক্রির টাকায় এক সপ্তাহের বাজার করা যাচ্ছে না। মিলছে না এক কেজি ইলিশ মাছ। বর্তমান বাজারে আয়ের সঙ্গে ব্যয়ের মিল না থাকায় এ অঞ্চলের কৃষক চরম বেকায়দায় পড়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইউএনওর দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জাকির মুন্সী বলেন, বিষয়টি শুনেছি। আলু, পেঁয়াজসহ সবধরণের পণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হবে।


প্রকাশিত: অক্টোবর ১০, ২০২৩ | সময়: ৫:১১ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ