সর্বশেষ সংবাদ :

জয়পুরহাটের বানিয়াপাড়া খাল সংস্কারের অভাবে ফসলহানি

মতলুব হোসেন, জয়পুরহাট: জয়পুরহাট সদর উপজেলার কোমরগ্রাম হতে বানিয়াপাড়ার খালের সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ জায়গার বিভিন্ন অংশ সরু হয়ে গেছে। খালটি সংস্কারের অভাবে এর বিভিন্ন অংশে কচুরিপানা-আগাছায় ভরে গেছে। জলের স্রোত কমে খালটির অবস্থা জবুথবু। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলেই দ্রুত নিষ্কাশনের অভাবে এখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এর প্রভাবে কোমরগ্রাম থেকে বানিয়াপাড়া ফসসলি মাঠের শতাধিক বিঘা জমি জলাবদ্ধতার কবলে পড়ে। এতে ধান, আলু, লাউ, তরমুজসহ বিভিন্ন সবজির উৎপাদন ব্যহত হয়। এ অবস্থায় খালটি সংস্কারের দাবি জানান ভুক্তভোগী কৃষক ও এলাকাবাসী।
জয়পুরহাটের কোমরগ্রামের কৃষক ওয়ারেছ বলেন, অতিরিক্ত জলাবদ্ধতার কারণে ধানের ফলন কম হয়। আমরা জমিতে আগাম জাতের আলু রোপণ করতে পারি না। ফসল উত্তোলন মৌসুমে আগাম আলুর দাম থাকে ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকা মণ। জলাবদ্ধতার কারণে জমিতে অতিরিক্ত রস থাকায় ১২ থেকে ১৬ দিন পরে আলু লাগাতে হয়। জমি থেকে আলু তুলতেও দেরি হয় ১২-১৬ দিন। ততদিনে আলুর দাম কমে যায়। ফলে আমাদের আলু বিক্রি করতে হয় ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা মণ দরে।
সদর উপজেলার বুম্বু ইউনিয়ানের ঘোনাপাড়া গ্রামের আরেক কৃষক মোসলেম উদ্দিন জানান, কোমরগ্রাম থেকে বানিয়াপাড়ার খালের বানিয়াপাড়া এলাকায় চলতি মৌসুমে তিনি ২৮ শতক জমিতে লাউ, চিচিংগা, ঢেড়স এবং করলা চাষ করেছেন। গত সপ্তাহের টানা বর্ষণে তার সেই খেতে ওই খালের পানি প্রবেশ করে। এতে তার সবজি খেতে পানি জমি জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
এতে সঠিক সময়ে ফসল তুলতে না পারায়া, জমির অন্তত ৩০০ টি লাউ বুড়ো (ক্যাট) হয়ে বিক্রির অনুপযুক্ত হয়। আর পাঁচ শতাধিক জালি নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিটি লাউ তিনি ২০ থেকে ২৫ টাকা দরে বিক্রি করতে পারতেন। এতে তাঁকে অন্তত ২১ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হবে।
অনুরূপ মন্তব্য করে খালটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন ঐ এলাকার কৃষক- মোবিনুল ইসলাম, নুরুন্নবী, নুরুল ইসলাম, তসলিম উদ্দিন, বাদেশ আলীসহ অনেকে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোলায়মান আলী বলেন, কোমরগ্রাম থেকে বানিয়াপাড়ার খালটি সংস্কার করা খুব জরুরি। এটি সংস্কারের জন্য মোটা অংকের অর্থের প্রয়োজন। উপজেলা পরিষদের ২-৩ লাখ টাকার ফান্ড দিয়ে এটি বাস্তবায়ন করা কষ্টকর। তবে খালটি সংস্কারের বিষয়টি আমি জেলা আইন শৃঙ্খলা ও সমন্বয় সভায় তুলে ধরব। যাতে করে এ খালটি-এলজিইডি, বিএমডিএ, জেলা পরিষদ বা সওজ থেকে সংস্কার করা হয়।’
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জয়পুরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সরেজমিন পরিদর্শন করে, খালটি সংস্কারের জন্য প্রকল্পভুক্ত করা হবে এবং এ কাজ বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তবনাও পাঠানো হবে।


প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৩ | সময়: ৬:৩৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ