সঞ্চয়পত্রের মুনাফা দিতে পারছে না ডাক বিভাগ,অন্ধকারে পোষ্ট মাষ্টার !

স্টাফ রিপোর্টার,বাঘা :

রাজশাহীর বাঘা উপজেলা সদরে অবস্থিত বাঘা ডাকঘর। মঙ্গলবার(৩-অক্টবর) দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার টাকা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন বেশ কয়েকজন গ্রাহক। এদের একজন শাজাহান সরকার। তিনি গত ছয়মাস পূর্বে বই জমা দিয়েছেন। তারপরেও মুনাফার টাকা উত্তোলন করতে পারেননি।

 

 

 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সরকারে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের একটি অধিদপ্তর হচ্ছে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ। সারা দেশে এই অধিদপ্তরের মাধ্যমে হাজার-হাজার পোস্ট অফিস সু-বিস্তৃত নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করেছে। এই নেটওয়াকের মাধ্যমে তারা বহুমুখী মৌলিক ডাক সেবা এবং আর্থিক ও তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক ডিজিটাল সেবা প্রদানে নিবেদিত। এমনটি ওয়াদা সরকারের। কিন্তু বাস্তব অর্থে সেটি বাস্তবায়ন হচ্ছেনা। এ জন্য সাধারণ মানুষ কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাকে দায়ি করছেন।

 

 

অনুসন্ধ্যানে জানা গেছে, বাংলাদেশ ডাক বিভাগ কোন এক সময় দেশের জনসাধারণের উদ্দেশ্যে বলে ছিলেন, খরচের জন্য মাসে মাসে টাকা দরকার ? এমন কোনো নিশ্চিত বিনিয়োগের জায়গা খুঁজছেন ? জায়গা কিন্তু  আছে। ব্যাংকে স্থায়ী আমানত নয়, উচ্চ সুদে আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও টাকা রাখা নয়। ডাকঘরে চলে আসুন। বিভাগীয় শহর থেকে উপজেলা পর্যন্ত সব জায়গাতেই আছে এই ডাকঘর। তাদের এই কথা শুনে লক্ষ-লক্ষ মানুষ ডাক বিভাগে পাঁচ প্রকারের সঞ্চয় পত্র খুলে বসে আছেন। উদ্দেশ্য মেয়াদ শেষ হলে এক সাথে অনেক গুলো টাকা পাবেন। তবে টাকা পেতে মাসের-পর মাস ভোগান্তি পোহাতে হবে এটি কারো জানা ছিলো না।

 

 

বাঘার আমোদপুর গ্রামের আফসানা বেগম ডাকঘর মুনাফার টাকা পেতে ভোগান্তির অভিযোগ করে বলেন, আমি বাঘা পৌষ্ট অফিসে ৭ বছর মেয়াদী একদিনে ৬০ হাজার টাকা জমিয়ে ছিলাম। আমার মেয়াদ তিন মাস পূর্বে শেষ হয়েছে । কিন্তু বাঘা পৌষ্ট অফিস এখন পর্যন্ত আমাকে টাকা দিতে পারছে না। আমি অফিসে গেলে তারা জানায় , আপনার বই রাজশাহী জিপিও-তে পাঠিয়েছি । সেখান থেকে বই এলে তবেই টাকা পাবেন। অনুরুপ কথা বলেন আরো অনেক ভুক্তভুগী।

 

 

এদিকে মামুন হোসেন নামে এক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বললেন, আমি একটি চাকরির আবেদন করে ছিলাম। যে তারিখে পরীক্ষা, ঠিক সেদিন চিঠি পেলাম। যদি এই চিঠিটা দু’দিন আগে পেতাম তাহলে পরীক্ষায় অংশ নিতে পারতাম। এ গুলো ডাক বিভাগের গাফলতি ছাড়া আর কিছু নয়।

 

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাঘা পোষ্ট মাষ্টার একরামুল হক বলেন, আমরা এখন অন্ধকার জগতে বসবাস করছি। লোকবল সংকটের কারনে এ অফিসের দুইশো গ্রাহক এক থেকে ছয়মাস যাবত টাকা না পেয়ে দিনের পর দিন হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। এটি আমার নিজের কাছেও খারাপ লাগছে। তিনি বলেন, আমাদের অফিসে লোকবল দরকার ৬ জন। অথচ আছে মাত্র দু’জন। একই অবস্থা রাজশাহী জিপিওতে। সেখানে বই দেখার দায়িত্বে রয়েছেন মাত্র একজন কর্মকর্তা। তার কাছে রাজশাহী সিটি-সহ ৯ টি উপজেলার পাঁচ প্রকার সঞ্চয় পত্রের বই জমা হচ্ছে। কিন্তু একা মানুষ কতই-না কাজ করবে ? এ কারনে গ্রাহকরা দিনের পর দিন হয়রানীর শিকার হচ্ছে। তিনি এ সমস্যা নিরসনে ডাক বিভাগের উর্ধতন কতৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।

 

 

এ বিষয়ে রাজশাহী ডাক বিভাগ(জিপিও)’র ডেপুটি পোষ্ট মাষ্টার বেলাল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, লোকবল সংকট রয়েছে এ কথা সত্য। তবে আমাদের বিভাগে পাঁচ প্রকার সঞ্চয় পত্র খোলা হয়। যেমন-তিন মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয় পত্র,পরিবার সঞ্চয় পত্র, প্রেনশন সঞ্চয় পত্র ,স্থায়ী আমানত হিসাব এবং সাধারণ হিসাব। এর মধ্যে স্থায়ী আমানত হিসাব এবং সাধারণ হিসাব এর বই গুলো পাঠাতে একটু সময় বেশি লাগে। তবে এ সমস্য খুব শির্ঘ্রই সমাধান করা হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সানশাইন / শামি


প্রকাশিত: অক্টোবর ৩, ২০২৩ | সময়: ৫:৪৭ অপরাহ্ণ | Daily Sunshine

আরও খবর