তানোরে মোটরসাইকেল চুরির হিড়িক, আতঙ্কে মালিকরা

বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা মহিলা দাখিল মাদ্রাসার অফিস সহকারী একরামুল হক। ২৫ আগস্ট শুক্রবার তার ডিসকভারী ১২৫ সিসি মোটরসাইকেল (নবাব হ-৫৬৬১) গাড়ী মুন্ডুমালা পৌর বাজারে বড় মসজিদের পাশে রেখে জুম্মা নামাজ পড়তে ঢোকেন। নামাজ শেষ করে এসে দেখেন তার মোটরসাইকেলটি সেখান থেকে চুরি হয়েগেছে।
এর মাত্র পাঁচ দিন আগে ২০ আগস্ট আব্দুল জলিল নামে বাধাইড় ইউপির এক গ্রাম্য চকিদারের হিরো গ্লেমার মোটরসাইকেল (নবাব-হ ১৩-৬৮৭৯) গাড়ীটি বাজারে গোল চত্বরে রেখে চা খেতে হোটেলে ঢোকেন। ৫ মিনিট পরে এসে দেখেন তাই বাইকটি চুরি হয়ে গেছে। সেই দিনই মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে চুরির একটি লিখিত অভিযোগ দেন এখন পর্যন্ত কোন হদিস করতে পারেনি পুলিশ।
এ চুরির ঘটনা শুধু মাদ্রাসার অফিস সহকারী একরামুল হক আর গ্রাম্য চকিদার আব্দুল জলিলের একাই নয়, মুন্ডুমালা বাজার হতে মোটরসাইকের চুরির ঘটনা এখন নিত্য দিনের অঘটন।
চলতি আগষ্ট মাসেই বাজারে থেকে চারটি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে। আর গত এক বছরে শুধু মুন্ডুমালা বাজার ২০টি ও উপজেলার আশপাশ হতে আরো ৫টির বেশি মোটরসাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেছে।
রাজশাহীর মুন্ডুমালা পৌর বাজার হতে একের পর মোটর সাইকেল চুরির ঘটনা ঘটেই চলছে। মোটরসাইকেল চোরের এ সিন্ডিকেটটি অতি নিরাপদে অল্প সময়ের মধ্যে চুরি করে নিয়ে চম্পট হলে ও কেউ টের পাচ্ছেনা।
চোরের এ সিন্ডিকেটকে পুলিশ এখন পর্যন্ত না ধরতে পারাই মোটরসাইকেল মালিকদের মধ্যে এক প্রকার আতংক বিরাজ করছে। অনেকে পুলিশের ভূমিকার ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।
চুরির হওয়ার পরেই প্রায় সবাই তানোর থানায় এবং মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ করেছেন। দায়সারা অভিযোগ নিয়ে দায়িত্ব সেরেছেন পুলিশ। এক বছরে একটিও উদ্ধান করতে পারেনি তারা। এতে চুরি হওয়া মোটরসাইকেল চালকদের ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মুন্ডুমালা বাজার হতে মোটরসাইকে চুরি হয়েছে এমন একাধিক ব্যাক্তি জানান,বাজার হতে পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে মাত্র ২০০ থেকে আড়াইশ মিটার দুরে। বাজারে প্রায় সব সময়ই পুলিশ সদস্যরা থাকেন। অথচ এ চোরের সিন্ডিকেটরেক ধরার কোন উদ্যোগ চোখে পড়ছেনা।
চলতি মাসেই ১৭ আগষ্ট মুন্ডুমালা ফজর আলী মোল্লা ডিগ্রি কলেজ এইচএসসি কেন্দ্রে বাবার ডিসকভারী ১৩৫ সিসির (রাজ মেট্রো ই-১৩-২৮৬৫) পরীক্ষা দিয়ে কক্ষে ঢোকে এক শিক্ষার্থী। পরীক্ষা শেষে বের হয়ে দেখেন তার বাইকটি সেখানে নেই চুরি হয়ে গেছে।
এর আগে ২ আগষ্ট সাদিপুর গ্রামের কায়েশ উদ্দিনের পুত্র আবু বক্কর নামের এ ব্যাক্তি হিরো মোটরসাইকেল (রাজ হ-১৩-৪৭০৪ নম্বর) গাড়ী বাজারের গোল চত্বরে রেখে চা খেতে হোটেলে গিয়েছিলেন। বের হয়ে দেখে তার বাইক নেই। তিনি সেই দিনই তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
মুন্ডুমালা পৌরসভায় ট্রাক চালকের চাকুরী করেন তপন কুমার মন্ডল। তার ডিসকভার (রা: মেট্রো হ ১২-৯৭০৩) গাড়ীটি পৌর চত্বর হতে আট মাস আগে চুরি হয়।
তপনকুমার জানান, পৌরসভার সিসি ক্যামেরাই দেখা যাচ্ছে চোরের দল তার মোটরসাইকেটি নিয়ে যাচ্ছে। সেদিনই মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অভিযোগ দেয়া হয়। পুলিশ এসে সিসি ক্যামের ছবি নিয়ে যাই। ৮ মাস হলো এখন পর্যন্ত হুদিস বের করতে পারেনি পুলিশ।
এসব বিষয়ে মুন্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ইনচার্জ মনিরুল ইসলাম বলেন,চোরের সিন্ডিকেট কে ধরার জন্য পুলিশ কাজ করছে। বাজারে তিনটি বনিক সমিতি থাকা সত্তে একটি সিসি ক্যামেরা নাই। সিসি ক্যামেরা থাকলে সিন্ডিকেটের স্থানীয় কেউ থাকলে সহজে চেনা যেত। আমরা বাজারে সবাইকে সচেনত করতে কাজ শুরু করবো।
তানোর থানা অফিসাস ইনচার্জ ওসি আব্দুর রহিম বলেন, আমি থানায় এক দেড় মাস হলো যোগদান করেছি। মুন্ডুমালা বাজার থেকে এতো মোটরসাইকেল চুচি দু:খজনক ঘটনা। আমরা এ বিষয়ে জোরালো পদক্ষে নেয়া হবে বলে জানান ওসি।
সহকারী পুলিশ সুপার তানোর-গোদাগাড়ী সার্কেল সোহেল রানা বলেন, মুন্ডুমালা বাজারের সিসি ক্যামেরা না থাকায় মোটরসাইকে চোরের এ সিন্ডিকেটকে সহজে ধরা যাচ্ছে না। শুধু পুলিশ দিয়ে হবেনা মোটরসাইকেল মালিকদেও সচেতন হতে হবে। পুলিশ তদন্ত করছে এ সিন্ডিকেট অল্প সময়ে ধরা পড়বে বলে আসা করা হচ্ছে। তবু অল্প কিছু দিনের মধ্যে মুন্ডুমালা বাজারে বনিক সমিতিসহ ¯’ানীন জনসাধারণদের সচেতন করতে পুলিশ সচেতন মূলক কার্যকর্ম চালাবেন।


প্রকাশিত: আগস্ট ২৭, ২০২৩ | সময়: ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ