সর্বশেষ সংবাদ :

গ্রীষ্মে প্রকৃতি রাঙানো জারুলফুলের বেগুনি রঙে সেজেছে রাবি ক্যাম্পাস 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : 
গ্রীষ্মের প্রখর তাপদাহে তেতে উঠেছে রাবি ক্যাম্পাস। প্রখর এই তাপদাহের মাঝেই মনমুগ্ধকর বেগুনি রঙের জারুলফুলের সৌন্দর্যে ছেয়ে গেছে ক্যাম্পাসের চারদিক। চলতি পথে হঠাৎ করেই পথিকের চোখে এনে দিচ্ছে শিল্পের দ্যোতনা। মন ছুঁয়ে রঙিন দৃষ্টিতে অবাক হয়ে সেই সৌন্দর্য উপভোগ করছে সবাই। এমনই নয়নাভিরাম জারুল ফুলের মায়ায় জড়িয়েছে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যাপীঠ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। তাইতো কবি বলেছেন,”জারুল সত্যিই একটি চেয়ে থাকার মতো ফুল।”

 

 

গ্রীষ্মের শুরুতেই এই বিশাল ক্যাম্পাস যেন বেগুনি রঙে ছেয়ে গেছে। যা দেখে মনে হচ্ছে এ যেন জারুল ফুলের এক বৃহৎ আড্ডা স্থল। সবুজ প্রকৃতির মধ্যে রোদ ঝলমলে জারুল গাছগুলোয় শোভা পা”েছ গাঢ় বেগুনি রঙের ফুল। চলার পথে পথিক থমকে দাঁড়িয়ে উপভোগ করছেন জারুল ফুলের বেগুনি রঙের আভা। থোকা থোকা ফুলগুলোও যেন চোখ ধাঁধিয়ে শিক্ষার্থীসহ সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।
ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও সত্যেন্দ্রনাথ বসু অ্যাকাডেমিক ভবন, পশ্চিমপাড়া এলাকায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা হল, পরিবহণ মার্কেটে এনামুল ভাইয়ের চায়ের দোকানের উপরে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, পূর্বপাড়া মসজিদের সামনের রাস্তার ধারে, বধ্যভূমি এলাকার পুকুর পাড়ে এবং চারুকলা চত্বরসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় রঙ ছড়াচ্ছে চোখ জুড়ানো জারুলফুল।

 

জারুল ফুলের বর্ণ-বৈচিত্র লক্ষণীয়। গ্রামবাংলায় জারুল গাছ একটি অতি পরিচিত নাম। প্রকৃতিকে মাতিয়ে রাখতে জারুল ফুলের কোনো জুড়ি নেই। পাপড়ির নমনীয় কোমলতায় দৃষ্টিনন্দন বর্ণ”ছটা নিয়ে প্রকৃতিকে আরও সুন্দর করে সাজিয়ে তোলে জারুল ফুল। পাতাঝড়া বড় আকারের বৃক্ষ। বাকল মসৃণ ও রং ধূসর বা পিতাভ ধূসর। ফুল বেগুনি। গাছের উ”চতা ৮০ থেকে ১০০ ফুট বা তদূর্ধ্ব। উদ্ভিদ বিজ্ঞান অনুযায়ী জারুল লিথ্রাসি গোত্রের উদ্ভিদ। এর অর্থ সুন্দর-শোভন। ইংরেজি নাম কুইন ফ্লাওয়ার। এর বৈজ্ঞানিক নাম লিরগার্সট্রোমিয়া স্পোসিওসা।

 

 

 

জারুলকে বাংলার চেরি বলা হয়। কী অপূর্ব হয়ে ফোটে। চোখ ভরে যায় তার রূপে। জারুল যেন বেগুনি আগুন। আমাদের কেন জারুল উৎসব হয় না, চেরি উৎসবের মতো। একপাশে জারুল, আরেক পাশে কৃষ্ণচূড়া, একটু না হয় সোনালু। আহ্ কি অপূর্ব। কী অপূর্ব তার শোভা এবং আকর্ষণ।

 

জারুল ফুলের এই মনমুগ্ধকর সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ইশরাত জাহান বলেন, ফুল পছন্দ নয় এমন মানুষ খুব কমই পাওয়া যায়। এর মধ্যে জারুল ফুল প্রায় সকলেরই পছন্দের। ক্যাম্পাসে পড়াশোনার ব্যস্ততায় শত ক্লান্তিতেও জারুলফুলের রঙিন সৌন্দর্যে মুহুর্তেই মন ভালো হয়ে যায়। প্রেমময় এই ঋতুতে জারুল ফুল যেন অপরূপ এক সৌন্দর্যের প্রতি”ছবি।
ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আনিকা শারমিলা বলেন, জারুল ফুল আমার প্রিয় ফুলগুলোর একটি। যখন চারদিকে তাকিয়ে দেখি জারুল ফুলে ছেয়ে গেছে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস তখন যেন মুহুর্তেই মন ভালো হয়ে যায়। আমার মতে জারুলফুল আমাদের মনে প্রশান্তি দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের শিক্ষার্থী রোজেলিন তাসনিম বলেন, বৈশাখ মাসের তীব্র গরমে বরাবরের মতো প্রাকৃতিকভাবে সেজে উঠছে ক্যাম্পাস। গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ঝাঁক বেঁধে দেখা মিলছে জারুল, কৃষ্ণচূড়া, সোনালু প্রভৃতি গ্রীষ্মকালীন ফুল। বেগুনি রঙের জারুল ফুলেরা কেড়ে নিচ্ছে শিক্ষার্থীদের মুগ্ধ দৃষ্টি। গাছের নিচে ফুলের পাপড়ি ঝরে তৈরি হচ্ছে নৈসর্গিক সৌন্দর্য।

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: মে ৬, ২০২৪ | সময়: ৬:৪২ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine