নগরীতে বলাৎকারের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২

স্টাফ রিপোর্টার: রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার শিরোইল কাঁচাবাজার এলাকার ষষ্ঠ শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগে ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আরএমপি’র বোয়ালিয়া মডেল থানা পুলিশ।
১২ই আগস্ট রাতে নগরীর মতিহার থানা ও রাজশাহী জেলার বাঘা থানায় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা হলেন সমর কুমার সরকার (২১) ও রান্টু ইসলাম (৫২)। সমর রাজশাহী জেলার বাঘা থানার গাওপাড়ার লিপটন কুমারের ছেলে ও রান্টু ইসলাম একই থানার বাঘা উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পাশের মৃত মাজেদের ছেলে।
ভিকটিম রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার শিরোইল কাঁচাবাজার এলাকার ১৩ বছর বয়সি ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র। পহেলা আগস্ট খ্রিষ্টাব্দ বিকেলে কোচিং থেকে বাড়ি ফিরে না আসায় তার বাবা-মা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। আশপাশ এলাকা-সহ আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে ওই দিন রাতেই বোয়ালিয়া থানায় একটি নিখোঁজ জিডি করেন। পরবর্তীতে গত ২রা আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টায় ওই স্কুল ছাত্র বাড়ি ফিরে আসলে তার বাবা-মা বিষয়টি থানা পুলিশকে অবগত করেন।
পরবর্তীতে ভিকটিম তার বাবা-মাকে জানায় যে, শিরোইল কাঁচাবাজারের ফটোকপি দোকানের কর্মচারী আসামি সমরের সাথে ফটোকপি করার সুবাদে তার পরিচয় হয় এবং সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে। পহেলা আগস্ট বিকেল ৫টায় কোচিং সেন্টার হতে বাড়ি ফেরার সময় শিরোইল কাঁচা বাজার এলাকায় আসামি সমরের সাথে তার দেখা হয়। সেখানে আসামি সমর তাকে চেতনা নাশক পদার্থ পান করিয়ে অপহরণ করে অপর আসামি রান্টু ইসলামের বাড়ি বাঘাতে নিয়ে আটকিয়ে রাখে। সেখানে রাতে সেই ছাত্রকে ঔষধ খাইয়ে আসামিরা জোরপূর্বক বলাৎকার করে। বলাৎকারের বিষয়টি কাউকে জানালে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে পরের দিন ২রা আগস্ট সকাল সাড়ে ৯টায় ছেলেটিকে মতিহার থানার তালাইমারী মোড়ে রেখে যায়। আসামিদের ভয়ে ছেলেটি তার বাবা-মার কাছে বিষয়টি গোপন রাখে। পরবর্তীতে আসামি সমর পুনরায় সেই ছাত্রকে বলাৎকারের উদ্দেশ্যে বাঘা নিয়ে যাওয়ার জন্য মোবাইল করলে বিষয়টি ভিকটিম তার বাবা-মাকে অবহিত করে।
প্রাথমিকভাবে ভিকটিমের বাবা-মাও লোক লজ্জার ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখেন। পরে তার ১১ই আগস্ট লিখিতভাবে অভিযোগ দায়ের করলে বোয়ালিয়া থানায় একটি ধর্ষণের মামলা রুজু হয়।
মামলা রুজুর পরিপ্রেক্ষিতে আরএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) সাইফউদ্দীন শাহীনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সহকারী পুলিশ কমিশনার (বোয়ালিয়া) আরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে বোয়ালিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সোহরাওয়ার্দী হোসেন, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আমিরুল ইসলাম ও তার টিম নিখোঁজ স্কুল ছাত্রকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করেন।
টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ১২ই আগস্ট রাতে মতিহার থানার তালাইমারী এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামি সমরকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আসামি সমরের দেয়া তথ্যমতে ভোরে রাজশাহী জেলার বাঘা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে অপর আসামি রান্টু ইসলামকে তার বাড়ি হতে গ্রেপ্তার করে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং আসামি সমর নিজের দোষ স্বীকার করে গতকাল বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।


প্রকাশিত: আগস্ট ১৪, ২০২৩ | সময়: ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ