কোরআন অবমাননা নিয়ে পাকিস্তানি শহরে জ্বালাও-পোড়াও

সানশাইন ডেস্ক: কোরআন অবমাননার দায়ে পাকিস্তানের একটি শহরে গির্জায় আগুন দেওয়ার পাশাপাশি খ্রিস্টানদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে হাজার হাজার মুসলমান। পূর্ব পাঞ্জাব প্রদেশের জরানওয়ালায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানায়, অন্তত চারটি গির্জায় আগুন দেওয়া হয়েছে। গির্জার সঙ্গে যুক্ত অন্তত ১২টি ভবনও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাকিস্তানের জনসংখ্যার ৯৬ শতাংশ মুসলিম বলে ধারণা করা হয়। দেশটিতে ধর্ম অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। যদিও এ জন্য কাউকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি। তবে এই অপরাধে অভিযুক্ত কয়েক ডজন মানুষ এর আগে জনতার হাতে নিহত হয়েছেন।
রয়টার্স জানায়, দুই খ্রিস্টান ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করছে পুলিশ। তারা বলেছে, অভিযুক্ত দুই জন ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কোরআনের পাতায় অবমাননাকর মন্তব্য করেছেন বলে প্রমাণ মিলেছে। অভিযুক্ত একজনের নাম ইয়াসির ভাট্টি। ৩১ বছর বয়সী এই খ্রিস্টান ধর্মালম্বী বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। বার্তা সংস্থা এএফপিকে তিনি বলেন, ‘তারা জানালা, দরজা ভেঙে ফ্রিজ, সোফা, চেয়ার এবং অন্যান্য গৃহস্থালি জিনিসপত্র নিয়ে গির্জার সামনে পুড়িয়ে ফেলার জন্য স্তূপ করেছে। তারা বাইবেলও পুড়িয়ে দিয়েছে। এটা নির্মম।’
পাঞ্জাব প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী আমির মীর এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘ঘটনাস্থলে হাজার হাজার পুলিশ পাঠানো হয়েছে। কয়েক ডজন লোককে আটক করা হয়েছে।’ একটি সরকারি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) নামক একটি ইসলামপন্থি রাজনৈতিক দলের সদস্যরা বাড়ি-ঘরে আগুন দিচ্ছে। যদিও টিএলপি তা অস্বীকার করেছে।
তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক কাকার সহিংসতার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। পার্শ্ববর্তী শহর লাহোরে পাকিস্তানি বিশপ আজাদ মার্শাল বলেন, ‘খ্রিস্টান সম্প্রদায় এই ঘটনায় গভীরভাবে ব্যথিত।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আইন প্রয়োগকারী এবং বিচার প্রদানকারীদের কাছে ন্যায়বিচার আহ্বান জানাচ্ছি। বিষয়টিতে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে নাগরিকের নিরাপত্তার নিশ্চিত করুন।’


প্রকাশিত: আগস্ট ১৮, ২০২৩ | সময়: ৫:১০ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ