সর্বশেষ সংবাদ :

চন্দ্রপৃষ্ঠের প্রথম ছবি পাঠাল ভারতের চন্দ্রযান-৩

সানশাইন ডেস্ক: ইতিহাস গড়তে মহাকাশে রওনা হওয়া ভারতের চন্দ্রযান-৩ চাঁদে পৌঁছানোর আগে প্রথমবার ছবি পাঠিয়েছে এর উপরিভাগের। ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো চন্দ্রযান-৩ এর তোলা সেসব ছবি প্রকাশ করেছে। চন্দ্রাভিযানে যাত্রা শুরুর ২৩ দিন পর চাঁদের কক্ষপথে শনিবার প্রবেশ করে এ মহাকাশযান।
বিবিসি লিখেছে, মহাকাশযানটি যতই চাঁদের কাছাকাছি অগ্রসর হচ্ছে, চাঁদের মাটিতে থাকা গর্তগুলো ততই বড় দেখাচ্ছে। চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডার ও রোভার আগামী ২৩ অগাস্ট চাঁদে অবতরণ করবে বলে আশা করছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। আর এই অভিযান সফল হলে বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ভারত চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে একটি রোবটযান নামাতে সক্ষম হবে। চাঁদের ওই অংশ সম্পর্কে এখনও খুব কমই জানে মানুষ।
অভিযান সফল হলে নিরাপদে চাঁদের মাটিতে নামতে পারা চতুর্থ দেশ হবে ভারত। এর আগে কেবল যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও চীনের মহাকাশযান নিরাপদে চাঁদের মাটিতে নামতে পেরেছে। চন্দ্রাভিযানের যাত্রায় ১০ দিন পৃথিবীর কক্ষপথে প্রদক্ষিণের পর গত মঙ্গলবার চন্দ্রযান-৩ পৃথিবী থেকে চাঁদের কক্ষপথে অগ্রসর হয় এবং শনিবার সফলভাবে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে।
ইসরো বলছে, এখন পর্যন্ত সব ঠিকঠাকই আছে। চাঁদের কক্ষপথে তৃতীয়বারের মত সফলভাবে মহাকাশযান পাঠাতে পেরেছে তারা। গত ১৪ জুলাই দুপুরে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে চন্দ্রযান-৩ এর সফল উৎক্ষেপণ করে ইসরো। ঐতিহাসিক সেই মুহূর্তের সাক্ষী হতে ভারতের শতকোটি মানুষের চোখ ছিল টেলিভিশন আর সোশাল মিডিয়ায়। আগ্রহ নিয়ে নজর রেখেছেন বিশ্বের অন্যান্য মহাকাশ গবেষণা সংস্থার বিজ্ঞানীরাও।
চাঁদে পৌঁছানোর চেষ্টায় এর আগে দুটো অভিযান চালিয়েছে ভারত। ২০০৮ সালে প্রথম অভিযানে চন্দ্রযান-১ পৌঁছেছিল চাঁদের কক্ষপথে। চাঁদের ভূপৃষ্ঠের গঠন ও পানির উপস্থিতি নিয়ে বড় পরিসরে গবেষণা চালানো হয় সে সময়। দিনের বেলায় চাঁদে যে একটি বায়ুমণ্ডল সক্রিয় থাকে, ওই গবেষণাতেই তা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়।
২০১৯ সালের দ্বিতীয় অভিযান আংশিকভাবে সফল হয়েছিল। চন্দ্রযান-২ এর অরবিটার আজও চাঁদের চারপাশ প্রদক্ষিণ করছে এবং তথ্য পাঠাচ্ছে। কিন্তু এর ল্যান্ডার অবতরণের সময় শেষ মুহূর্তের জটিলতায় চাঁদের মাটিতে বিধ্বস্ত হয়। চন্দ্রযান-৩ এর ওজন ৩ হাজার ৯০০ কেজি, যা বানাতে খরচ হয়েছে ৬.১ বিলিয়ন রুপি (সাড়ে ৭ কোটি ডলার)। এই মহাকাশযানও তৈরি হয়েছে অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভার- এই তিনটি অংশ নিয়ে।
ইসরোর প্রতিষ্ঠাতার নামে চন্দ্রযান-৩ এর ল্যান্ডারের নাম রাখা হয়েছে বিক্রম, যার ওজন প্রায় দেড় হাজার কেজি। ওই বিক্রমই তার পেটের মধ্যে বহন করছে ২৬ কেজি ওজনের রোভার বা রোবটযান প্রজ্ঞানকে। বিজ্ঞানীরা ধীরে ধীরে গতি কমিয়ে চন্দ্রযানকে চাঁদের কক্ষপথে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে যাচ্ছেন, যেখান থেকে বিক্রমের অবতরণপর্ব শুরু হবে। নির্দিষ্ট সময়ে চন্দ্রযান-৩ এর অরবিটার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে চাঁদের মাটিতে নেমে যাবে ল্যান্ডার বিক্রম।


প্রকাশিত: আগস্ট ৯, ২০২৩ | সময়: ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ | সুমন শেখ